শুধু অ্যাপোলো নয়, মুখ্যমন্ত্রীর টাউন হলের বৈঠক এবং নয়া স্বাস্থ্য বিল পাশের পর বহু বেসরকারি হাসপাতালেরই ব্যবসা এক ধাক্কায় অনেকটা কমে গিয়েছে। সল্টলেক, ই এম বাইপাসের একাধিক হাসপাতালে রোগীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। বহু বিভাগে অস্ত্রোপচারের দিন পিছোচ্ছে। এমনকী মুমূর্ষু রোগীকেও ছুঁতে ভয় পাচ্ছেন ডাক্তাররা। যদি কিছু ঘটে আর দায়টা এসে ঘাড়ে পড়ে!
সল্টলেকের একটি হাসপাতালের এক স্ত্রী রোগ চিকিৎসকের কথায়, ‘‘কোনও ঝুঁকির সিজারিয়ান ডেলিভারি করতেও হাত কাঁপছে। মনে হচ্ছে, কোনও ভুল হয়ে যাবে না তো? রাতে হাসপাতাল থেকে ফোন এলে কেঁপে উঠছি।’’ আর এক ডাক্তারের কথায়, ‘‘যে পরীক্ষাই লিখি না কেন, রোগীর বাড়ির লোক ব্যাখ্যা চাইছেন। মুখের ওপরে বলছেন, ‘পরীক্ষার জন্য কত কমিশন পাচ্ছেন?’ মনে হচ্ছে আমরা যেন দাগী অপরাধী! মুখ্যমন্ত্রী মুড়ি-মিছরি এক দর করে দিলেন!’’
বাইপাসের একাধিক হাসপাতালের একাধিক বিভাগের বেশ কিছু চিকিৎসক ছুটি নিয়ে বসে রয়েছেন। কারণ হিসেবে কেউ অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। কেউ আবার ভিন্ রাজ্যে থাকা ছেলে বা মেয়ের কাছে চলে গিয়েছেন। একাধিক চিকিৎসক মাসখানেকের জন্য বিদেশে গেছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, হাওয়া ঠান্ডা হলে তবে ফিরবেন!
সল্টলেকের এক হাসপাতালের সিইও-র কথায়, ‘‘কী করব, বুঝতে পারছি না। এ ভাবে চললে ব্যবসা গোটানোর কথা ভাবতে হবে।’’ বাইপাসের এক হাসপাতালের কর্তার কথায়, ‘‘ডাক্তারদেরই বা দোষ দিই কী করে? চিকিৎসার খরচ যা-ই হোক না কেন, রোগীরা বলছেন, ‘আর কত চুরি করবেন?’ আর মানসম্মান থাকছে না! থানার ভয় দেখাচ্ছেন সবাই! ’’
আরও পড়ুন: কালিকা নেই, উৎসব মুহূর্তে পাল্টে গেল শোকসভায়
নিজেদের এই অবস্থার কথা খোলাখুলি মুখ্যমন্ত্রীকে বলছেন না কেন? বাইপাসের এক হাসপাতালের কর্তা বলেন, ‘‘বলার সাহস নেই আমাদের। অ্যাপোলোর অবস্থা দেখে এতটাই গুটিয়ে গেছি যে, মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছি। সামান্য প্রতিবাদের আভাসটুকুও কি মানা হবে? তখন আমাদের নিয়ে থানায় টানাহ্যাঁচড়া হতে পারে বলেও ভয় হচ্ছে!’’ রোগীরাও স্বস্তিতে নেই। এক দিকে বেসরকারি ডাক্তারদের এই সিঁটিয়ে যাওয়া, অন্য দিকে সরকারি হাসপাতালের অপ্রতুল শয্যা— দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে শোচনীয় অবস্থা বহু রোগীরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy