Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ঘেরাও অধ্যক্ষকে

বেআইনি ভাবে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দিনভর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল টিএমসিপি। সোমবার কোচবিহার এবিএন শীল কলেজে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ ওই আন্দোলনের ডাক দেয়। বেলা ১২ টা নাগাদ সংসদের সদস্য ও সমর্থকেরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দফতরের সামনে বসে ‘ঘেরাও’-এর কথা ঘোষণা করেন। সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

অধ্যক্ষের সঙ্গে তর্কাতর্কি পড়ুয়াদের। —নিজস্ব চিত্র।

অধ্যক্ষের সঙ্গে তর্কাতর্কি পড়ুয়াদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৪
Share: Save:

বেআইনি ভাবে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দিনভর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল টিএমসিপি। সোমবার কোচবিহার এবিএন শীল কলেজে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ ওই আন্দোলনের ডাক দেয়। বেলা ১২ টা নাগাদ সংসদের সদস্য ও সমর্থকেরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দফতরের সামনে বসে ‘ঘেরাও’-এর কথা ঘোষণা করেন। সন্ধ্যে সাড়ে ৬টায় আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

এবিএনশীল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেবনারায়ণ রায় বলেন, “নিয়ম ও মেধা তালিকা মেনেই ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনার চেষ্টা হয়েছে। তার পরেও দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কিছু অভিযোগ উঠেছে। সে সব খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি রিপোর্ট দেবে সেটা দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

টিএমসিপি নেতৃত্বের অভিযোগ, ৮ অগস্ট স্নাতক স্তরে প্রথম বর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। অনার্স ও পাস কোর্স মিলিয়ে প্রথম বর্ষে প্রায় এক হাজার পড়ুয়া ভর্তি হন। নিয়ম অনুযায়ী, মেধা তালিকা মেনে সব বিভাগের অনার্স ও পাস কোর্সে ভর্তি হওয়ার কথা। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে ওই নিয়ম মানা হয়নি। মেধা তালিকায় নাম না-থাকা সত্ত্বেও কলেজের এক কর্মীর মেয়েকে বাংলা বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছে। তা নিয়ে হইচই হওয়ায় তড়িঘড়ি ওই ছাত্রীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে।

টিএমসিপির আরও অভিযোগ, একই ভাবে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে একজন ছাত্রকে বেআইনি ভাবে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। ইংরেজি বিভাগে পছন্দের প্রার্থীকে ভর্তির সুযোগ করে দিতে পঁচাত্তর শতাংশ উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও এক ছাত্রের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। ইংরেজি বিভাগে প্রথম কাউন্সিলিংয়ের প্রথম কতজন ভর্তি হয়েছেন, কতজন ভর্তি হতে পারেননি, সে নিয়ে কোনও তথ্য জানানো হচ্ছে না। আবার ইতিহাস বিভাগের হাজিরা খাতায় এখনও পর্যন্ত কোনও ছাত্রছাত্রীর নাম তোলা হয়নি। ভূগোল বিভাগে হাজিরা খাতায় এক ছাত্রের নাম কেটে অন্য একজন ছাত্রের নাম বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও অন্যান্য বিভাগে দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর ন্যূনতম উপস্থিতি নেই, এমন ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পর্কে কলেজ কর্তৃপক্ষ সঠিক তথ্য দিতে গড়িমসি করছেন।

টিএমসিপির কোচবিহার জেলা কার্যকরী সভাপতি অরিন্দম দে বলেন, “কলেজের কর্মীদের একাংশ ভর্তি প্রক্রিয়াকে কালিমালিপ্ত করেছেন। মেধা তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও ভর্তি করানো থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও নাম কেটে দেওয়ার মত অভিযোগ মিলেছে। সব কিছু লিখিত ভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত হলে এমন আরও অভিযোগ উঠে আসবে বলে আমাদের ধারণা।”

কলেজ সূত্রের খবর, তদন্ত কমিটিটিতে কলেজের দু’জন শিক্ষক অমরেশ মণ্ডল, সৃজিত দাস ও শিক্ষাকর্মী জয়ন্ত মৈত্র রয়েছেন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অমরেশবাবুকে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ঘেরাও আন্দোলনের ডাক দিলেও প্রয়োজনে দফতরে বাইরে যেতে কিংবা টিফিন করতে দিতে আন্দোলনকারীরা কোনও আপত্তি করেননি। কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক বিমান চৌধুরী বলেন, “সমস্ত অনিয়মের তদন্ত করতে হবে। দোষী কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

admission teacher coochbehar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE