Advertisement
E-Paper

ভাঙনে গঙ্গাগর্ভে পাঁচশো একর জমি

কালিয়াচক ২ ব্লক ও মানিকচককে ছাপিয়ে এবার ব্যাপক ভাঙনের কবলে কালিয়াচকের তিন নম্বর ব্লক। ফরাক্কা ব্যারেজের ডাউন স্ট্রিমে পারদেওনাপুর, চকবাহাদুরপুর লাগোয়া প্রায় আট কিলোমিটার এলাকায় ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচশো একর ফসলি জমি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকার একমাত্র সংযোগকারী প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা থেকে মাত্র দশ মিটার দূরে বইছে গঙ্গা। এই রাস্তাটি গঙ্গায় তলিয়ে গেলে কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের পারদেওনাপুর, কুম্ভীরা, কৃষ্ণপুর এলাকার প্রায় দু’লক্ষ মানুষ মালদহের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয় পড়বেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৫
জল কমছে গঙ্গার। বাড়ছে ভাঙন। মালদহের কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারদেওনাপুরে উদ্বেগে এলাকার মানুষ। —নিজস্ব চিত্র।

জল কমছে গঙ্গার। বাড়ছে ভাঙন। মালদহের কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারদেওনাপুরে উদ্বেগে এলাকার মানুষ। —নিজস্ব চিত্র।

কালিয়াচক ২ ব্লক ও মানিকচককে ছাপিয়ে এবার ব্যাপক ভাঙনের কবলে কালিয়াচকের তিন নম্বর ব্লক। ফরাক্কা ব্যারেজের ডাউন স্ট্রিমে পারদেওনাপুর, চকবাহাদুরপুর লাগোয়া প্রায় আট কিলোমিটার এলাকায় ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচশো একর ফসলি জমি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকার একমাত্র সংযোগকারী প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা থেকে মাত্র দশ মিটার দূরে বইছে গঙ্গা। এই রাস্তাটি গঙ্গায় তলিয়ে গেলে কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের পারদেওনাপুর, কুম্ভীরা, কৃষ্ণপুর এলাকার প্রায় দু’লক্ষ মানুষ মালদহের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয় পড়বেন। গত শুক্রবার রাত থেকে চলা ভাঙনে ইতিমধ্যে ৪০ টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।

সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার অমরেশকুমার সিংহ বলেন, “গঙ্গার জলস্তর কমতে শুরু করায় কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের পারদেওনাপুর, শোভাপুরের সামনে গঙ্গায় চর গজিয়ে ওঠার জন্যই ওই এলাকায় এবছর ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে।

গঙ্গার জল চরে ধাক্কা খেয়ে উল্টো দিকে ধাক্কা দেওয়ায় ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। যেভাবে ভাঙন চলছে তাতে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার রাস্তাটি যে কোনও মুহুর্তে গঙ্গায় তলিয়ে যেতে পারে। গঙ্গা ভাঙনের পুরো বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”

জানা গিয়েছে, এবারই প্রথম এরকম ব্যাপক ভাঙনের মুখে পড়েছেন কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের মানুষ। যে কোনও সময় ভিটেমাটি সব হারানোর আশঙ্কায় ঘুম ছুটেছে কালিয়াচক ৩ নম্বর ও মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমার মানুষের। ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাঙন প্রতিরোধের কাজে প্রশাসনের অনীহার কারণেই কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকে ভাঙন হচ্ছে। গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য আসিফ ইকবাল বলেন, “অগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।”

তিনি জানান, গত শুক্রবার থেকে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে গিয়েছে। বটতলা গ্রামটি পুরো গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। ওই গ্রামের ৪০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন, “মাটির বস্তা ফেলেও ভাঙন রোখা যাচ্ছে না।”

ভাঙনে উদ্বিগ্ন তৃণমূল জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। রবিবার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। পরে বলেন, “পারদেওনাপুর, শোভাপুর এলাকায় যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তা এক কথায় ভয়াবহ।” তিনি জানান, পাঁচশো একরেরও বেশি কৃষিজমি তলিয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। তিনি বলেন, “ভাঙনের হাত থেকে দুর্গতদের বাঁচানোর জন্য জেলাশাসককে জরুরি ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” মালদহের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, “এই মুহুর্তে ওই এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা সম্ভব নয়। কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী এলাকায় মজুত করা হয়েছে।” জেলাশাসক জানান, ওই ব্লকের বিডিওকে বলেছেন ভাঙন দুর্গতদের যতটা ত্রাণের প্রয়োজন হবে দ্রুত তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে তাঁর দাবি, “ত্রাণের কোনও অসুবিধা হবে না।”

সেই সঙ্গে মালবাজার ব্লকের তেশিমিলা গ্রাম পঞ্চায়েত কুমলাই নদীর পাড় ভাঙায় আতঙ্কে ভাওয়াজোত, থাপাবস্তি এলাকার বাসিন্দারা। প্রায় চল্লিশটিরও বেশি পরিবার কুমলাই নদীর পাড় ভাঙায় বিপন্ন হতে পারেন বলে আশঙ্কায় রয়েছেন। গত রবিবার রাতের প্রবল বৃষ্টিতে কুমলাই নদীতে জল বেড়ে যাওয়ায় গ্রামে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে মালবাজার ব্লক প্রশাসন ও তেশিমিলা গ্রাম পঞ্চায়েত নদীর জলের উপর নজর রাখছে বলেও জানা গিয়েছে।

erosion malda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy