হায়দারপাড়া ঘুগনি মোড়ে খন্দ ভরা পথেই যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টি হলে পুকুরের চেহারা নেয়, অন্য সময় শুধুই ধুলো। কোনও গ্রাম বা পঞ্চায়েত এলাকার কোনও প্রত্যন্ত এলাকা নয়, শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের হায়দরপাড়ার একটি রাস্তার বর্তমান ছবি এটাই। ঘুগনি মোড় থেকে ইস্টার্ন বাইপাস। তিন কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা রাস্তার বেহাল অবস্থা। রাস্তার বর্তমান চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তা কোনও সময় পাকা ছিল। বছর পাঁচেক আগে থেকেই রাস্তার পিচ উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে রাস্তা ভেঙে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুর এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বছরের পর বছর বেহাল থাকার পরেও তা সারাই করতে উদ্যোগী হচ্ছেন না কেউই।
ওই রাস্তা যেখানে হায়দরপাড়া মেন রোডে মিশেছে, রাস্তার মুখেই রয়েছে এলাকার একমাত্র হাই স্কুল হায়দরপাড়া বুদ্ধ ভারতী হাইস্কুল। প্রতিদিন কয়েকশো স্কুল ছাত্র-ছাত্রীকে ওই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। স্থানীয় এক অভিভাবক কার্তিক করাতি অভিযোগ করেন, ‘আমার বাড়ি একতিয়ারশালে। মেয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। রোজ বাড়ি ফেরে ধুলো মেখে সাদা হয়ে। রাস্তা ভাল থাকলে এমনটা হত না।” এলাকার বাসিন্দারাও তিতিবিরক্ত রাস্তার বর্তমান অবস্থায়। স্থানীয় কল্যাণ সমাদ্দার বলেন, “এই রাস্তার জন্য প্রতিনিয়ত নাকাল হতে হচ্ছে। শুকনো থাকলে ধুলোয় ঘর-বাড়ি সাদা হয়ে যায়। আবার বর্ষা এলে রাস্তার কয়েক ফুট গভীর গর্তে জল জমে আর এক সমস্যা। ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে।” রাস্তার মেরামতির দাবি করা হয়েছে বহুবার। তা সত্বেও শিলিগুড়ির বিভিন্ন ওয়ার্ডে এর চেয়ে ভাল রাস্তার পিচের উপরে ফের পিচের প্রলেপ পড়েছে। কিন্তু এই রাস্তায় কোনও পরিবর্তন হয়নি বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ী গৌতম পাল। রাস্তা নিয়ে বহুবার কাউন্সিলরকে জানানো হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। কিন্তু কাজ হয়নি বলে দাবি করেন হায়দরপাড়ার বিপুল সরকার। বুদ্ধভারতী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপনেন্দু নন্দীও রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে ভুক্তভোগী বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বহু দিন ধরেই ওই রাস্তার অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থা। দ্রুত মেরামতির প্রয়োজন।”
যদিও ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর দেবশঙ্কর সাহা এই রাস্তার দুরবস্থার কথা স্বীকার করলেও মেরামতির ব্যপারে ব্যর্থতার দায় নিতে রাজি হননি। তিনি নিজেই অনেকবার পুরসভায় এ ব্যপারে দরবার করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা পুরবোর্ডে থাকার সময় গোটা রাস্তার এক কিলোমিটার মেরামতির জন্য ১৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করিয়েছিলাম। তার টেন্ডার হয়ে যাবে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই। তবে রাস্তার বাকি অংশটুকু তৈরির জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়াকে জানানো হয়েছে।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর অভিযোগ, পুরসভা গত পাঁচ বছরে কোনও কাজই করেনি। তাঁর দাবি, “শহরের রাস্তা সহ যা উন্নয়নের কাজ হয়েছে, তা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর বা শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগেই হয়েছে। বহু রাস্তা মেরামতি ও তৈরি হয়েছে। ওই রাস্তারও কাজ করা হবে। গোটা শহরকেই বিশেষভাবে সাজিয়ে তোলা হবে।” পুর কমিশনার জানান, রাজ্য পুর দফতরকে সব জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy