শুভময় সরকার ও অন্তরীপা মণ্ডল। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুল এবং শিলিগুড়ি গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এ বছর মাধ্যমিকে জেলাস্তরে তাদের সাফল্য ধরে রাখল। এ বছর মাধ্যমিক ৬৬৯ নম্বর পেয়ে ভাল ফল করেছে শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুলের ছাত্র শুভময় সরকার। মেয়েদের মধ্যে গার্লস স্কুলের ছাত্রী অন্তরীপা মণ্ডল ৬৫৯ পেয়ে জেলার ছাত্রীদের মধ্যে ভাল ফল করেছেন।
হাকিমপাড়ার বাসিন্দা শুভময় বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে ডাক্তার হতে চান। বাবা সমীরবাবু শহরের একটি নাসির্ংহোমে চিকিৎসকের অধীনে কাজ করেন। মা অঞ্জনা দেবী গৃহবধূ। অন্য দিকে রবীন্দ্রনগর বাজারের কছে পূর্ব নেতাজিপল্লির বাসিন্দা অন্তরীপা। পুরাতত্ত্ব নিয়ে পড়তে আগ্রহী অন্তরীপা। এখন থেকে ভবিষ্যতের সেই লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েই চলতে চায় শুভময়, অন্তরীপা। শুভময় বলে, ‘‘সাফল্য পেয়ে ভাল লাগছে। চিকিৎসক হতে চাই।” অন্তরীপার কথায়, “প্রাচীন ইতিহাস পড়তে জানতে আমি বরাবরি উৎসাহী। তাই পুরাতত্ত্ব নিয়ে ভবিষ্যতে পড়াশোনার ইচ্ছে রয়েছে।”
কী ভাবে মাধ্যমিকের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল তারা? সব বিষয় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত শুভময়। তাই দিনের বেলায় স্কুল এবং গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়া নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হত। নিজের পড়ার জন্য তাই শুভময় বেছে নিয়েছিল রাতের বেলাটাকে। শুভময় জানায়, গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া না থাকলে সন্ধ্যার পর থেকেই নিজে পড়া শুরু করত। না হলে রাতে খাবার পর। ভোর ৪টা পর্যন্ত পড়াশোনা চলত। পাঠ্য বই মন দিয়ে পড়ার দিকেই বেশি জোর দিয়েছিল শুভময়। বাংলায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৯০। ইংরেজিতে ৯৫। পদার্থবিদ্যা, জীবন বিজ্ঞান, অঙ্কে শুভময় পেয়েছে ৯৭, ৯৯ এবং ১০০। ভুগোল এবং ইতিহাসে ৯৮ এবং ৯০। স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই প্রথম হয়ে এসেছে শুভজিৎ। স্কুলের শিক্ষকেরা তাই তার উপর প্রত্যাশা করেছিল।
অন্তরীপার ক্ষেত্রে বাবা এবং মা সক্রিয় ভাবে সাহায্য করতেন। মা কাকলি দেবী জলপাইগুড়ি বিএড কলেজে প্রশিক্ষক। তাঁর কাছেই জীবন বিজ্ঞান পড়ত অন্তরীপা। বাবা অসিতবাবু শিলিগুড়ি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যার শিক্ষক। তিনিও সাহায্য করতেন। অন্তরীপা অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যা গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যেত। বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস এবং ভুগোল পড়ত আলাদা গৃহশিক্ষকের কাছে। পড়াশোনার ফাঁকে টিভিতে কার্টুন দেখা, গল্পের বই পড়ার অভ্যাস ছিস। অন্তরীপার কথায়, “যখন মনে হত কোনও অংশ ভুলে যাচ্ছি সেটা আবার ভাল করে পড়ে নিতাম। বারবার এ ভাবেই পড়ার দিকে জোর দিতাম।”
উত্তরবঙ্গে এগিয়ে মালদহ
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে মাধ্যমিকে পাশের হারে এগিয়ে মালদহ। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহে পাশের হার ৭৮.১৪ শতাংশ। জেলা থেকে এ বছর পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৪৪৪৩৬ জন। পাশ করেছেন ৩৪৭২৩ জন। জেলায় ছাত্রদের পাশের পার বেশি ছাত্রীদের তুলনায়। ছাত্রদের পাশের হার ৮৫.৮২ শতাংশ। যেখানে ছাত্রীদের পাশের হার ৭১.৪৭ শতাংশ। পাশের হারের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে জলপাইগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুর জেলা। ওই দুই জেলায় পাশের হার ৬৭.১০ এবং ৬৭.৭১ শতাংশ। পর্যদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক আধিকারিক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, “এ বছর উত্তরবঙ্গ থেকে ২ লক্ষ ৩৪ হাজার ৭৯৪ জন পরীক্ষা দিয়েছে। পাশ করেছে ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৪০৮ জন। পাশের হারে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে মালদহ এগিয়ে রয়েছে।” দার্জিলিং জেলায় ছাত্রদের পাশের হার ৭৩.১৭ শতাংশ। ছাত্রীর পাশের হার ৭২.৪৩ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ২৭৯২৫ জন। পাশ করেছে ২০ ৭০৯ জন। কোচবিহার জেলা থেকে এ বছর পরীক্ষা দিয়েছিল ৪৩১৯৫ জন। পাশ করেছেন ৩১১৫৭ জন। দক্ষিণ দিনাজপুরে ছাত্রদের পাশের হার ৭৫.৭৩ এবং ছাত্রীদের পাশের হার ৬৫.৭০ শতাংশ। এ বছর পরীক্ষা দিয়েছিলেন ২২ হাজার ৯৯২ জন। পাশ করেছে ১৬১৬২ জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy