Advertisement
E-Paper

পুজোয় বৃষ্টির শঙ্কা, সতর্কতা সেচ দফতরে

নিম্নচাপ থাকায় পুজোর দিনগুলির জন্যও বাড়তি সর্তকতা জারির নির্দেশ দিল সেচ দফতর। দফতরের আধিকারিকদের পুজোর ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সাধারণত ১৫ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ষার মরসুম ধরা হয়।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৫

নিম্নচাপ থাকায় পুজোর দিনগুলির জন্যও বাড়তি সর্তকতা জারির নির্দেশ দিল সেচ দফতর। দফতরের আধিকারিকদের পুজোর ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সাধারণত ১৫ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ষার মরসুম ধরা হয়। এই সময়ে খুব প্রয়োজন না পড়লে সেচ দফতরের কর্মীদের এমনিতেই ছুটি দেওয়া নিয়ে কড়াকড়ি রয়েছে। এ বার বারবার নিম্নচাপের কারণে ছুটি নিয়ে কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, “পুজোর সময়েও তাই সেচ দফতরে ছুটি থাকছে না।”

সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটায় উদ্বিগ্ন সেচ দফতর। পুজোর আগে টানা বৃষ্টি হলেও যাতে বন্যা পরিস্থিতি এড়ানো যায়, তার জন্য বাড়তি নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দফতর থেকে। মহালয়ার পর দিন থেকে উত্তরবঙ্গের সব নদীর জল নিয়ে দিনে অন্তত দু’বার রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রতিদিন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, বন্যাপ্রবণ নদীগুলির জলস্তরের মাত্রার বাড়া-কমাও সকালে-সন্ধ্যায় এসএমএস করে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু আধিকারিকের ছুটির আবেদনও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুজোয় বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। আধিকারিক, বাস্তুকার সকলেই নিজের এলাকায় থেকে পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালাবেন। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বাড়তি সর্তকতা গ্রহণ করা হয়েছে।”

কেমন সেই বাড়তি সর্তকতা?

দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও এলাকায় বৃষ্টি শুরু হলেই এসএমএসে সেই খবর পৌঁছে যাবে উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং রাজ্যের কন্ট্রোলরুমে। সেই মতো বৃষ্টির গতিপ্রকৃতির খোঁজখবর নেওয়া হবে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়লে সেই এলাকার বন্যাপ্রবণ নদীগুলির উপর শুরু হবে নজরদারি। সেচ দফতরের ‘সাইকেল বার্তাবাহক’দের থেকে নদী জল বাড়ার খবর নেওয়া হবে। কোনও বাঁধ বা পাড়ের ক্ষতি হলে দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হবে। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান গৌতম দত্ত জানিয়েছেন, নদীর জল বাড়তে থাকলে ঝুঁকি না নিয়ে দুর্বল এলাকায় বোল্ডার, বালির বস্তা ফেলে বন্যা আটকানোর ব্যবস্থা করা হবে।

গত সপ্তাহেই বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি শুরু হয় উত্তরবঙ্গ জুড়েই। তিন দিন ধরে চলা বৃষ্টিতে পাহাড়ের কিছু এলাকায় ধসে রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়। তবে সমতলের এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বিভিন্ন শাখানদী এবং উপনদীর জলস্তর বেড়ে যায়। টানা বৃষ্টিতে সে সব এলাকায় পাড়ের ‘বাঁধন’ও খানিকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফের টানা বৃষ্টি হলে তাই পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে দফতর। সে কারণেই বাড়তি সর্তকতার নির্দেশ।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে বৃষ্টি বন্ধ হয়। যদিও সেই নিম্নচাপের পরে আরও কয়েকটি নিম্নচাপ তৈরি হতে শুরু করেছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। তাই উত্তরবঙ্গের আকাশ এখনও পুরোপুরি মেঘমুক্ত হতে পারেনি।

আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, নিম্নচাপগুলি বর্তমানে নিতান্তই কমজোরি। তাই মেঘ টানার ক্ষমতাও কম। তবে ক্রমশ সেগুলি শক্তিসঞ্চয় করলে তাদের টানে ফের উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের আকাশে কালো মেঘ, বজ্র বিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মন্ত্রীর কথায়, “নিয়মিত পূর্বাভাসে নজর রাখা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গের আকাশ মেঘমুক্ত হওয়ার কথা ছিল। নিম্নচাপের গতিবিধির রিপোর্ট দেখা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, পুজোর দিনগুলিতে অন্তত বাসিন্দাদের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টাতেই বাড়তি সর্তকতা নেওয়া হচ্ছে।

pujo anirban roy siliguri warmimg
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy