Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সিবিআই তদন্তে হারানো টাকা ফিরবে, আশা গ্রামে

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ছোট জনপদটিতেও শুক্রবার দুপুরে ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে সারদা কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশের খবর। গৌরাঙ্গবাজারে শ’তিনেক পরিবারের বসবাস। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী এই গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরাই সারদায় আমানত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন। সকলেই ছোট ব্যবসায়ী নয়ত কৃষি শ্রমিক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৪ ০৩:০৯
Share: Save:

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ছোট জনপদটিতেও শুক্রবার দুপুরে ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে সারদা কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশের খবর। গৌরাঙ্গবাজারে শ’তিনেক পরিবারের বসবাস। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী এই গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরাই সারদায় আমানত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন। সকলেই ছোট ব্যবসায়ী নয়ত কৃষি শ্রমিক। কেউ পরিচারক বা পরিচারিকার কাজ করেন। আমানতের টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন অনিশ্চয়তায় ভোগার পরে, এবার তাঁদের আশা সারদা কাণ্ডের সব দোষীদের সিবিআই গ্রেফতার করলেই, লগ্নির টাকারও খোঁজ মিলবে।

গৌরাঙ্গবাজারে চায়ের দোকান চালান অনাথ রায় সুশীলা রায়। প্রথমে ২০ টাকা তারপর রোজ ২০০ টাকা করে এজেন্টের হাতে তুলে দিয়েছেন এই দম্পতি। লক্ষাধিক টাকা তাঁরা সারদায় জমা রাখেন বলে দাবি করেছেন। এক মেয়ে এবং এক ছেলেকে নিয়ে সংসার। মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী। এ দিন সুশীলাদেবী বলেন, “ভেবেছিলাম সরাদার টাকা পুরোটা পেলে মেয়ের বিয়ের কাজে লাগবে। আজকের খবর শুনে কিছুটা হলেও শান্তি পেলাম। আশাকরি টাকা ফেরত পাব, দোষীদেরও শাস্তি হবে।”

পরিচারিকার কাজ করেন অনিমা রায়। স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন। দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। সিবিআই তদন্ত এবং এর গুরুত্বের কথা এলাকার এক বাসিন্দার থেকে শুনেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “এই সংস্থাটি তাহলে তদন্ত করে সব কিছু বার করতে পারবে। আমাদের যাঁরা পথে বসাল, তার বিহিত করতে হবে। আর টাকাটাও খুবই দরকার।” মুদিখানার দোকান চালিয়ে প্রায় ৮৫ হাজার টাকা সারদায় লগ্নি করেছেন মীণা রায়। তিনি বলেন, “সারদা কাণ্ডে আরও অনেক দোষী ব্যাক্তি রয়েছেন। আমি চাই তারা সকলে ধরা পড়ুক। তারা ধরা পড়লেই আমাদের টাকা কোথায় গেল তার খোঁজ মিলবে।” একই আশা এলাকার বাসিন্দা দীননাথ রায়, ধীরেন রায়, শুক্লা দাস, মাজেম মোল্লা, গীতা রায় সহ অনান্য বাসিন্দাদের।

সীমান্তপাড়ের জনপদের বাসিন্দাদের মতোই সারদার দোষীদের শাস্তি এবং সংস্থায় গচ্ছিত আমানত ফেরৎ চান অনান্য এলাকার বাসিন্দারাও। দু’হাজার নয় সালের শেষের দিকে সারদাগোষ্ঠী রায়গঞ্জে অফিস খোলে। পরে কালিয়াগঞ্জ, ডালখোলা ও ইসলামপুরেও রায়গঞ্জের শাখা অফিস খোলা হয়। সারদাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর চারটি অফিসই বন্ধ হয়ে যায়। জেলার লক্ষাধিক এজেন্ট ও আমানতকারী প্রায় দুই কোটি টাকা সংস্থায় লগ্নি করেছিলেন বলে জানা দিয়েছে।

রায়গঞ্জের কসবা এলাকার বাসিন্দা সব্জি ব্যবসায়ী নিত্য ঠাকুর বলেন, “ব্যবসার স্বার্থে সাড়ে চার বছরে দ্বিগুণ টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় ২০১১ সালে সারদায় ফিক্সড ডিপোজিট স্কিমে ৭ হাজার টাকা লগ্নি করেছিলাম। সর্বোচ্চ আদালত সিবিআইকে সারদা কেলেঙ্কারির ভবিষ্যতে টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হল বলেই মনে হচ্ছে।” ইসলামপুর থানার কমলাগাও সুজালি এলাকার বাসিন্দা সারদার এজেন্ট মনবর আলি নিজের আত্মীয় পরিজন, বন্ধু ও পড়শিদের টাকা জমা রেখেছিলেন। প্রায় ২ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকাতে সারদার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।. মনবর আলি বলেন, “সারদায় সিবিআই তদন্ত শুরু হলে নতুন করে সব খতিয়ে দেখা হবে। দোষীরা সকলেই সাজা পাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cbi cheat fund
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE