আনুষ্ঠানিক ভাবে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ হলেও কিছু দিন যেতেই ফের তা ফিরতে শুরু করেছে শহরে। বন্ধের নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুরকর্মীদের সামনেই দেদার প্লাস্টিকে ক্যারিব্যাগের আদান প্রদান চলছে মালবাজারে। উল্লেখ্য, মালবাজার পুরভোটে তৃণমূলের ইস্তাহারে অন্যতম প্রাধান্য পেয়েছিল প্লাস্টিক বর্জনের বিষয়টি। এ বছরের পুরভোটে প্রথম বার মালবাজার পুরসভায় নিরঙ্কুশ ভাবে পুরবোর্ড দখলও করে তৃণমূল। এর পরেই চেয়ারম্যান স্বপন সাহা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধের নির্দেশ দেন।
জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই শহরে পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার চালিয়ে প্লাস্টিক বন্ধের নির্দেশ দেওয়া শুরু হয়। সেই সময়ে এর ব্যবহার কমতেও শুরু করে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। সাময়িক অসুবিধা সত্ত্বেও সামগ্রিক ভাবে নাগরিকেরাও পুরসভার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।
কিন্তু নির্দেশ পালন হচ্ছে কিনা তা দেখতে কোনও পরিদর্শন পুরসভার পক্ষ থেকে হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের। যারা প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করেননি তাঁদের চিহ্নিত করে জরিমানা দিতেও ব্যবস্থা নেয়নি পুরসভা আর এই সুযোগেই মাত্র আড়াই মাসের মধ্যেই ফের জাঁকিয়ে বসেছে প্লাস্টিক।
সমস্যা যে ফিরে এসেছে তা আঁচ করেছে পুরসভাও। শুধুমাত্র নির্দেশে কাজ হবে না বুঝতে পেরেছেন খোদ চেয়ারম্যানও। তাই দ্রুততার সঙ্গে অভিযান চালিয়ে জরিমানার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে পুরসভা। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘এখন থেকে একেকটি বাজার বা এলাকা ধরে ধরে আচমকা অভিযান চালানো হবে।’’ কোনও দোকানে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ধরা পড়লে ঘটনাস্থলেই ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানান তিনি। তবে এ ভাবে প্লাস্টিক বন্ধ না করে শহরে যে পরিমাণ ক্যারিব্যাগ নিয়মিত পড়ে থাকছে, তা দিয়েই বিকল্প প্লাস্টিক বোর্ড জাতীয় পদার্থ তৈরির কথাও পুরসভাকে ভাবতে হবে বলে জানান মালবাজার পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন বাম পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রতীম সরকার। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মধ্যেই প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ জড়িয়ে গেছে তাই আচমকা এর ব্যবহার নির্মূল কঠিন। পুরবোর্ডের দায়িত্বে থাকাকালীন একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে শহরের প্লাস্টিক জড়ো করে শক্ত বোর্ড তৈরির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সে রকম কিছু ভাবলে প্লাস্টিক দূষণ অনেকটাই কমানো সম্ভব।’’
এ দিকে ব্যবসায়ী মহলেও প্লাস্টিক বন্ধ বা ঠেকানো নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ব্যবসায়ীদের কথায় কাপড় জাতীয় যে ব্যাগ প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে বাজারে এসেছে তার একটির দামই আড়াই টাকার ওপরে। একশো টাকার নীচে ক্রেতা যদি কোনও ভারী জিনিসও কেনেন, তা হলেও তাঁকে এই বিকল্প ব্যাগ দিলে লোকসান হচ্ছে। মালবাজার ব্যবসায়ী সংগঠন মার্চেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি সোমনাথ বসুর কথায়, ‘‘প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ করতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু এর মতো সাশ্রয়ী বিকল্প ব্যবস্থার পথ আমাদের দেখাতে হবে। তা হলেই কেউ প্লাস্টিক ব্যবহার করবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy