Advertisement
০৭ মে ২০২৪

মদের কারখানার বিরুদ্ধে মত, চাপে ইস্তফা প্রধানের

পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন দাঁতন-২ ব্লকের সাউরি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তাপসী পাত্র। পারিবারিক কারণ দেখিয়ে বিডিও-র কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেও জানা যাচ্ছে, দলের একাংশের মদতে প্রস্তাবিত মদের কারখানা নিয়ে প্রতিবাদ করেও সুফল না পাওয়ায় তাঁর এই সিদ্ধান্ত। বিডিও রুনু রায় বলেন, “তাপসী পাত্র গত শুক্রবার পারিবারিক কারণ দেখিয়ে ইস্তফাপত্র দিয়েছেন। আজ, সোমবার ওঁকে অব্যাহতি দেওয়া নিয়ে আলোচনা হবে।”

পদত্যাগী প্রধান তাপসী পাত্র।

পদত্যাগী প্রধান তাপসী পাত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০১:০৭
Share: Save:

পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন দাঁতন-২ ব্লকের সাউরি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তাপসী পাত্র। পারিবারিক কারণ দেখিয়ে বিডিও-র কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেও জানা যাচ্ছে, দলের একাংশের মদতে প্রস্তাবিত মদের কারখানা নিয়ে প্রতিবাদ করেও সুফল না পাওয়ায় তাঁর এই সিদ্ধান্ত। বিডিও রুনু রায় বলেন, “তাপসী পাত্র গত শুক্রবার পারিবারিক কারণ দেখিয়ে ইস্তফাপত্র দিয়েছেন। আজ, সোমবার ওঁকে অব্যাহতি দেওয়া নিয়ে আলোচনা হবে।”

২০১১ সালের শেষ দিকে সাউরিতে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গড়বে বলে জমি নিয়েছিল এক সংস্থা। বছর দু’য়েক পরে সেই জমিতে ভোজ্য তেলের কারখানার জন্য পঞ্চায়েতের অনুমতি চায় ওই সংস্থাটি। এলাকার ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের স্বার্থে সেই প্রস্তাবে সমর্থনও জানান স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা। কিন্তু ২০১৪ সালের শেষ থেকে গোলমাল শুরু হয়। কারণ, সংস্থাটি তখন জানায়, তারা মদ তৈরির কারখানা বানাবে। এ জন্য পঞ্চায়েতের অনুমতিও চায়। এ বার বেঁকে বসেন পঞ্চায়েত প্রধান তাপসীদেবী। তাঁকে সমর্থন করেন এলাকা থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য শৈবাল গিরিও। তৃণমূল সূত্রে খবর, মদের কারখানার পক্ষে থাকা একাংশ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন তাপসীদেবী। আর তারপর থেকেই তাঁকে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছিল। নিরাপত্তার অভাবেই তিনি প্রধান পদ ছাড়লেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও তাপসীদেবী নিজে বলছেন বলেছেন, “আমার স্বামী সেনাবাহিনীতে কাজের সূত্রে গুজরাতে থাকেন। এখানে আমি দুই সন্তান নিয়ে থাকি। পারিবারিক অসুবিধার জন্যই পদত্যাগ করছি।”

এলাকায় কান পাতলেই অবশ্য শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, “একটা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জমিতে মদের কারখানা হলে এলাকাবাসী মেনে নেবে না। তাই প্রধান রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু আমাদেরই কিছু পঞ্চায়েত সদস্য টাকার লোভে ওঁকে চাপ দিচ্ছিলেন। প্রধান পদত্যাগ করে তাঁর সততা বুঝিয়ে দিয়েছেন।”

তবে এখনই দল ছাড়ছেন না তিনি। তাপসীদেবীর বক্তব্য, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতিতে বিশ্বাস করি। সেই নীতি নিয়ে দল করব। কিন্তু আমার নিরাপত্তা কে দেবে?” আপনার পদত্যাগ ব্লক সভাপতি সমর্থন করেছেন? তাপসীদেবীর জবাব, “শৈবালদা আমার পাশে আছেন।” আর উপ-প্রধান? একটু থেমে তাপসীদেবী বলেন, “উপপ্রধান আমাকে সমর্থন করেননি।”

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তথা জেলা কর্মাধ্যক্ষ শৈবালবাবু রাখঢাক না করে দলের একাংশের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, “সাউরি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ একাংশ পঞ্চায়েত সদস্য মদের কারখানার পক্ষে। অনুমতি না দেওয়ায় প্রধানকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়ে প্রধান পদত্যাগ করেছেন।” অভিযুক্ত উপপ্রধান দিলীপ সামন্তের অবশ্য বক্তব্য, “প্রধানের পদত্যাগের পিছনে মদের কারখানার অভিযোগ গল্প ছাড়া কিছু নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE