শুরু হল ক্লাস। নিজস্ব চিত্র
স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশের পরে তাঁরা গিয়ে স্কুল খুলেছিলেন। প্রথম দিন কোনও ছাত্র আসেনি। পরদিন এল দু’জন। তার পর দিনও সেই দু’জনই। তার পরে আবার সেই শূন্য। তবু ধৈর্য হারাননি দাড়িভিট প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা। শেষ পর্যন্ত ফল পেয়েছেন তাঁরা। আতঙ্ক ও ভয় কাটিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো শুরু করেছেন অভিভাবকরা। শুক্রবার তাই সেখানে পড়ুয়া সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১-এ। গত দু’দিন ধরে মিড ডে মিলও খাওয়ানো হয়েছে।
পাশেই দাড়িভিট হাইস্কুল। ২০ সেপ্টেম্বর যে স্কুলকে ঘিরে গোলমালে প্রাণ গিয়েছে দুই তরুণ রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের। তার পর থেকে সেই স্কুল বন্ধ। একই সঙ্গে বন্ধ ছিল প্রাথমিক স্কুলটিও। শেষ পর্যন্ত সেই স্কুলের দরজা খোলানো সম্ভব হল কী ভাবে?
প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক অভিজিৎ চন্দ বলেন, ‘‘গন্ডগোলের পরদিন থেকে স্কুল পরিদর্শকের অফিসে গিয়ে হাজিরা দিচ্ছিলাম। ধর্মঘটের পরদিন থেকে স্কুলে যেতে বলল তারাই। তখন এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। প্রথমে ভয় হচ্ছিল। তবে এলাকার বাসিন্দারাই সাহস দিলেন।’’ শিক্ষকেরা বলেন, ‘‘এখন দেখছি ভয় কাটিয়ে ছাত্রছাত্রীরাও আসছে। অভিভাবকদের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছি।’’ চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী যমুনা রায়, তৃষা বারুই, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়া বিশ্বাস বলে, ‘‘মা ভয় পাচ্ছিলেন। তাই এত দিন স্কুল আসিনি।’’ অভিভাবকদেরও বক্তব্য, ‘‘আতঙ্ক কমেছে বলেই তো স্কুলে পাঠিয়েছি বাচ্চাদের!’’
এর ঠিক উল্টো ছবি পাশের দাড়িভিট হাইস্কুলে। নিহত রাজেশ সরকারের মা এ দিন শিলিগুড়িতে যান এবিভিপি-র আন্দোলনের শরিক হতে। স্কুলের মূল দরজায় কিন্তু এ দিনও দুই নিহতের মালা দেওয়া ছবি ঝুলেছে। ঝুলছিল তালাও।
দাড়িভিট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডুকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। সহকারী প্রধান শিক্ষক নরুল হুদা বলেন, ‘‘স্কুলের বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর হয়ে রয়েছে। তাই মন্তব্য করব না।’’ তবে অন্য এক শিক্ষক অনিল মণ্ডল জানান, শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কেউ সঠিক ভাবে কিছুই বলছেন না। অথচ এ দিন ওই স্কুলের পাশে দাড়িভিট বালিকা বিদ্যালয়, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র— সবই খোলা ছিল। অভিভাবকেরা বলছেন, শিক্ষকদেরই এগিয়ে আসতে হবে। তা হলেই পড়ুয়ারাও যেতে শুরু করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy