ইট-বালি-সিমেন্ট-পাথর তো বটেই। বিবেকানন্দ রোডে পথ-সেতু তৈরির কাঁচামালের তালিকায় বড় জায়গা নিয়ে রয়েছে লোহা ও ইস্পাত। সেতুভঙ্গের পরে অন্যান্য মালমশলার সঙ্গে সেগুলোও পড়ে গিয়েছে তদন্তকারীদের নজরে।
এবং সেই কারণে লালবাজারের গোয়েন্দারা এ বার কথা বলতে চাইছেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে, যারা কিনা প্রকল্পটিতে লোহা-ইস্পাতের জোগান দিয়ে এসেছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, নির্মাতা ঠিকাদার কোম্পানি আইভিআরসিএল ওই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছ থেকে কেনা লোহা-স্টিল দিয়েই বানিয়েছিল উড়ালপুলের পিলার, বিম ও গার্ডার। তদন্তকারীদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, ৪০ নম্বর পিলারের একটি অংশের নাটবল্টু খুলে যাওয়ায় স্তম্ভটির একাংশ বসে গিয়েছিল। তারই জেরে সেতুর খানিকটা ধসে পড়ে।
গোয়েন্দাদের বক্তব্য, পিলারে বিপত্তির কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় যাবতীয় নির্মাণ-সামগ্রীর মান যাচাই জরুরি। সেগুলোর নমুনা ফরেন্সিকে পাঠানো হচ্ছে। জানার চেষ্টা চলছে, কারা সে সব সরবরাহ করেছিল। এই প্রক্রিয়ারই অঙ্গ হিসেবে ইস্পাত সংস্থাটির মুখোমুখি বসার তোড়জোর।
পাশাপাশি নির্মাতা সংস্থার আরও এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম রঞ্জিত ভট্টাচার্য, তিনি আইভিআরসিএলের পূর্বাঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক। সংস্থার আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে রঞ্জিতবাবু উড়ালপুলটির নির্মাণকাজের দৈনিক রিপোর্ট হায়দরাবাদ সদরে পাঠাতেন। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পূর্ব কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি। মঙ্গলবার ছাড়া পেলে তাঁকে লালবাজারে ডেকে পাঠনো হয়। জেরায় সন্তোষজনক জবাব না-পাওয়ায় মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার কোর্টে তোলা হলে তাঁর পুলিশ হেফাজত হয়েছে।
পোস্তা-কাণ্ডে এ নিয়ে আইভিআরসিএলের মোট ৯ জন গ্রেফতার হলেন। পুলিশ বিডন স্ট্রিট, কসবা ও আনন্দপুরে সংস্থার তিনটি প্লান্টে হানা দিয়েছে। কোথাও স্টিলের রড কাটা হতো, কোথাও সিমেন্ট-বালি-পাথর মেশানো হতো। পুলিশ সেখান থেকে নমুনাও নেয়, যেগুলোর মান যাচাইয়ের উদ্যোগ চলছে। তবে নির্মাতা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তেড়ে-ফুঁড়ে লাগলেও প্রকল্পের মূল নজরদার কেএমডিএ-র কাউকে পুলিশ কেন ধরল না, স্থানীয় মানুষের মধ্যে সেই প্রশ্ন এই মুহূর্তে প্রকট। গোয়েন্দারা অবশ্য বলছেন, এ বিষয়ে
তারা নিশ্চিত হয়ে এগোতে চায়। আপাতত কেএমডিএ-র ভূমিকার চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে বলে লালবাজারের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy