Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Education

টেস্টের বিকল্প মহড়া-পরীক্ষা চায় বহু স্কুল

উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানের কোনও প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসই হয়নি বলে জানান সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৪৬
Share: Save:

সরাসরি চূড়ান্ত পরীক্ষার বারদরিয়ায় পড়ে যাতে হাবুডুবু খেতে না-হয়, সেই জন্য পুকুর বা দিঘিতে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একটু সাঁতারের মহড়ার বন্দোবস্ত করতে চাইছে কিছু স্কুল। অতিমারির থাবা এড়াতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিতে টেস্ট বাতিল করেছেন। এতে প্রস্তুতির বেশ খানিকটা ঘাটতি থেকে যাবে বলে অনেক পরীক্ষার্থীর আশঙ্কা। তাই কিছু স্কুল সরকারের অনুমতি নিয়ে টেস্ট না-হলেও অনলাইনে বা ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে এনে প্রায়-টেস্ট গোছের একটি পরীক্ষার আয়োজন করতে চাইছে। তা হলে বোর্ডের পরীক্ষা ঠিক কেমন হয়, তার আভাস পাবেন পরীক্ষার্থীরা।

আট মাস স্কুল বন্ধ থাকায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কার্যত কোনও ক্লাসই হয়নি। দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা মাত্র মাস দুয়েক ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে। ফলে মাধ্যমিকের প্রস্তুতির ঘাটতি থেকে গিয়েছে তাদেরও। এই অবস্থায় সরাসরি বোর্ডের পরীক্ষায় বসলে অনেকেরই ফল খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ।

উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানের কোনও প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসই হয়নি বলে জানান সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। বিজ্ঞান পড়ুয়ারা কী ভাবে পরীক্ষা দেবেন, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন তাঁরা। “ডিসেম্বরে যদি কিছু পড়ুয়া স্কুলে আসার সরকারি অনুমতি পায়, তা হলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টানা প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করিয়ে নিতে চাই। করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দফায় দফায় পরীক্ষার্থীদের ডেকে নেওয়া হবে,” বলেন দেবব্রতবাবু। তিনি জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেমন হয়, সেই বিষয়ে ধারণা তৈরি করতে মডেল প্রশ্নও দেওয়া হতে পারে। পড়ুয়ারা সেই প্রশ্নের সমাধান করবেন স্কুলের শ্রেণিকক্ষে বসেই। ‘‘পুরোটাই নির্ভর করছে সরকারের অনুমতির উপরে,’’ বলেন ওই প্রধান শিক্ষক।

স্কুল কি ডিসেম্বরে খুলবে? উত্তর নেই। তাই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মডেল প্রশ্ন অনলাইনেই দেওয়ার কথা ভাবছেন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য আদর্শ প্রশ্ন তৈরি করে হোয়াটসঅ্যাপ বা ই-মেলে পাঠানোর পরিকল্পনা আছে। ক্লাসের মতো করেই পড়ুয়াদের পরীক্ষা দিতে বলা হবে। গার্ড দেবেন অভিভাবকেরা। উত্তরপত্র নেওয়া হবে অভিভাবকদের কাছ থেকে।”

কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক কাজি মাসুম আখতার জানান, অনেক পড়ুয়ার স্মার্টফোন নেই। তাই অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া খুব কঠিন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অনুরোধ করা হবে, ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার জন্য তাঁরা যেন আত্মীয়বন্ধুর কাছ থেকে স্মার্টফোন জোগাড় করে নেন। তা হলে অনলাইনে আদর্শ প্রশ্ন পাঠিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর লিখতে বলা হবে পরীক্ষার্থীদের।

অনেক জেলা বা প্রত্যন্ত গ্রামে সাইবার-সরণিতে পরীক্ষার আয়োজন করা খুবই কঠিন বলে মনে করছেন মফস্‌সলের শিক্ষকেরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘোষডিহা হাইস্কুলের শিক্ষক কিঙ্কর অধিকারী জানান, গ্রামাঞ্চলে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া মুশকিল। তবে স্কুল যদি খোলে, তা হলে পড়ুয়াদের ডেকে বোর্ড পরীক্ষার মহড়ার ব্যবস্থা করা যায়। তবে সরকার টেস্ট বাতিল করায় ক’টি স্কুল পরীক্ষা নিতে চাইবে বা ক’জন পড়ুয়া পরীক্ষা দিতে চাইবেন, সেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Examination Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE