এলাকার হাজার দশেক মানুষের ভরসা এই বাঁশের সাঁকো। ছবিটি তুলেছেন রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুই নদীর উপর পাকা সেতু ভেঙেছে প্রায় এক বছর আগে। সেই থেকেই বিপাকে জলপাইগুড়ি দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন পাঁচটি গ্রামের হাজার দশেক মানুষ। আপাতত তাদের পারাপারের ভরসা বাঁশের সাঁকো। এই বর্ষার মরসুমে যে সাঁকোর ভবিষ্যত নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কিত বাসিন্দারা। পাশাপাশি সেতু ভেঙে যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এই এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত বিএসএফও।
২০১৩ র শেষ নাগাদ জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার দক্ষিণ বেরুবাড়িতে সুই নদীর উপর পাকা সেতুটি ভেঙে পড়ে। এর পরেই বেড়ুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ডাঙাপাড়া ও দইখাতা গ্রামের মধ্যে দিয়ে সুই নদীর উপর একটা বাঁশের সেতু তৈরি করে দেওয়া হয়। বাসিন্দারা জানান, এই বাঁশের সেতু দিয়ে কোনও রকম ভারী যানবাহন চলতে পারে না। কেবলমাত্র ভ্যান রিকশা, বাইক যাতায়াত করতে পারে। তাই অসুস্থদের হলদিবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। নদীর ও পারে সাতকুড়া হাইস্কুল এবং ওখড়াবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই সাঁকো পেরিয়ে হয় ছাত্রছাত্রীদের। বর্ষায় জলের তোড়ে সাঁকো ভাসার আশঙ্কায় থাকেন অভিভাবকরা।
সমস্যায় পড়েছে বিএসএফও। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই এলাকায় নদীর ও পারে দইখাতা, কালীতলা এবং ধরধরাপাড়ায় তিনটি বিএসএফ ক্যাম্প রয়েছে। কোনও সমস্যা হলে রাধাবাড়ি এবং কদমতলার দফতর থেকে বিএসএফ জওয়ানেরা সময় মতো পৌঁছতে পারছেন না সেখানে। আর কোনও রাস্তা না থাকায় সাঁকোর পারে গাড়ি থামিয়ে ভ্যান রিকশা করে যাতায়াত করতে হচ্ছে জওয়ানদের। বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের মুখপাত্র নন্দীশ কুনোয়ার জানান, সেতুটি নতুন করে তৈরি না হওয়ার জন্য বিএসএফের গতিবিধির ক্ষেত্রে রীতিমতো সমস্যা হচ্ছে। দেশের নিরাপত্তার খাতিরে সেতু তৈরির জন্য জেলাশাসককে অনুরোধ জানান তাঁরা।
এলাকায় ১০০ একরের উপরের চারটি বড় চা বাগান এবং ৯৮টি ছোট চা বাগান রয়েছে। বাগানের পাতা ভ্যানে করে সাঁকো পার করাতে হয়। এতে বাগান মালিকদের পরিবহণ খরচ বেশি হচ্ছে । জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির জেলা সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “একে তো পাতার দাম কমছে। তার পরে পরিবহণ খরচ বেশি পড়ছে। অবিলম্বে সেতু তৈরি না হলে বাগানের সমস্যা বেড়েই চলবে।” গত সপ্তাহে সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সেতুটির অবস্থা সরেজমিনে দেখেন জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন। দ্রুত এই সেতু নতুন করে তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলেও জানান সাংসদ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার অসীম চৌধুরী জানান, যুগ্ম সচিবের কাছ উন্নয়নের তালিকা অনুসারে সেতুটি তৈরির প্রস্তাব আসলে পরিকল্পনা নেওয়া হবে।”
কবে সেতুটি ফের তৈরি হবে তার সঠিক দিশা না মেলায় চিন্তিত দইখাতা, সাঁওতালপাড়া, কালিতলা, কাঠানহাড়ি এবং চিলাডাঙা গ্রামের বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy