অতিমারিতে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বাড়িতে বসে কাজ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে এমন কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। অভিযোগ, রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি না-থাকায় অনেক প্রতিবন্ধী কর্মীকেই কাজে যেতে হচ্ছে। রাজ্যের বেশ কিছু প্রতিবন্ধী শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, করোনার ভয়াবহ আবহেও মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিলি বা স্কুল-কলেজের অন্যান্য কাজের জন্য তাঁরা কর্মস্থলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের দাবি, প্রতিবন্ধীদের বাড়ি থেকে কাজ করার বিষয়ে রাজ্য সরকার সুস্পষ্ট নির্দেশিকা দিক।
শিবশঙ্কর ভুঁইয়া নামে ঘাটালের এক স্কুলশিক্ষক জানান, পোলিয়োর জেরে তাঁর একটি হাত অকেজো। তিনি খানাকুলের একটি স্কুলে পড়ান। শিবশঙ্করবাবু বলেন, “মিড-ডে মিল বিলি বা অফিস সংক্রান্ত কাজে আমাকে স্কুলে যেতে হচ্ছে। করোনার জন্য বাস ঠিকমতো চলছে না। এই অবস্থায় স্কুলে যাতায়াত করাও খুব সমস্যার। কিন্তু মিড-ডে মিলের জিনিসপত্র বিতরণ করতেই হবে। বাধ্য হয়ে ভিড়-বাসে বা কারও সাইকেলে চেপে স্কুলে পৌঁছতে হচ্ছে।” শিবশঙ্করবাবু প্রশ্ন, কেন্দ্র ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্য প্রতিবন্ধীদের ঘরে বসে কাজ করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তা হলে পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে না কেন?
রানিগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষক দেবাশিস চট্টরাজের কানে সমস্যা আছে। তাঁর স্ত্রী সুরঙ্গমা ফোনে বলেন, “প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করলে তিনি হয়তো আমার স্বামীকে এই পরিস্থিতিতে স্কুলে যেতে বারণ করবেন। কিন্তু রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি থাকাটা জরুরি। নইলে পরে সমস্যা হতে পারে।” মালদহের গাজলের একটি কলেজের শিক্ষক শ্যামল ঘোষ জানান, তিনি পোলিয়োয় আক্রান্ত। পঠনপাঠন এখন বন্ধই। কিন্তু অসুবিধা সত্ত্বেও অফিস সংক্রান্ত কাজে কলেজে যেতে হচ্ছে। “করোনা পরিস্থিতিতে রাস্তাঘাটে চলতে-ফিরতে খুব অসুবিধা হচ্ছে আমাদের,” বলেন শ্যামলবাবু।
শিবশঙ্করবাবু জানান, অতিমারিতে প্রতিবন্ধীদের বাড়ি থেকে কাজের জন্য রেল, কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কও পৃথক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। “প্রতিবন্ধীদের বাড়ি থেকে কাজ করার বিষয়ে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ই-মেল করেছি। বিষয়টি সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজাকেও জানিয়েছি,” বলেন ওই শিক্ষক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy