পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে এ বার স্কুলে গড়া হল পকসো কমিটি। পাশাপাশি স্কুলের ভিতরে কী অবস্থায় রয়েছে পড়ুয়ারা, এ বার থেকে তা-ও যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ পাবেন অভিভাবকেরা।
পড়ুয়াদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে এ বার আস্থা ফেরাতে উদ্যোগী এম পি বিড়লা স্কুল কর্তৃপক্ষ। চার বছরের ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের ঘটনার অভিযোগে গত ডিসেম্বরে উত্তাল হয়েছিল এই স্কুল। ওই ঘটনার মাস দুয়েকের মধ্যেই স্কুলে নিরাপত্তা বিষয়ক একটি উপদেষ্টা কমিটি এবং পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি পকসো কমিটি গড়া হয়েছে। স্কুলে কর্মরত মহিলারা কেউ যৌন হেনস্থার মুখোমুখি হলে তা দেখার জন্যও বিশেষ একটি কমিটি
গঠিত হয়েছে।
স্কুল সূত্রে খবর, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং স্কুল পরিচালন কমিটির সদস্যদের নিয়ে গড়া নিরাপত্তা বিষয়ক ওই কমিটি তিন মাস অন্তর স্কুলের সার্বিক সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবে। প্রয়োজন বুঝে বিভিন্ন সুপারিশ করবে তারা। এ সব বিষয়ে অভিভাবকেরা কোনও পরামর্শ দিলে, তাও বিবেচনার মধ্যে আনা হবে বলে জানিয়েছে স্কুল। পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার কোনও অভিযোগ এলে পকসো কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুলিশকে জানাবে।
কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলে ১০০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সব ক’টি স্কুলবাসে জি পি এস এবং সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বাসে মহিলা আয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব ক’টি তলায় ছেলে এবং মেয়েদের শৌচাগার সম্পূর্ণ আলাদা প্রান্তে নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
স্কুল সূত্রে খবর, শৌচাগারে যাওয়ার প্যাসেজ, করিডর, খেলার মাঠ এবং বাগানও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। এম পি বিড়লা স্কুলের জেনারেল ম্যানেজার সুরিন্দরকুমার সিংহ বলেন, “স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা কী অবস্থায় পড়াশোনা করে, তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ থাকেই। তাঁদের সংশয় দূর করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তবে এম পি বিড়লা স্কুলের আন্দোলনরত অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ এখনও তাঁদের ফোরামকে মানতে চাইছেন না। তা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে সুরিন্দর বলেন, “আমরা পড়ুয়াদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দিতে চেয়েছি।” তিনি আরও জানান, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত শংসাপত্র পেতে আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ করছে শহরের অন্য স্কুল?
সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের আবার দাবি, প্রতি বছরই তাঁরা অন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে মূল্যায়ন করান। পাশাপাশি, পড়ুয়াদের যৌন নিগ্রহ এবং নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার জন্য দু’টি আলাদা কমিটিও রয়েছে। স্কুলের মুখপত্র কৃষ্ণ দামানি বলেন, “অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা হয়। পড়ুয়াদের সুরক্ষায় দরকারি সব শর্ত পূরণ করা হয়।”
জি ডি বিড়লা স্কুলের মুখপাত্র সুভাষ মোহান্তি অবশ্য এখনও এমন কোনও কমিটি গড়ার কথা বলতে পারেননি। তিনি শুধু বলেন, “সিসি ক্যামেরা-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।” মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী কর বলেন, “অনেক দিন ধরেই স্কুলে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয় দেখার জন্য কমিটি রয়েছে। সিসি ক্যামেরা এবং অন্য ব্যবস্থাপনাও আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy