পাওয়ার গ্রিড এলাকার ইটভাটা। ছবি: সামসুল হুদা।
থমকে থাকা পাওয়ার গ্রিডের কাজ দ্রুত শুরু করতে চাইছে রাজ্য সরকার। আর তাই ভাঙড়ের বেআইনি ইটভাটা ও মেছোভেড়ি বন্ধ করে দিতে উদ্যোগী হল পুলিশ। যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যায়।
পুলিশ কর্তাদের দাবি, পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীরা এখন মূলত খামারআইট এবং মাছিভাঙা গ্রামে সীমাবদ্ধ। দু’টি গ্রামে কয়েক হাজার বিঘার ভেড়ি ও অন্তত ১৫০ ভাটা রয়েছে। বেশির ভাগই বেআইনি। ওই সব বেআইনি ভাটা-ভেড়ির মালিকদের থেকে টাকা নিয়ে এক বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নকশাল নেতারা। আবার প্রয়োজনে ওই সব জায়গায় তাঁরা আত্মগোপন করছেন, অস্ত্রও মজুত করছেন। তাই ওই সব ভাটা-ভেড়ি বন্ধ হলে টাকার জোগান যেমন কমবে, তেমনই নকশাল নেতারা আস্তানা হারাবেন। আন্দোলনও দুর্বল হবে।
সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু’টি গ্রামের ভেড়ি ও ভাটা-মালিকদের বৈঠকে ডেকে আইনি কাগজ জমা দিতে বলা হয়। এক পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘নিয়মিত নকশাল নেতাদের টাকা দেওয়ার কথা ওই বৈঠকে স্বীকার করেছেন কয়েক জন ভাটা-ভেড়ি মালিক।’’ আন্দোলনকারীদের পক্ষে মির্জা হাসান টাকা নেওয়ার কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘ওই সব ভেড়ি-ভাটা থেকে গ্রামোন্নয়ন কমিটি টাকা নেয়। তা গ্রামের উন্নয়নেই খরচ করা হয়।’’ কিন্তু পুলিশ ও গ্রামবাসীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই রকম কমিটি দুই গ্রামে নেই। নকশাল নেতারাই কমিটির নাম করে টাকা তোলেন।
গত বছর জানুয়ারিতে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলন অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠার পরে তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, আন্দোলনকারীদের মদত দিচ্ছে এক শ্রেণির জমি-মাফিয়া এবং বেআইনি ভাটা-ভেড়ির মালিকেরা। আন্দোলন চালু থাকলে ওই দু’পক্ষের নাগাল পাওয়া পুলিশের পক্ষে সহজ হবে না। তারা অবাধে বেআইনি ব্যবসা করতে পারবে। তদন্তে এ-ও জানা যায়, মাসে প্রতিটি বেআইনি ভাটা থেকে ৫ হাজার ও মেছোভেড়ি থেকে প্রায় ৭ হাজার টাকা আন্দোলনকারীদের দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে অঙ্কটা কয়েক লক্ষ টাকা। যার জোরে এখনও আন্দোলন চলছে।
এক গোয়েন্দা-কর্তা মানছেন, কয়েক হাজার বিঘার মেছোভেড়িতে কেউ লুকিয়ে থাকলে, পাওয়া মুশকিল। সেখানে নকশাল নেতাদের আশ্রিত বহিরাগত দুষ্কৃতীরাও আশ্রয় নিচ্ছে। নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তী ওই দুই গ্রামের কয়েক জনের বাড়িতে ঘুরে-ফিরে থাকছেন। পুলিশ ওই গ্রামগুলির কাছাকাছি গেলে তিনি ভেড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy