Advertisement
E-Paper

সিভিক ভলান্টিয়ার নয়, ছবি তুলবে পুলিশই

কেশপুর থেকে শিক্ষা নিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছে বলা কথা যাতে শাসক দলের কানে না পৌঁছয় সে ব্যাপারে তৎপর হল তারা। জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, সোমবারই পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বিভিন্ন থানার আইসি-ওসিদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন যে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চের সময় যে ভিডিও রেকর্ড করা হবে তা বাহিনীর সঙ্গে থাকা সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকর্মীই করবেন, কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৬ ০১:৪৪
ভিডিও করছেন পুলিশকর্মী। সোমবার সবংয়ে। নিজস্ব চিত্র।

ভিডিও করছেন পুলিশকর্মী। সোমবার সবংয়ে। নিজস্ব চিত্র।

কেশপুর থেকে শিক্ষা নিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছে বলা কথা যাতে শাসক দলের কানে না পৌঁছয় সে ব্যাপারে তৎপর হল তারা।

জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, সোমবারই পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বিভিন্ন থানার আইসি-ওসিদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন যে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চের সময় যে ভিডিও রেকর্ড করা হবে তা বাহিনীর সঙ্গে থাকা সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকর্মীই করবেন, কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার নয়। অন্যথা হলে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে বলেও ওই সূত্রের দাবি। পরে পুলিশ সুপার বলেন, “রুট মার্চের সময় পুলিশই ভিডিও রেকর্ড করে। সব থানা এলাকায় তাই হবে।”

পুলিশ সুপারের বার্তা এদিন থেকেই কার্যকর হতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনের মতো সোমবারও সবং, নারায়ণগড়, কেশপুর বিভিন্ন থানা এলাকায় রুট মার্চ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাহিনীর সঙ্গে থাকা পুলিশ কর্মীদেরই এ দিন ভিডিও রেকর্ড করতে দেখা গিয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “কেশপুরের ওই অভিযোগ গুরুতর ছিল। ওখানে ঠিক কী ঘটেছে দেখা হচ্ছে। তবে পরে যাতে একই অভিযোগ না আসে তার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

সিপিএম আগেই জানিয়েছিল। এ দিন নির্বাচন কমিশনে কেশপুরের কথা জানিয়ে এসেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া। মানসবাবু বলেন, “সিভিক ভলান্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশদের নির্বাচনের কাজের সঙ্গে যুক্ত করার কথা নয়। তাও কিছু আইসি-ওসি কমিশনের নির্দেশকে মান্যতা না দিয়ে এ সব করছেন।”

ভয়ভীতি ঠেলে আম- ভোটারেরা যাতে অবাধে ভোট দিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতেই নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণার আগে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ শুরু হয়েছে। দিন কয়েক আগে কেশপুরের আমনপুরে রুট মার্চে যাওয়া কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এক বাসিন্দা বলেছিলেন, ‘এলাকার যা পরিস্থিতি তাতে নিজের ভোটটা দিতে পারলেই হল!’ পুলিশের তরফে সেই কথাবার্তা রেকর্ড করছিলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ সেই ভলান্টিয়ারের হাত ধরেই সেই ফুটেজ পৌঁছে যায় তৃণমূল নেতাদের কাছে। আর তারপরই স্থানীয় ওই বাসিন্দাকে এলাকার তৃণমূল নেতার ধমক খেতে হয়। শুনতে হয়, ‘‘বাহিনী কিন্তু চিরকাল থাকবে না। আমরাই থাকব।’’

নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণার পর তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তো বলে দিয়েছেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনী তো তিনদিনের জন্য! তারপর নিরাপত্তার ব্যবস্থা তো আমাদেরই করতে হবে!’

এ রাজ্যে ফি ভোটেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠে। গত লোকসভা নির্বাচনে সেই মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল বলেই মনে করে বিরোধী- শিবির। তাই এ বার বাহিনীকে আর একেবারে নিষ্ক্রিয় করে রাখছে না পুলিশ। কিন্তু, গলদ যে গোড়াতেই! বিরোধীদের মতে, যেখানে সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে, সেখানে পক্ষপাত থাকবেই। সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, “নির্বাচন কমিশনের উচিত, এ সব দিকে কড়া নজর রাখা। সিভিক পুলিশের চাকরি কারা পেয়েছে? বেশির ভাগই তৃণমূলের লোকজন। এখন ওদের কাজটা হচ্ছে চৌকিদারি করা! একাংশ পুলিশও তো পক্ষপাতদুষ্ট।”

এ নিয়ে সমালোচনার পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারির সময় ভিডিও রেকর্ডের কাজ পুলিশ কর্মীকে করতে হবে বলেই বার্তা দিলেন পুলিশ সুপার।

assembly election video police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy