জিটিএ বা গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রস্তাবিত পর্যটন কেন্দ্রের জমিতে জেলাশাসকের জারি করা ১৪৪ ধারার উপর স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিলেন দার্জিলিঙের সেশন জজ উদয় কুমার। গত ২৮ মে জিটিএ-র পর্যটন বিভাগের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য দাওয়া লেপচা দাখিল করা আবেদনের ভিত্তিতে আদালত ওই রায় দিয়েছে। আদালত সূত্রের খবর, আদালতের আগামী নির্দেশ দেওয়া পর্যন্ত ওই স্থগিতাদেশ দারি থাকবে। আগামী ১৬ জুন মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। দাওয়া লেপচার আইনজীবী বেদেন গুরুঙ্গ বলেন, “পর্যটন কেন্দ্রের ওই জমির উপর জারি করা নির্দেশের উপর আমরা স্থগিতাদেশ পেয়ে গিয়েছি এখন সেখানে কাজ শুরু করতে কোনও অসুবিধা থাকল না। পরবর্তী শুনানি দিন আদালতের নির্দেশ দেখে আমরা পরের পদক্ষেপ ঠিক করব।” এদিন দাওয়া লেপচা জানান, সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে জমির ক্ষতিপূরণ বা দাবির বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। তারমধ্যেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কারণ, জেলাশাসকের কাছে যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁরা সকলেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। আমরা আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ২৮ এপ্রিল দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদব শৈলশহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের জামুনির প্রস্তাবিত কেন্দ্রটির প্রায় ১৩.৮ একর জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করে। এর আগে এলাকার ৯ জন জমির মালিক জেলাশাসককে অভিযোগ করেছিলেন, জিটিএ কর্তৃপক্ষ পযর্টন বিভাগ তাঁদের জমি জোর করে দখল করে নিয়েছেন। জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা বলেও তা দেওয়া হয়নি। এর পরেই জেলাশাসক ওই নির্দেশ জারি করেন। যদিও শুক্রবার আদালতের রায় প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, “আদালত কী নির্দেশ দিয়েছে তা না দেখে বলতে পারব না। এখনও আদালতের কোনও নির্দেশ নামা হাতে পাইনি। তা দেখার পরেই মন্তব্য করব।” জিটিএ সূত্রে খবর, জামুনিতে জিটিএ পর্যটন বিভাগ একটি বিনোদন কেন্দ্র তৈরি করছে। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের জন্য বোটিং করার ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছে। বিতর্কিত জমিতে কটেজ তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও মুগল গার্ডেনের আদলে বাগান, ওয়াটার পার্ক এবং সুইমিং পুলও তৈরি করা হবে। গত মাসে এলাকার ৯ জন জমির মালিক তাদের ক্ষতিপূরণ ছাড়া জমি নিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন।
ওই জমির মালিকদের তরফে মণিলাল তামাঙ্গ বলেন, “আমরা আদালত কী নির্দেশ দিয়েছে শুনিনি। আদালতের নির্দেশ নিয়ে আমরা কোনও রকম মন্তব্যও করব না। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলা হবে। আমাদের ক্ষতিপূরণ দরকার।” তিনি বলেছেন, “আমার এবং আত্মীদের মিলিয়েই প্রায় সাড়ে ৯ একর জমি আছে। বাকিদের অন্য অংশটি আছে। ২০১২ সালে প্রকল্প শুরুর সময়ে জিটিএ কর্তৃপক্ষ বাজার দর অনুসারে জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। বাধ্য হয়ে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy