Advertisement
০২ মে ২০২৪

প্রতিশ্রুতিই সার, এক বছরেও পাকা হয়নি রাস্তা

চষা খেতকেও হার মানায় রাস্তা! তা সে বর্ষাকাল হোক বা বছরের অন্য সময়। তাই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। বিডিও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন। দাবি ছিল, পাকা রাস্তা তৈরি করে ৮টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাদের প্রতিবছরের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে হবে।

অল্প বৃষ্টিতে এমনই অবস্থা হয় রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।

অল্প বৃষ্টিতে এমনই অবস্থা হয় রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০২:৩১
Share: Save:

চষা খেতকেও হার মানায় রাস্তা! তা সে বর্ষাকাল হোক বা বছরের অন্য সময়। তাই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। বিডিও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন। দাবি ছিল, পাকা রাস্তা তৈরি করে ৮টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাদের প্রতিবছরের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে হবে। প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়ার পর ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন বাসিন্দারা।

নির্বাচনের প্রচারে সবকটি দলের তরফেও একমাত্র প্রতিশ্রতি ছিল জিতলেই এলাকার রাস্তা তৈরি করা হবে। তা না করতে পারলে সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলেও প্রতিশ্রতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বছর গড়ালেও যাতায়াতে দুর্ভোগ এতটুকুও কমেনি মালদহের চাঁচল-২ ব্লকের মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাঞ্চিয়া, গোপালপুর, গঙ্গাদেবী সহ ৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের। বরং গত একবছরে বেহাল রাস্তা আরও বেহাল হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার দাবিতে এবার আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন বাসিন্দারা।

রাস্তার সমস্যার কথা অজানা নয় প্রশাসনেরও। চাঁচল-২ ব্লকের বিডিও ইশে তামাঙ্গ বলেন, “আরআইডিএফ, জেলা পরিষদ সহ একাধিক প্রকল্পে ওই রাস্তার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও বরাদ্দ মেলেনি। দ্রুত যাতে বরাদ্দ মেলে সেজন্য ফের জেলা পরিষদকে জানানো হবে।”

পঞ্চায়েত ও বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, ভাগভাদো, সাঞ্চিয়া, গোপালগঞ্জ, যুগীপাড়া, নিশিপাড়া, গঙ্গাদেবী এলাকার ৭ কিলোমিটার ওই রাস্তাটি শ্রীপুর ও সামসি এলাকায় দুইদিক দিয়েই ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত। ৭ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা ৭ বছর আগে ইটসোলিং করা হয়েছিল। বাকিটা মাটির। সংস্কারের অভাবে ইটবিছানো ৩ কিলোমিটার রাস্তাও ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে অসংখ্য ছোটবড় গর্ত। ওই রাস্তা পার হয়ে জাতীয় সড়কে উঠতে বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস ওঠে বলে অভিযোগ। আর বর্ষার সময় রাস্তা দিয়ে প্রাণ হাতে করে বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হয়। এলাকাটি কৃষিপ্রধান হওয়ায় পণ্য নিয়ে বাজারে পৌঁছানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।

মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য তথা স্থানীয় গঙ্গাদেবী এলাকার বাসিন্দা মনি থোকদার বলেন, “ওই রাস্তা দিয়ে বর্ষাকালে হেঁটেও যাওয়া যায় না। গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষে রাস্তা পাকা করা সম্ভব নয়। পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদকে জানিয়েছি। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।” তিনি বলেন, “রাস্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জিতেছি। আর কিছুদিন দেখব। সমস্যা না মিটলে ইস্তফা দেব।”

চাঁচল-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, “ওই রাস্তা অত্যন্ত জরুরি। পঞ্চায়েত সমিতির নানা প্রকল্প সহ আরআইডিএফ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পেও রাস্তাটির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনও প্রকল্পেই এখনও বরাদ্দ মেলেনি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাস্তাটি পুরোপুরি পাকা করে সংস্কার করতে প্রায় ৩ কোটি টাকা প্রয়োজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bad road chanchal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE