আগামী ৩ ডিসেম্বর, বুধবার উদ্বোধন হতে চলেছে জলপাইগুড়ি স্পোর্টস ভিলেজের। আন্তর্জাতিক মানের ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগে শনিবার দুপুরে স্পোর্টস ভিলেজের শেষ পর্যায়ের কাজ ও মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলের প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। সেখানে নবনির্মিত ইন্ডোর স্টেডিয়ামে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি। বিকেলে রামসাই রাইনো ক্যাম্পেও যান। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গল ভালবাসেন। এলাকাটি তাঁর পছন্দ হবে।” পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর রাত্রিবাসের জন্য জঙ্গল এলাকার চারটি বনবাংলো বেছে রাখা হয়েছে, সেগুলির মধ্যে রাইনো ক্যাম্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ তারিখ, মঙ্গলবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রীর জলপাইগুড়িতে পৌঁছনোর কথা। বুধবার বেলা ১টায় স্পোর্টস ভিলেজের উদ্বোধন করবেন তিনি। ওই দিনই সরকারি এবং দলীয় কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। স্পোর্টস ভিলেজ ছাড়াও ওই দিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই আরও বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরুর ঘোষণা করার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। অনুষ্ঠান শেষে গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া ময়নাগুড়ির রামসাই এলাকার বনবাংলো ‘রাইনো ক্যাম্পে’ যেতে পারেন তিনি।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর এবং এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, করলা নদীর পাশে স্পোর্টস ভিলেজে ৩৩ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে অত্যাধুনিক ইন্ডোর স্টেডিয়াম তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১৫ কোটির কিছু বেশি। দেড় বছরের আগেই কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে। ২২ হাজার ৭০০ বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে নিউজিল্যান্ড এবং নাইজেরিয়া থেকে আনা বিশেষ ধরণের কাঠের মেঝে তৈরি হয়েছে। এই মেঝেতে খেলোয়াড়রা পড়ে গেলেও বিশেষ চোট আঘাত লাগার আশঙ্কা নেই। সেটি ঘিরেই রয়েছে গ্যালারি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার অসীম চৌধুরী জানান, ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই ধরণের মাঠ রাজ্যে প্রথম। বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড-সহ বিভিন্ন খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। সুবিধার জন্য কাঠের মেঝেতে থাকবে ‘হাইড্রলিক পোস্ট,’ প্রয়োজন মতো সেটা তুলে গুটিয়ে রাখা যাবে।
ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অন্তত ৫ হাজার দর্শক এক সঙ্গে বসে খেলা দেখতে পারবেন। অত্যাধুনিক জিমনাসিয়াম, সুইমিং পুলও রয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী জানান, লন টেনিস মাঠ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত তা শুরু হয়ে যাবে। মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, “ওই ভিলেজে বাগানও থাকবে। পুরনো আউটডোর স্টেডিয়ামের সংস্কারের কাজ চলছে। প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। ওই স্টেডিয়ামের অর্ধসমাপ্ত কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” ৪০ হাজার দর্শক বসার মতো ৮টি গ্যালারি তৈরির পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। স্পোর্টস ভিলেজ ঘুরে দেখার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “মানবসম্পদ উন্নয়নের কথা চিন্তা করে জলপাইগুড়িতে আন্তর্জাতিক মানের এই ভিলেজ তৈরি করা হয়েছে।”