Advertisement
E-Paper

জরিমানায় গরহাজিরা চাপা দিয়ে পরীক্ষা নয়

ক্লাসে নিয়মিত হাজিরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলার অন্যতম প্রধান শর্ত। টাকা নিয়ে সেই নিয়ম ভাঙার গাফিলতি মাফ করে দেওয়া যায় না কি না, তা নিয়ে শিক্ষা শিবিরে বিতর্ক চলছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৫৫

ক্লাসে নিয়মিত হাজিরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলার অন্যতম প্রধান শর্ত। টাকা নিয়ে সেই নিয়ম ভাঙার গাফিলতি মাফ করে দেওয়া যায় না কি না, তা নিয়ে শিক্ষা শিবিরে বিতর্ক চলছে। তার মধ্যেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ রবিবার জানিয়ে দিলেন, আইনের যে-সব পড়ুয়ার প্রয়োজনীয় ন্যূনতম হাজিরা নেই, জরিমানার বিনিময়ে তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যাবে না।

প্রেসিডেন্সি, কলকাতা-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসে পড়ুয়াদের হাজিরা-ঘাটতি নিয়ে টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। কিছু দিন আগেই প্রেসিডেন্সিতে এক শ্রেণির ছাত্রছাত্রীর হাজিরার ঘাটতিকে কেন্দ্র করে ছাত্র সংসদের ভোটে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। সেটা তবু ছিল পঠনপাঠন-বহির্ভূত ব্যাপার। এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় বসার সঙ্গে বিষয়টি জড়িয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠেছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অন্তত ৭০ শতাংশ হাজিরা না-থাকলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয় না। সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ২০-২৫ জন পড়ুয়ার সেই ন্যূনতম হাজিরা নেই বলে ওই প্রতিষ্ঠান সূত্রের খবর। হাজিরা সংক্রান্ত আইনের আওতায় পড়ে যাওয়ায় তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ছাত্র-পিছু চার হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে তাঁদের পরীক্ষায় বসানোর কথা ভাবছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়। তবে পড়ুয়াদের আপত্তিতে জরিমানার অঙ্ক কমিয়ে করা হয় দু’হাজার ১০০ টাকা।

শুরু হয় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে দু’দিক থেকে। প্রথমত, ক্লাসে গরহাজিরার গাফিলতি কি কিছু টাকা দিয়ে বেমালুম ঢেকে দেওয়া যায়? পড়ুয়াদের তরফে কিছু কাঞ্চনমূল্য ধরে দিলেই এ ভাবে নীতির সঙ্গে আপসের রাস্তা খুলে দিলে শিক্ষার আর অবশিষ্ট কী থাকে? দ্বিতীয়ত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিক থেকেই বা কোন নিয়মবিধির ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের জরিমানা নিয়ে গরহাজিরা মাফ করা হচ্ছে?

এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিসবাবুকে এ দিন বারবার ফোন করা হয়। কিন্তু তাঁর সাড়া মেলেনি। তবে উপাচার্যের নির্দেশের আগে, শনিবার তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কলেজের অনেক পড়ুয়ার হাজিরার হার অত্যন্ত শোচনীয়। কারও কারও ক্ষেত্রে সেটা একেবারে শূন্য! পড়ুয়ারা যাতে সেটা পুষিয়ে নেন, সেই জন্য অনেক আগে থেকেই তিনি তাঁদের সতর্ক করে আসছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। তাঁর অভিযোগ, অনেক পড়ুয়া আদৌ কলেজের রাস্তা না-মাড়িয়ে টিউটরের কাছে যেতেই অভ্যস্ত। সেই সব ছাত্রছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকদের বার্তা দিতেই তিনি জরিমানার ব্যবস্থা চালু করতে চেয়েছিলেন।

ক্লাসে গরহাজির ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য ওই কলেজ-কর্তৃপক্ষ জরিমানা ধার্য করেছেন শুনে শনিবারেই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষবাবু। তিনি জানান, এক টাকা জরিমানা দিয়েও আইনের পরীক্ষায় যথেষ্ট সংখ্যক হাজিরা না-দেওয়া পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসানোর উপায় নেই।

‘‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে এ ভাবে জরিমানা দিয়ে পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার নিয়ম নেই। আমি আইন বিভাগের ডিনকে বলেছি, এই নির্দেশ কলেজ-কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হোক,’’ এ দিন বলেন উপাচার্য।

Absent Attendance Fine
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy