রাত তখন দু’টো। মায়ের পাশে ঘুমে কাদা ভাই-বোন। তীব্র উত্তাপে ঘুম ভাঙল তাদের। দরমার বেড়া আর মাটির ঘর দাউ দাউ করে জ্বলছে। ছুটে পালানোরও জো নেই। দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ!
মা-ছেলেমেয়ের আর্ত চিৎকারে বাঁচাতে আসতে পারলেন না পড়শিরাও। দুষ্কৃতীরা আশপাশের বাড়ির দরজাও বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল। শেষে দরজা ভেঙে প্রতিবেশীরা যখন এলেন, ততক্ষণে স্কুল পড়ুয়া ভাই-বোন মৃতপ্রায়। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও তাদের বাঁচানো যায়নি। আশঙ্কাজনক অবস্থা মায়ের।
স্রেফ পারিবারিক বিবাদে বৃহস্পতিবার রাতে এমনই ঘটনার সাক্ষী রইল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থানার সুন্দরপুর। গ্রামের কাজি পাড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় ভাইপো কাজি রাজীব (১৫) ও ভাইঝি রেশমি খাতুন (১৭)-কে পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে সৎ কাকা কাজি ইসমাইলের বিরুদ্ধে। রাজীব-রেশমির মা বছর আটচল্লিশের ফতেমা বিবির অবস্থাও সঙ্কটজনক। তাঁর চিকিৎসা চলছে এসএসকেএমে। শুক্রবার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী অভিযুক্ত ইসমাইলের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ পৌঁছলে তাদেরও ইট ছোড়া হয়। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইসমাইল পলাতক। তবে ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ফতেমার শ্বশুরবাড়ির দিকের আত্মীয় শেখ ফরিউদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “পারিবারিক গণ্ডগোলের জেরেই এই ঘটনা। শেখ ফরিউদ্দিনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ইসমাইলের মা ও বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইসমাইলেরও খোঁজ চলছে।”