পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে গৌতম দেব। শিলিগুড়িতে।
গজলডোবার পরে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস। ফের ‘সিন্ডিকেটে’র বিরুদ্ধে সরব হলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। গজলডোবায় বিশ্ব পর্যটন দিবসের উদ্বোধন করে মঞ্চ তেকেই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। এ দিন রবিবার পাট্টা বিলির সরকারি সভা থেকেও জমি ‘সিন্ডিকেটে’র সঙ্গে যুক্তদের সর্তক করেছেন গৌতমবাবু।
রবিবার সকালে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাসে টি পার্ক লাগোয়া এলাকায় পাট্টা বিলির সভার বক্তব্যে মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, বাইপাসে কোন জমি কী অবস্থায় রয়েছে, কারা জমি নিয়ে সিন্ডিকেট কারবার চালাচ্ছে তার সবটাই রিপোর্ট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে। সরকারি আধিকারিকদের দিয়ে তদন্ত করিয়ে কারা এলাকায় জমি মাফিয়া বলে পরিচিত তাদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে বলে মন্ত্রী দাবি করেছেন। মন্ত্রীর কথায়, “জমি মাফিয়ারা সিন্ডিকেট করে কাজ করছে। এ সব কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না। সব বিষয়ে তদন্ত করে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”
ইস্টার্ন বাইপাসের জমি সংক্রান্ত বিবাদকে ঘিরে মাসখানেক আগে শিলিগুড়িতে শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল বলে বিরোধীদের অভিযোগ। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে গোলমালের জেরে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বাইপাসে অবরোধও হয়। এই ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরেই নানা প্রশ্ন ওঠে। তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা ওই এলাকায় জমি, বাড়ি, পুকুর এবং চা বাগানও কিনেছেন বলে জানা গিয়েছে। দলেরই অনেকে ইস্টার্ন বাইপাস এলাকার জমির কারবারে যুক্ত বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
এ দিন বাইপাস এলাকার সরকারি সভা থেকে ৮৪ জনকে পাট্টা বিলি করেছেন গৌতমবাবু। রাজগঞ্জ ব্লকের বিডিও সহ ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। ভূমি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইপাসের বেশ কিছু সরকারি জমি দখল করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েকটি জমি দখল করে সেখানে বসতিও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। বাইপাস এলাকায় কোনও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি কিনতে বা বিক্রি করতে হলেও, একাংশ ব্যক্তিকে মোটা টাকা দিতে হয় বলে অভিযোগ। এদেরকেই মন্ত্রী জমি মাফিয়া বলে বোঝাতে চেয়েছেন বলে ভূমি দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। এই ব্যক্তিরাই এলাকায় একটি সিন্ডিকেট চালায়। সিন্ডিকেটকে এড়িয়ে সরাসরি বাইপাসে জমি কেনা বা বেচা সম্ভব নয় বলেই অভিযোগ। এই সিন্ডিকেট বা জমি মাফিয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট পাঠানোর কথা বলেছেন মন্ত্রী। তবে সেটি সরকারি রিপোর্ট নাকি দলীয় সে বিষয়ে অবশ্য সরকারি সূত্রে কিছু জানানো হয়নি। মন্ত্রীর কথায়, “ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”
ভূমি দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি দখল হয়ে যাওয়া একটি সরকারি জমি নিয়ে খোঁজখবর করে সিন্ডিকেট চক্রের কাজকর্ম উঠে আসে। সে বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকেও জানানো হয়েছিল। এ দিন যে সব জমির পাট্টা বিলি হয়েছে, সেখানে দখলমুক্ত কিছু জমিও রয়েছে। এ দিন পাট্টাবিলির আগে মন্ত্রী বলেন, “সরকারি জমি দখল করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। অনেক নিম্নবিত্ত মানুষ সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে জমি কেনেন। তেমন অনেক লোকও জমি কিনছে। পরে সরকার যখন দখল উচ্ছেদ করছে তখন নিম্নবিত্ত মানুষগুলিকেও সরে যেতে হয়। যারা এই সিন্ডিকেট চালাচ্ছে তাদের কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না।”
এ দিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ডাবগ্রাম ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের সব ভূমিহীন বাসিন্দাদের দ্রুত পাট্টা বিলি করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy