Advertisement
E-Paper

সুকনায় তাণ্ডবে বাড়ছে ক্ষোভ

দার্জিলিং পাহাড়ের কোলে থেকেও ‘পাহাড়ে’র মতো হতে চান না, সুকনার গাড়ির চাকার দোকানের মালিক থেকে মুদির দোকানের মালিক বয়স্ক মহিলা থেকে অনেকেই।

কোশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৭ ০২:৪৪
আন্দোলনকারীরা খুকুরি হাতে পথে নামছেন। নিজস্ব চিত্র

আন্দোলনকারীরা খুকুরি হাতে পথে নামছেন। নিজস্ব চিত্র

ঐতিহ্যবাহী সুকনা টয়ট্রেন স্টেশনের পাশেই চা, মোমো, চাউমিনের দোকান মাঝবয়সী মহিলার। বন দফতর থেকে পেট্রোল পাম্প, স্বাস্ব্যকেন্দ্র, পঞ্চায়েত অফিস, পুলিশ ফাঁড়িতে আসেন যান, এমন অনেকেই নিয়মিত ক্রেতা। গত দু’সপ্তাহ পাহাড়ের বন্‌ধের জন্য ঠিকঠাক দোকান খোলেননি মহিলা। কোনও সময় দরজা অল্প খোলা রাখলেও শনিবার সকাল থেকে তা পুরোপুরি বন্ধ। রবিবার দোকানের সামনে বসে বললেন, ‘‘পাহাড়-সমতলের মানুষ আমার কাছে সমান। আলাদা রাজ্য চাইলেও আমি শান্তির পক্ষে। এভাবে দাবি আদায় হয় না’’

দার্জিলিং পাহাড়ের কোলে থেকেও ‘পাহাড়ে’র মতো হতে চান না, সুকনার গাড়ির চাকার দোকানের মালিক থেকে মুদির দোকানের মালিক বয়স্ক মহিলা থেকে অনেকেই। তাঁরা জানান, মিছিল মিটিং সুকনায় গত একমাস ধরে হচ্ছে। সন্ধ্যায় মোমবাতি মিছিল হয়। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ উল্টে আমাদের পাশে থাকে। কিন্তু শনিবার বাইরের কিছু লোক এসেছিল আন্দোলনে। তাতে পুলিশও পাল্টা আক্রমণ করল। সুকনার চেহারাটাই পাল্টা গেল। আমরাও বদনাম হলাম।’’

একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন অল্প বয়সী দুই যুবক। শালবাড়িতে ফাস্ট ফুডের দোকান রয়েছে। স্থানীয় সুকনা মডেল স্কুল, ইলাপাল চৌধুরী হাইস্কুল তো বটেই শালবাড়ির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছেলেমেয়েরাও দোকানে আসেন। তাঁরা বললেন, ‘‘শনিবারের সুকনার ছবি রাতে টিভিতে দেখে নিজের চোখকেও বিশ্বাস করিনি।’’

এ দিন সুকনা থেকে শালবাড়ি সর্বত্র দোকানপাট বন্ধ ছিল। গাড়ি চলেছে। কিছুটা থমথমে এলাকা। রাস্তায় কাচ, পোড়া টায়ার, ঢিল, বাঁশের ছড়াছড়ি। দুপুরে সুকনা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে শান্তির দাবি জানিয়ে এসেছেন বাসিন্দারা। মোর্চার দলীয় প্যাডে নয়, সাধারণ সাদা কাগজে ৫৭ জন বাসিন্দা স্বাক্ষর করে একটি স্মারকলিপিও জমা দেন। ঘন্টা খানেক থানার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের সঙ্গে মোর্চার নেতানেত্রীরা ছিলেন।

পরে নারী মোর্চা একটি মিছিল করে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে রাখেন। পুলিশ অবশ্য বাধা দেয়নি। এ দিন সকাল থেকে সুকনার মোর্চারাই নেতানেত্রী সুরেন প্রধান, ছিরিং দাহাল এবং দুর্গা শর্মারা রাস্তা নেমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, পুলিশকে খুনের চেষ্টা-সহ ১৭টি ধারায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে দু’জন সুকনার। বাকিরা কার্শিয়াং মহকুমায় বিভিন্ন এলাকার। তবে মোর্চার সুকনা ব্লক সভাপতি দুর্গা শর্মা বলেন, ‘‘পুলিশ গুলি, কাঁদানো গ্যাস চালায়। তাতে আত্মরক্ষার জন্য কেউ কেউ ঢিল ছুড়েছেন।’’ সুকনার বাসিন্দারা বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই চাই। পাহাড় থেকে নেমে এসে কেউ আমাদের এলাকায় অশান্তি করুক তা চাই না।’’

Siliguri Vandalism GJM Darjeeling unrest শিলিগুড়ি সুকনা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy