Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ফের পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রাণগোবিন্দের

উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পরে দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু লিখিত অভিযোগ জমা নিয়েও পুলিশ মামলা রুজু করেনি কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিযোগকারী সাংবাদিক প্রাণগোবিন্দ মিত্র। সোমবার প্রাণগোবিন্দবাবু জানান, তিনি বারবার থানায় গেলেও তদন্ত কতটা এগিয়েছে, তা জানতে পারেননি। এমনকী, তাঁকে জেনারেল ডায়েরির নম্বর পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও এদিনও গৌতমবাবু ফের দাবি করেন, “উনি আমাদের দলীয় সভায় ঢুকে ব্যাজ জোগাড় করে বিজেপির হয়ে প্রচারের চেষ্টা করছিলেন। উত্তেজনা ছড়াতে পারে ভেবে ওঁকে বার করে দেওয়া হয়। মারধর করিনি।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৪:৪৪
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পরে দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু লিখিত অভিযোগ জমা নিয়েও পুলিশ মামলা রুজু করেনি কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিযোগকারী সাংবাদিক প্রাণগোবিন্দ মিত্র। সোমবার প্রাণগোবিন্দবাবু জানান, তিনি বারবার থানায় গেলেও তদন্ত কতটা এগিয়েছে, তা জানতে পারেননি। এমনকী, তাঁকে জেনারেল ডায়েরির নম্বর পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও এদিনও গৌতমবাবু ফের দাবি করেন, “উনি আমাদের দলীয় সভায় ঢুকে ব্যাজ জোগাড় করে বিজেপির হয়ে প্রচারের চেষ্টা করছিলেন। উত্তেজনা ছড়াতে পারে ভেবে ওঁকে বার করে দেওয়া হয়। মারধর করিনি।”

পুলিশ বিধি অনুযায়ী, অভিযোগ জমা নিলে তা নথিভুক্ত করে পুলিশকে অভিযোগকারীকে একটি নম্বর জানিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে জেনারেল ডায়েরি করা হল নাকি নির্দিষ্ট ধারায় মামলা হল, সেটাও পুলিশ অভিযোগকারীকে জানিয়ে দেয়। পুলিশ সূত্রের খবর, এই ধরনের মারধরের ঘটনা সাধারণত জামিনযোগ্য মামলা। পুলিশ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ৩২৩ ধারায় মামলাটি করে। অনেক সময় অভিযুক্তকে ধরা না গেলে বা কোনও কারণে গ্রেফতার করা সম্ভব না হলে আদালতে পুলিশ মামলার কাগজপত্র পাঠিয়ে দেয়। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তকে আদালত থেকে জামিন নিতে হয়।

কিন্তু প্রাণগোবিন্দবাবুকে মারধরের অভিযোগ নিয়ে কী করা হবে সেই প্রশ্নে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন স্পষ্ট ভাবে কিছু বলতে পারেননি। সিপি বলেন, “তদন্ত হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলার নেই।” তবে প্রাণগোবিন্দর দাবি, কোনও তদন্ত হচ্ছে না। তাঁর অভিযোগ, “মন্ত্রী ও তাঁর কয়েকজন অনুগামী জনসমক্ষে চড়, কিল, ঘুষি মেরেছেন। এরপরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নিলে, তাদের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাবে।”

শনিবার শিলিগুড়িতে ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মিসভা ছিল। সভা শুরুর মুখেই একটি মাসিক পত্রিকা বিলি করছিলেন পত্রিকার সম্পাদক-সাংবাদিক প্রাণগোবিন্দবাবু। মাসিক পত্রিকায় বিজেপির সংসদ দখল, শিলিগুড়ি পুরসভা দখলের ছক কষছে বিজেপি, এই শীর্ষক দু’টি খবর ছিল। তখনই গৌতমবাবু তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ওইদিন রাতেই তিনি শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

এই অবস্থায় গৌতমবাবুর গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছে দার্জিলিং জেলা সিপিএম। সোমবার দুপুরে এই দাবি তোলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, সিপিএমের জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকারেরা। একই সঙ্গে আগামী ২৭ জুন শিলিগুড়ি থানার সামনে পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ওই দাবিতে দলীয় নেতা কর্মীরা সরব হবেন বলেও জানানো হয়েছে।

অশোকবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূলের নেতা কর্মীদের হাতে শুধু নয়, মন্ত্রীদের হাতেও মানুষ আর সুরক্ষিত নন এ বার তা বোঝা যাচ্ছে। একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী রাস্তার নেমে লোক পেটাচ্ছেন, ভাবাই যায় না।” তাঁর দাবি, পুলিশের ভূমিকা যথারীতি এক। অভিযোগ নিলেও মামলা করা হয়নি। তাঁর বক্তব্য, “সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হোক। তার পরে আইন অনুসারে মামলা চলবে।” অশোকবাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব তৃণমূল নেতারা কোনও ঘটনা ঘটলেই আইন আইনের পথে চলবে বলে ঘোষণা করে দেন। এক্ষেত্রে তো আইনের কোনও পথ বা রাস্তা দেখাই যাচ্ছে না। না কী পুলিশ-প্রশাসন ভয়ে, আতঙ্কে সিঁটকে রয়েছে তাও বুঝতে পারছি না।

জীবেশবাবুর অভিযোগ, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছেন। যা ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন উনি তা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং শিলিগুড়ির পক্ষে লজ্জার।” জীবেশবাবুরা জানান, ওই প্রবীণ ভদ্রলোককে তাঁরা অনেকদিন ধরে চেনেন। জীবেশবাবু বলেন, “উনি আমাদের বিরুদ্ধেও মাঝেমধ্যে তাঁর পত্রিকায় নিজের মতামত তুলে ধরেন। তার পরে আমাদের দফতরে আবার পত্রিকা বিলি করে যান। এতো হতেই পারে। মন্ত্রী সমালোচনা সহ্য করতে না পারলে ভীষণ দুশ্চিন্তার ব্যাপার।”

এদিকে, রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনে যান হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের একটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। সেখানে সচিব পর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে প্রাণগোবিন্দবাবুর অভিযোগের সুরাহার করার আর্জি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

siliguri gautam deb police inaction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE