চকচকা শিল্পকেন্দ্র জুট পার্কের জন্য নেওয়া জমি। ছবি: হিমাশুরঞ্জন দেব।
বছরের পর বছর ঘুরলেও কাজ শুরু হয়নি কোচবিহারের চকচকার শিল্পকেন্দ্রের জুট পার্কের। বাম আমলের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য থেকে বর্তমানের রাজ্য সরকারের শিল্প দফতরের কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন একাধিক বার। তবে প্রতিশ্রুতিই সার, কাজ শুরু হয়নি বলে স্থানীয় শিল্পোদ্যোগীদের বক্তব্য। তাঁদের দাবি, শুধু পাটভিত্তিক শিল্পের জন্য ওই জায়গা বরাদ্দ না রেখে সেখানে অন্যান্য শিল্পের জন্যও অনুমতি দেওয়া হোক। তবে এখনও সরকারি তরফে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্যের শিল্পসচিব রাজীব সিংহ চকচকা শিল্পকেন্দ্র ঘুরে দেখেন। সেই সময় তিনি কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী এবং পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন জানান। জেলা শিল্পকেন্দ্রের আধিকারিক নিরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “ওই বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত শিল্প দফতর নেয়নি। বর্তমানে সেখানে জুট ভিত্তিক যে কোনও শিল্প করার অনুমতি রয়েছে। ব্যবসায়ী, শিল্পদ্যোগীদের দাবি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
২০০৭ সালে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে চটজাত পণ্য বানিয়ে রফতানির লক্ষ্যে কোচবিহারে চকচকা শিল্পকেন্দ্রে একটি জুট পার্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সময়ের বাম সরকার সরকারের তরফে পার্কের পরিকাঠামো তৈরির কথা পাশাপাশি চট শিল্পের জন্য সেখানে বিভিন্ন সংস্থাকে দীর্ঘমেয়াদী লিজে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেই সময় কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। সম্প্রতি শিল্প সচিব সফরের পর নতুন করে কাগজে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়। কিন্তু সাড়া মেলেনি বলে সরকারি সূত্রের খবর।
কোচবিহার জেলা ইন্ডাস্ট্রিজ ওয়ালফেয়ার অ্যাসেসিয়েশনের তরফে দাবি করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সরকার সেখানে জুটভিত্তিক শিল্পের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প গড়ার অনুমতি দিলে ওই জমি কাজে লাগবে।
বহু ব্যবসায়ী সেখানে ফুড প্রসেসিং, মিনি রাইস মিল, সরষের তেলের মিল, আটা মিল-সহ নানা ধরণের শিল্প গড়ে তুলতে অনেকে আগ্রহী। সংগঠনের সভাপতি সুকুমার সাহা বলেন, “শুধু জুট ভিত্তিক শিল্প করার চিন্তাভাবনা করাটা ছাড়তে হবে। সেখানে অনেক জমি পড়ে রয়েছে। অনেক সংস্থা, ব্যবসায়ী সেখানে পাটের বাইরে মাঝারি শিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তুলতে আগ্রহী বলে আমাদের কাছে জানিয়েছেন। আমরা শিল্প দফতরে সব জানিয়েছি।” তিনি জানান, বর্তমানে চকচকায় পাটজাত সামগ্রী তৈরির ২টি কারখানা রয়েছে তার মধ্যে একটি মাঝারি শিল্প।
পাশাপাশি, ওই শিল্পকেন্দ্রে নিকাশি বেহাল হয়ে পড়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শিল্পকেন্দ্রের ভিতরে সমস্ত নিকাশি বেহাল হয়ে পড়েছে। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে থাকা হাইড্রেনের সঙ্গে ওই এলাকার নিকাশির যোগ রয়েছে। কিন্তু হাইড্রেনের কাছে নিকাশির মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। সুকুমারবাবু জানান, বৃষ্টি নামলেই শিল্পকেন্দ্রের রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে যায়।
একনজরে শিল্পতালুক
• মোট জমি-৭০ একর
• বড় শিল্প-নেই।
• মাঝারি শিল্প-চকচকায় পাটজাত সামগ্রী তৈরির ১টি কারখানা।
• ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র শিল্প-৪০টি। (প্লাইউড, রাইস মিল, হাসকিং মিল, সরষের তেলের মিল, আটা মিল, প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরি, ওয়ারিং সামগ্রী উপাদন)
• চকচকায় জুট পার্কের চিহ্নিত জমি ফাঁকা জমি-৩০ একর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy