Advertisement
E-Paper

সিট ছেঁড়া, মেঝেতে ফাটল, বহু সরকারি বাসেরই বেহাল দশা

কোনও সিটের চামড়া ছিড়ে ভেতরের তুলো বেরিয়ে পড়েছে। কোনও সিটে আবার চামড়া বা গদির বালাই নেই। শুধু লোহার খাঁচা। জলপাইগুড়ির কদমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে শিলিগুড়িগামী সরকারি বাসের অধিকাংশেরই এমন আসন খুঁজে পাওয়া যায় না, যেটি ছেঁড়া বা ফাটা নয়। বাসের জানালার কাঁচের হাতলগুলি প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে বাঁধা। বাসের লোহার মেঝে ফেটে চৌচির। যাত্রীদের অভিযোগ, বাস চলতে শুরু করার পরে ইঞ্জিন ও আলগা হয়ে যাওয়া কলকব্জার শব্দে কানে আঙুল দেওয়ার উপক্রম হয়।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৪ ০২:১৬
এমনই দশা এনবিএসটিসির অনেক বাসের। —নিজস্ব চিত্র।

এমনই দশা এনবিএসটিসির অনেক বাসের। —নিজস্ব চিত্র।

কোনও সিটের চামড়া ছিড়ে ভেতরের তুলো বেরিয়ে পড়েছে। কোনও সিটে আবার চামড়া বা গদির বালাই নেই। শুধু লোহার খাঁচা। জলপাইগুড়ির কদমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে শিলিগুড়িগামী সরকারি বাসের অধিকাংশেরই এমন আসন খুঁজে পাওয়া যায় না, যেটি ছেঁড়া বা ফাটা নয়। বাসের জানালার কাঁচের হাতলগুলি প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে বাঁধা। বাসের লোহার মেঝে ফেটে চৌচির। যাত্রীদের অভিযোগ, বাস চলতে শুরু করার পরে ইঞ্জিন ও আলগা হয়ে যাওয়া কলকব্জার শব্দে কানে আঙুল দেওয়ার উপক্রম হয়।

রাজ্যে পালাবদলের পরে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার খোলনলচে বদলের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। সংস্থায় কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে কর্মী আধিকারিকদের ঢালাও বদলিও শুরু হয়। যদিও সংস্থার পরিষেবা নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের ক্ষোভ মেটেনি। এখনও বিভিন্ন রুটে লড়ঝড়ে বাস চলাচলের সংখ্যা বেশি বলে অভিযোগ। এমনকী জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ির মতো তুলনামুলক লাভজনক রুটেও বেহাল বাস চলাচল করায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি ডিপো থেকেও যে বাসগুলি ছাড়ে তার অনেককটির পরিস্থিতিই একইরকম বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “এখন বাইরে রয়েছি। ফিরে গিয়ে বিষয়টি দেখব। শীঘ্রই নতুন কিছু বাস পাওয়ার কথা রয়েছে। তাতে সমস্যা মিটবে।”

কদমতলা থেকে ছাড়া ওই বাসে যাত্রীও তুলনায় কম থাকে। অথচ ওই একই সময়ে ছাড়া বেসরকারি বাস ছিল যাত্রীভর্তি। যাত্রীদের অভিযোগ, অভিযোগ বাসের ভাঙাচোরা অবস্থা দেখে অনেক যাত্রীই ওঠার সাহস পাননি। সে কারণেই একাংশ যাত্রী কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছোনোর জন্য স্ট্যান্ডে এসে প্রথমে সরকারি বাসের খোঁজ করলেও, বাসের ভিতরের দশা দেখে ফিরে যান। এর ফলে সংস্থার রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ির নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, প্রতি দিন সকাল ৮টা বা তার পরে এনবিএসটিসির যে বাসগুলি জলপাইগুড়িতে যায় সেগুলিও একই রকম লড়ঝড়ে। অনেক সময়েই রাস্তার দুলুনিতে বাসের যন্ত্রাংশও খুলে যায় বলে অভিযোগ। সংস্থার কাজকর্মে নজরদারির অভাবের অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর জয়দেব ঠাকুর বলেন, “অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা। এমনটা হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করব।”

বাসের এমন দশা নিয়ে ক্ষুব্ধ সংস্থার পরিচালন সমিতির সদস্যরাও। মৃদুল দেব বলেন, “এমন বেশ কিছু বাস রয়েছে, যেগুলি দেখলে মনে হবে যেন বাতিল লোহালক্কড়ের গুদাম থেকে তুলে আনা হয়েছে। ওই বাসগুলি দেখেই যাত্রীরা উঠতে চাইবেন না। শুধুমাত্র পরিষেবা ঠিক রাখার জন্যই বাসগুলি চালানো হচ্ছে। বিষয়টি চেয়ারম্যান সহ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। খুব শিগগিরি নতুন কিছু বাস পাওয়া যাবে তখন সমস্যা মিটবে।”

পরিচালন কমিটির জলপাইগুড়ির সদস্যা সাগরিকা সেন বলেন, “ঘটনাটি জানি। বেশ কয়েকটি বাস এখনও রাস্তায় চলছে, যেগুলি যাত্রী পরিবহণের মোটেই উপযুক্ত নয়। কবে নতুন বাস পাওয়া যাবে তাও খোঁজ নিচ্ছি।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড সদস্যের কথায়, “কবে নতুন বাস পাওয়া যাবে তার অপেক্ষায় বসে থেকে আদতে যাত্রীদেরই বঞ্চিত করা হচ্ছে। আসলে কী ধরণের বাস চলাচল করছে, তার খবর সংস্থার শীর্ষ কর্তারা রাখেন কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। সুষ্ঠু নজরদারি থাকলে এমনটা হওয়ার কথা নয়।

nbstc anirban roy siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy