কোচবিহারের মানবকল্যাণ সঙ্ঘাশ্রমের প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র।
মহালয়া থেকেই শুরু হয় অষ্টাদশভূজা দুর্গাপুজো। কোচবিহার শহর লাগোয়া বাইশগুড়ি এলাকায় বাইশগুড়ি মানব কল্যাণ সঙ্ঘাশ্রমে প্রথা মেনে মঙ্গলবার মহালয়ার রাতে অধিবাস আমন্ত্রণ পুজোর মাধ্যমে পুজোর সূচনা হয়। এ বার আঠারো বছরে পড়ল এই পুজো। আগামীকাল, বৃহস্পতিবার থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিদিনই পূজিত হবেন দেবী। মহাষ্টমীর দিন মণ্ডপ চত্বরে কুমারী পুজোও হবে। ওই দিন ভক্তদের প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা থাকছে।
সঙ্ঘাশ্রমের তরফে স্বামী গণেশানন্দ মহারাজ বলেন, “স্বপ্নাদেশে এই পুজো শুরু হয়। এখানে দেবী ভাগবতপুরাণে বর্ণিত মহিষাসুর বধের সময় দেবী ভাগবতীর অষ্টদশভূজা রূপ মূর্তিতে উঠে এসেছে। মহালয়ার রাতে পুজোর শুরু হয়। দেবী ভাগবতীর ওই রূপ এখানে দেবী দুর্গা হিসাবে পূজিত হন। সঙ্ঘাশ্রমের এক কর্তার কথায়, “এখানে দেবী প্রতিমা বিসর্জনের রেওয়াজ নেই। দশমীতে শুধু নবপত্রিকা ও ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়।”
উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, স্থায়ী মন্দিরে পুজোর আয়োজন হয়। আগে হাতেগোনা কয়েকজন বাসিন্দা পুজোর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকতেন। তবে পুজো এখন সর্বজনীন চেহারা নিয়েছে। তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পুজোর আয়োজনে সামিল হন। ভোগের বন্দোবস্ত থেকে পুজোর যাবতীয় আয়োজনের দায়িত্বও সামলান তাঁরা। বাইরে থেকে নাগা সন্ন্যাসীরাও পুজো উপলক্ষে বাইশগুড়িতে আসেন। এ বছর পুজোর বাজেট ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। সঙ্ঘাশ্রমের এক কর্তার কথায়, “অন্যবার অধিবাস আমন্ত্রণ পুজোর পরদিন থেকে নিত্যপুজোও শুরু হয়। এ বার বুধবার পর্যন্ত অমাবস্যা থাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিত্যপুজো শুরু হচ্ছে।” অবশ্য আজ থেকেই ভক্তদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে মন্দিরে।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ১৯৯৬ সালে প্রথমবার পুজো শুরুর পর কয়েকবছর মাটির তৈরি প্রতিমা দিয়ে পুজো হয়েছে। ২০১১ সালে পাথরের স্থায়ী মূর্তি বসানো হয়। কোচবিহারের শিল্পী কানাই পাল ওই মূর্তি গড়েছিলেন। এলাকার বাসিন্দারা-ই সেই খরচ বহন করেছিলেন। তারপর থেকে ওই প্রতিমাই পুজো করা হয়। প্রতি বছর অবশ্য রং করা হয় প্রতিমা। মহালয়ার সকালে দেবীর চক্ষুদান করেন শিল্পী কানাইবাবু। এলাকার-ই এক বালিকাকে কুমারী হিসাবে পুজোর জন্য বাছা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। মঙ্গলবার থেকে মহাষ্টমী পর্যন্ত নিরামিষ খাবার খেতে হবে তাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy