Advertisement
২৫ মার্চ ২০২৩

জল্পনায় ৩৫৬, হতেও পারে, বললেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ

সন্দেশখালিতে হিংসা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে গত কালই রাজ্য সরকারকে ‘অ্যাডভাইসরি’ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই আবহে আজ কেশরীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।

দিল্লিতে ক্ষমতার সর্বোচ্চ অলিন্দে সোমবার বার বার চর্চায় আসছে সন্দেশখালি।

দিল্লিতে ক্ষমতার সর্বোচ্চ অলিন্দে সোমবার বার বার চর্চায় আসছে সন্দেশখালি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

লোকসভা ভোটের পরে রাজ্যে যে ভাবে হিংসা ছড়িয়েছে, তাতে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। আজ দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরে প্রথমে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কেশরী বলেছিলেন, ‘‘এটি (৩৫৬ ধারা জারি) আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না।’’ কিন্তু পরে একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘(৩৫৬ ধারা জারি) হতেও পারে। যখন দাবি উঠবে, তখন কেন্দ্র তা ভেবে দেখবে।’’ রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি যে কোনও রকমের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

সন্দেশখালিতে হিংসা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে গত কালই রাজ্য সরকারকে ‘অ্যাডভাইসরি’ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই আবহে আজ কেশরীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ দিন বেলা বারোটায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান কেশরী। পৌনে একটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। দুই বৈঠকেই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান রাজ্যপাল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যে হিংসার বাতাবরণ নিয়ে অমিত শাহকে অবহিত করার পাশাপাশি একাধিক হিংসার ঘটনার পিছনে শাসক দলের উস্কানি রয়েছে বলেই জানিয়েছেন রাজ্যপাল।

এ দিন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ‘‘হতেও পারে’’ বলে মন্তব্য করলেও কেশরীর দাবি, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করিনি।’’ রাজ্যপালের ‘হতেও পারে’ মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

সাক্ষাৎ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সোমবার নয়াদিল্লিতে।

Advertisement

আর তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যপালের দফতরকে ফের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে শুরু করেছে বিজেপি। বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে রাজ্যপাল বলেন, নির্বাচনোত্তর হিংসায় ১২ জন প্রাণ হারিয়েছে বলে শাহকে জানিয়েছেন তিনি। অথচ নবান্নের তথ্য অনুযায়ী, লোকসভা ভোটের পর দিনহাটা, নিমতা, সন্দেশখালি, হাবড়া ও আরামবাগে ৫ জন তৃণমূল কর্মী এবং সন্দেশখালিতে ২ জন বিজেপি কর্মী মারা গিয়েছেন। তৃণমূলের বক্তব্য, সরকারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্যপাল রিপোর্ট পাঠিয়ে থাকেন। কিন্তু এখানে সরকারি তথ্যকে অগ্রাহ্য করে বিজেপির দেওয়া সংখ্যাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের একাংশের মতে, রাজ্যপাল পদে কেশরীর মেয়াদ আর বেশি দিন নেই। এ রাজ্যে পুনর্বহাল হতে বা অন্য রাজ্যের দায়িত্ব পাওয়ার আগ্রহেই তাঁর এই ‘অতি সক্রিয়তা’।

রাজ্যে শান্তি ফেরাতে প্রয়োজনে সর্বদল বৈঠকের পক্ষেও আজ সওয়াল করেছেন রাজ্যপাল। জানিয়েছেন, দ্রুত তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। একটি সূত্রের দাবি, এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাথমিক কথাও বলেছেন তিনি। কিন্তু তৃণমূল সূত্রের মতে, রাজ্যের পরিস্থিতি এমন কিছু খারাপ নয় যে সর্বদল বৈঠক ডাকতে হবে। তার পরেও যদি রাজ্যপাল বৈঠক ডাকেন, তা হলে দলে আলোচনা করে যোগদানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ দিকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ মানেই যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে হবে এমন যুক্তি অর্থহীন বলে জানিয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.