রাস্তার দু’পাশে পরপর পলিথিনের চাদরে মোড়া দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ। টানা বৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জেরে তুলির আঁচড় চালানো যাচ্ছে না। যা অবস্থা তাতে এখন প্রতিমা রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ শিল্পীদের। কেউ কেউ অবশ্য বাড়ির সামনে একচিলতে ঘরে গাদাগাদি করে রেখেছেন প্রতিমা। অনেকে আবার জায়গার অভাবে রাস্তায় ধারে প্লাস্টিকে মুড়ে রেখেছেন প্রতিমা। স্থায়ী কুমোরটুলি না থাকায় কোচবিহারের পালপাড়ায় মৃৎশিল্পীদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ঘরে ঘরে মৃৎশিল্পীদের উদ্বিগ্ন মুখ। মহালয়ার মুখে টানা তিন দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর দিন দু’য়েকের জন্য আবহাওয়ার উন্নতি হয়েছিল। শুক্রবার থেকে ফের আকাশের মুখ ভার। দফায় দফায় বৃষ্টিতে চিন্তা বেড়েছে মৃৎশিল্পীদের। সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিয়ে পুরসভা থেকে জেলা প্রশাসন কারও কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান দীপক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “এর আগে একবার ‘ক্যান্সার সেন্টার’ লাগোয়া এলাকায় স্থায়ী কুমোরটুলি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। নানা কারণে তা অবশ্য বাস্তবায়িত হয়নি। প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিকল্প জায়গার বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করা হবে।” কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক বিকাশ সাহা বলেন, “আগামী বছর যাতে মৃৎশিল্পীদের এমন সমস্যায় পড়তে না হয় তা দেখা হবে।”
পুরসভা, প্রশাসনের কর্তাদের আশ্বাসে উদ্বেগ কাটছে না মৃৎশিল্পীদের। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কোচবিহারে স্থায়ী কুমোরটুলির দাবি উপেক্ষিত হয়ে রয়েছে। এতে শহরের পালপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে প্রতি বছর অধিকাংশ মৃৎশিল্পীকে কাজ করতে হচ্ছে। এবারেও যার ব্যতিক্রম হয়নি। আগেও ওই সমস্যা মেটানোর আশ্বাস মিলেছিল। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। ওই শিল্পীরা জানান, রাস্তায় যানজট হচ্ছে বলে পথচারীদের একাংশের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে। অনেক সময় দুর্ঘটনায় প্রতিমা ভেঙে যাওয়ার ভয় তো রয়েইছে। কোচবিহার মৃৎশিল্পী সমিতির সদস্য পুলক পাল বলেন, “আবহাওয়ার যা অবস্থা তাতে প্রতিমা শেষ করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ। স্থায়ী কুমোরটুলি থাকলে অন্তত সেই সমস্যাটা হত না।”
মৃৎশিল্পীরা জানান, পালপাড়া ছাড়াও শহরের গুঞ্জবাড়ি মোড় এলাকা মিলিয়ে অন্তত ৫০ জন মৃৎশিল্পীর কমবেশি একই সমস্যা। শহরে বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় ক্রেতারা দর কষাকষি করছেন। এক ছাতার তলায় সবার প্রতিমা থাকলে দামও ঠিক থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy