সপ্তাহের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে সৌজন্য ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পারস্পরিক দোষারোপ বাদ দিয়ে সহযোগিতার মনোভাব নিয়েই কাজ করার কথা বলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ বার সেই একই বার্তা নিয়ে কলকাতায় যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ ও কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়াল। শুক্রবার রাজারহাটে কোল ইন্ডিয়ার নতুন সদর দফতরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মমতা ও পীযূষ একই সঙ্গে হাজির থাকবেন। ওই অনুষ্ঠানের পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বৈঠক হবে বলেও কয়লা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে।
গত বছর মোদী সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে পীযূষ গয়ালই প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যিনি নবান্নে গিয়ে মমতার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এর পর কয়লা খনি নিলামের জন্য মোদী সরকারকে যখন সংসদে বিল পাশ করাতে হয়েছে, সে সময় তৃণমূল ওই বিলে সমর্থন করেছিল। কয়লা খনি নিলামের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ বিপুল পরিমাণে লাভবান হবে বলেও বরাবর যুক্তি দিয়ে এসেছেন পীযূষ। কারণ তাঁর যুক্তি, নিলামের আয় পুরোটাই রাজ্য সরকারের কোষাগারে যাবে। সেই যুক্তিকে হাতিয়ার করেই তৃণমূল কয়লা খনি নিলাম বিলে সমর্থন করেছে। এর পর খনি বিলেও তৃণমূলের সমর্থন পেয়েছে মোদী সরকার। কোল ইন্ডিয়ার খনির কাজ সম্প্রসারণের জন্য জমির প্রয়োজনেও রাজ্য সরকারের সাহায্য প্রয়োজন।
এত দিন কোল ইন্ডিয়ার সদর দফতর ছিল কোল ভবনে, কলকাতার নেতাজি সুভাষ রোডের একশো বছরের পুরনো একটি বাড়িতে। ১৯৭৫ সালে কোল ইন্ডিয়া তৈরির পর থেকেও ওই বাড়িতে সদর
দফতর তৈরি হয়। কিন্তু সেখানে জায়গায় অভাব বলে প্রায় ১৮০ কোটি টাকা খরচ করে রাজারহাট নিউটাউনে কোল ইন্ডিয়ার নতুন সদর দফতর তৈরি হয়েছে। আগামিকাল নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন মমতা-পীযূষ।
ওই অনুষ্ঠানের জন্য মাত্র এক দিনের জন্য কলকাতায় গেলেও প্রথম থেকেই মমতার সঙ্গে বৈঠকে জোর দিয়েছিলেন পীযূষ। যাওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেলিফোন করে কথাও বলেছেন তিনি। প্রয়োজনে নবান্নে গিয়ে বৈঠক করতেও তৈরি ছিলেন তিনি। কিন্তু সময় না হলে রাজারহাটের অনুষ্ঠানের পরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে চান। নরেন্দ্র মোদীর মতো পীযূষেরও মত, কেন্দ্র-রাজ্য একসঙ্গে মিলে কাজ করলেই দেশের উন্নয়ন গতি পাবে। মুখ্যমন্ত্রীও সে কথা জানেন। প্রধানমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে একা দেশ চালানো সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে তৈরি দলকেই দেশ চালাতে হবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সংসদীয় রাজনীতিতে আগামী দিনেও তৃণমূলের সাহায্য প্রয়োজন হবে। তা সে পণ্য-পরিষেবা করই হোক বা আবাসন নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিল। মমতার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলে সেই বিষয়টিই সুনিশ্চিত করতে চাইছে মোদী সরকার তথা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু পাশাপাশি রাজ্য রাজনীতিতেও কেউ কাউকে জমি ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy