Advertisement
০৬ মে ২০২৪

প্রতারণার অভিযোগ তুলে অবরোধ সিভিক ভলান্টিয়ারদের

তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। কিন্তু চোখ রাঙিয়ে লাঠিপেটা করার শাসানি দিয়ে পুলিশ তাঁদের হটিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মালদহের চাঁচলে বৃহস্পতিবার বিকালে ওই ঘটনাটি ঘটে।

জাতীয় সড়ক অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।

জাতীয় সড়ক অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৫ ০১:৫৭
Share: Save:

তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। কিন্তু চোখ রাঙিয়ে লাঠিপেটা করার শাসানি দিয়ে পুলিশ তাঁদের হটিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মালদহের চাঁচলে বৃহস্পতিবার বিকালে ওই ঘটনাটি ঘটে।

চার হাজার আটশো সিভিক ভলান্টিয়ারকে বসিয়ে দিয়ে তাদের জায়গায় অন্যদের কেন নিয়োগ করা হল, সেই অভিযোগ তুলে এদিন বিকালে চাঁচল চৌরাস্তার মোড়ে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। ঘন্টাখানেক ধরে অবরোধ চলার পর এলাকায় পৌঁছান আইসি। নামানো হয় র‌্যাফও। এরপর বিকাল পাঁচটায় অবরোধ উঠে যায়। বিকালে চার রাস্তার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভের জেরে যানজটের পাশাপাশি নাকাল হতে হয় নিত্য যাত্রীদের। চাঁচলের সঙ্গে মালদহ, হরিশ্চন্দ্রপুর, আশাপুরের যোগাযোগ বিপর্য়স্ত হয়ে পড়ে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের হুমকি দিয়ে অবরোধ হটানোর অভিযোগ অবশ্য পুলিশ অস্বীকার করেছে।

চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মালদহে প্রথম থেকেই দুটো প্যানেল রয়েছে। ফলে দুটো প্যানেলে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের ছয় মাস করে কাজ দেওয়া হচ্ছে। আমরা কাউকে ছাঁটাই করতে পারি না। ওঁরা সব জানেন। তারপরেও এ সব করছেন। আর আন্দোলন মানেই কি জাতীয় সড়ক অবরোধ নাকি?’’

দাবি দাওয়া আদায়ে সংগঠন করা যাবে না বলে হুমকি দিয়ে আগেও চাঁচলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাধিক সাংগঠনিক সভা ভন্ডুল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশ গায়ের জোরে তাদের সংগঠিত হতে বাধা দিয়ে মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে বলে এদিন ফের অভিযোগ তুলেছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের সংগঠন।

সংগঠনের দাবি, সারা রাজ্যে এক লক্ষ ২৮ হাজার সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন। সম্প্রতি তাদের পারিশ্রমিকও বাড়ানো হয়েছে। এদের মধ্যে মালদহে সিভিক ভলান্টিয়ারের সংখ্যা ৪৮০০জন। কিছু দিন আগে তাঁদের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর এদিন তাঁরা জানতে পারেন যে তাঁদের জায়গায় অন্যদের কাজ দেওয়া হয়েছে। ফলে ছয় মাস তাদের কর্মচ্যুত হয়ে থাকতে হবে।

সংগঠনের অভিযোগ, অনেক জায়গায় গত মাসের শেষে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়। তারপর এ মাসের তিন তারিখে ফের তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু মালদহে তা করা হয়নি। বুধবার মালদহে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করা হয়। কিন্তু গত ছয় মাস ধরে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের বাদ দিয়ে অন্যদের নিয়োগ করা হয়েছে। গোটা রাজ্যে মালদহ ছাড়া কোথাও সিভিক ভলান্টিয়ারদের দ্বিতীয় তালিকা নেই। ফলে অন্যরা যখন টানা কাজ পাচ্ছেন তখন মালদহে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ছয় মাস করে কাজ জুটছে। ওই তালিকাকে অবৈধ বলে দাবি করে তা রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশের একাংশের যোগসাজসে করা হয়েছে বলে সংগঠনের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

এদিনের ঘটনার পর সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পোড়িয়া বলেন, ‘‘কাউকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক, তা আমরা চাই না। কিন্তু দ্বিতীয় যে তালিকার কথা বলা হচ্ছে নবান্নেও তার কোনও তথ্য নেই। ফলে মালদহে কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। আর দাবি আদায়ে সংগঠিত হতেই পুলিশ তা ভাঙতে উঠে পড়ে লেগেছে। এদিনও চাঁচল লাঠিপেটা করার ভয় দেখিয়ে কর্মীদের হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি দুএক দিনের মধ্যে চাঁচলে যাচ্ছি। কর্মীদের পরিবার নিয়ে এবার পথে নামব। আমরা ভীত নই। শেষ পর্যন্ত লড়তে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE