Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বিচারের ভার দলের কেন, বিতর্ক সিপিএমে

হুগলির প্রাক্তন সাংসদ রূপচাঁদবাবু তাঁর সাংসদ তহবিলের কিছু টাকা দিয়েছিলেন জেলার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। তার পরিচালন সমিতিতেও ছিলেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩১
Share: Save:

তরুণ সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য কমিটি থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। তারই পাশাপাশি অন্য আর একটি তদন্ত কমিশনকে হাতিয়ার করে প্রবীণ প্রাক্তন সাংসদ রূপচাঁদ পালের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটি। দলের এক্তিয়ারের বাইরের নানা অভিযোগে আদালতে বিচারের অপেক্ষা না করে দলীয় নেতৃত্বই কেন রায় দিয়ে ফেলছেন, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে সিপিএমে!

হুগলির প্রাক্তন সাংসদ রূপচাঁদবাবু তাঁর সাংসদ তহবিলের কিছু টাকা দিয়েছিলেন জেলার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। তার পরিচালন সমিতিতেও ছিলেন তিনি। সেই কলেজে চাকরি এবং বরখাস্ত সংক্রান্ত ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে রূপচাঁদবাবুর দিকে। বেশ কিছু দিন আগে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মদন ঘোষের নেতৃত্বে এক সদস্যের কমিশন ওই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছিল। দলীয় সূত্রের খবর, তাতে বিশেষ কিছুই পাওয়া যায়নি। কিন্তু দলের সদ্যসমাপ্ত রাজ্য কমিটির বৈঠকে আবার পুরনো বিষয় টেনে হুগলি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রূপচাঁদবাবুর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়ের এ ভাবে পুনরুজ্জীবনের পিছনে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে দলেরই একাংশ!

শাস্তি এবং তদন্তের মুখে পড়ে বর্তমান ও প্রাক্তন দুই সাংসদই প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। কিন্তু তাঁদের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, কমিশন বসানোর নামে সিপিএম এ ভাবে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ চালাচ্ছে কেন? রূপচাঁদবাবু যেমন দলের অন্দরে এবং ঘনিষ্ট মহলে বলেছেন, এই জমানায় শিক্ষা দফতরের নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে কোনও নিয়োগ বা বরখাস্ত করার ক্ষমতা কি সিপিএমের কোনও প্রাক্তন সাংসদের আছে? আর সত্যিই এমন কিছু ঘটে থাকলে অভিযুক্তদের আদালতে যেতে বলা হল না কেন? তাঁরা সবাই সিপিএমে এসে জানালেন আর দল বিচার করে ফেলল— এ কেমন কথা! প্রসঙ্গত, দল ক্ষমতায় থাকাকালীন হুগলি জেলা সিপিএমে অনিল বসু শিবিরের সঙ্গে প্রাক্তন অধ্যাপক রূপচাঁদবাবুর দ্বন্দ্বের সময় থেকেই তাঁর ভাবমূর্তি ছিল ‘সৎ নেতা’ হিসাবেই।

সংবাদমাধ্যমে খবর ফাঁস ছাড়া ব্যক্তিগত জীবনে উচ্ছৃঙ্খলতা ও প্রতারণা, সম্পত্তি সংক্রান্ত অসঙ্গতির যে সব অভিযোগ ঋতব্রতের বিরুদ্ধে উঠেছে, কোনও ক্ষেত্রেই অভিযোগকারীরা প্রশাসন বা আদালতে যাননি। দলেরই কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের মন্তব্য, ‘‘দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীদের তৃণমূল নেত্রী নিজেই কেন শংসাপত্র দিচ্ছেন, আমরা প্রশ্ন তুলি। অথচ সেই দলই যে কোনও অভিযোগ নিজেরাই বিচার করে রায় দিয়ে দিচ্ছে!’’ অভিযুক্ত নেতারা একপেশে সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন বা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে দলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE