Advertisement
E-Paper

মদ নিষিদ্ধ হোক এ রাজ্যেও! সুর চড়াল বিরোধীরা

চায়ের পেয়ালায় তুফান তোলা বহু বিতর্কের সাক্ষী যে সভা, সেখান থেকেই হঠাৎ ঝড় সুরাপাত্রে!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৬ ০৩:৫২

চায়ের পেয়ালায় তুফান তোলা বহু বিতর্কের সাক্ষী যে সভা, সেখান থেকেই হঠাৎ ঝড় সুরাপাত্রে!

বাজেট দেখেই বিরোধীরা বলে আসছে, রাজ্য সরকারের আয়ের রাস্তা দু’টো। রাজ্যের জন্য কেন্দ্র করের ভাগ বাড়িয়ে দেওয়ায় তা থেকে ফায়দা। আর ঢালাও মদের দোকানের লাইসেন্স থেকে রোজগার। এ ছাড়া শিল্প বা উৎপাদন থেকে রাজস্ব বাড়ানোর দিশা কোথায়? এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বাজেট-বিতর্কের শেষ দিনে আরও এগিয়ে গেলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর)। তিনি দাবি করে বসলেন, বিহারের মতো এ রাজ্যেও মুখ্যমন্ত্রী মদ নিষিদ্ধ করে দেখান! তাঁকে সমর্থন করলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এবং বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান।

এতে বি়ড়ম্বনাতেই পড়েছে সরকার পক্ষ। মদের পক্ষে না বিপক্ষে, কোনও অবস্থান নেওয়া সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে! একে মুখ্যমন্ত্রী সভায় নেই। তার উপরে মদ কোষাগারের জন্য মা লক্ষ্ণী! আবার মদ্যপান-বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সমাজের একাংশের ভাবাবেগ জড়িত। তাই জবাবি বক্তৃতা দিতে উঠে অমিত মিত্র প্রসঙ্গ ছুঁলেনই না! পরে সভার বাইরেও অর্থমন্ত্রীর সতর্ক প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা নিয়ে আমি এই মাত্রই কিছু বলতে পারছি না।’’

কিন্তু বিরোধীরা হঠাৎ এ নিয়ে সুর চ়ড়ালেন কেন? তাঁদের যুক্তি, পাড়ায় পাড়ায় মদের দোকান গজিয়ে ওঠার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সম্পর্ক আছে। ভিক্টর যেমন বলেছেন, ‘‘বিহারে মদ বন্ধ করার পরে তিন মাসে অপরাধ কমেছে ৫৭%। এখানে তো অপরাধ বেড়েই চলেছে। নীতীশ কুমারের মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতাও মদ-মুক্ত রাজ্য ঘোষণা করার চ্যালেঞ্জ নিন না।’’ এর সঙ্গে ভিক্টর অবশ্য জুড়ে দিয়েছিলেন, তাঁর ধারণা, মুখ্যমন্ত্রীর এমন কোনও নেশা নেই। তাই নিষেধাজ্ঞায় অসুবিধা কোথায়? তৃণমূল বিধায়কদের প্রবল শোরগোলে সেই মন্তব্য স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত কার্যবিবরণী থেকে বাদই দিয়েছেন।

সিপিএমের সুজনবাবু বোঝানোর চেষ্টা করেন, মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করা মানেই রাজ্যে থাকা বট্‌লিং প্ল্যান্ট বন্ধ করে দেওয়া নয়। আর বিরোধী দলনেতা মান্নান অভিযোগ এনেছেন, রাজ্যই মদ্যপানে উৎসাহ দিচ্ছে। তাতে সভায় হইচই হচ্ছে দেখে তিনি কৌশলে বলেছেন, ‘‘দিকে দিকে স্কুল খুললে শিক্ষা প্রসারে উৎসাহ বলা হয়। তা হলে দিকে দিকে মদের দোকান খুললে কীসে উৎসাহ দেওয়া হয়, আপনারাই বলে দিন!’’

মন্ত্রী মুখ না খুললেও সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, মদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চাপালে চোলাইয়ের রমরমা বাড়বে। তাতে গরিব মানুষের বিপদ। আবগারি খাতে আয় কমে যাওয়া তো আছেই। গুজরাত, বিহার, নাগাল্যান্ড, লক্ষদ্বীপে মদ বন্ধ। মণিপুরেও আংশিক নিষেধাজ্ঞা আছে। কেরল বার বন্ধ করে দিয়ে শুধু পাঁচতারা হোটেলে মদ বিক্রির ব্যবস্থা রেখেছে।

দাবি উঠেছে বলে মা-মাটি-মানুষের সরকারও কি বাংলাকে শুষ্ক রাজ্য করতে চাইবে? শাসক দলের এক বিধায়কের রসিকতা, ‘‘গণভোট নিয়ে দেখা যাক না!’’

Alcohol Mamata Banerjee Nitish kumar Bihar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy