পুনর্মূষিক: ফিরে এসেছে চেনা ছবি। বিটি রোডে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন রাজ্য সড়কের ধারে স্তূপীকৃত জঞ্জাল দেখে। সেই ধাক্কায় তড়িঘড়ি সাফাই পর্ব চলেছিল কিছু দিন। কিন্তু ফের পুনর্মূষিক ভব। জঞ্জাল সাফাই নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে পুরসভাগুলিকে সচেতন করা, কম্প্যাক্টর মেশিন ঠিক ভাবে ব্যবহারের পাঠ— সব কিছুর পরেও জঞ্জালে মুখ ঢাকছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। তা পরিষ্কার নিয়ে মাথাব্যথা নেই কোনও মহলেই।
ব্যারাকপুর থেকে কলকাতামুখী বি টি রোডে ইলেক্ট্রোস্টিল ফ্যাক্টরির সামনে জঞ্জালের স্তূপই বোঝাচ্ছে, দূষণ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। শুধু দুর্গন্ধ আর দৃশ্যদূষণই নয়, চলন্ত মোটরবাইকে আচমকা উড়ে আসা নোংরা প্লাস্টিক দুর্ঘটনাও ঘটাচ্ছে মাঝেমধ্যে। নির্বিকার পুরসভা, নির্বিকার প্রশাসন।
ছবিটা এক ব্যারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতেও। ফাঁকা রাস্তায় হাওয়ার গতি বেশি। আর জঞ্জাল ফেলার পরে রাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হাওয়ায় জ্বলন্ত পলিথিন বা হালকা বর্জ্য উড়ে আসে রাস্তায়। গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন থাকায় যদিও রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা, মোটরবাইকের ক্ষেত্রে সেটুকুও থাকে না।
দিন কয়েক আগেই এমন দুর্ঘটনায় জখম হন নৈহাটির রাজা দত্ত। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর মোটরবাইকের পেট্রোল ট্যাঙ্কের উপরে এসে পড়ে জ্বলন্ত পলিথিন। বাইক দাঁড় করানোর আগেই সেটি ফেলতে গিয়ে হাত পুড়ে যায় তাঁর। বাইক নিয়ে পড়েও যান। রাজার কথায়, ‘‘এখন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে জঞ্জাল আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এ নিয়ে বলব কাকে? কার জঞ্জাল কে ফেলছে কিছুই তো জানি না।’’
সমস্যাটা এখানেই। যে পুর বা পঞ্চায়েত এলাকায় জঞ্জাল পড়ে থাকছে, তাঁরা দাবি করছেন জঞ্জাল ফেলে গিয়েছে অন্য পুরসভা। অথচ মাসখানেক আগেই ব্যারাকপুর পুরসভায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও প্রশাসনের ডাকা বৈঠকে প্রতিটি পুরসভাকে কম্প্যাক্টর ব্যবহারের পাঠ দেওয়া হয়। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘চুপিসারে জলা ভরাটে জঞ্জাল ব্যবহারের অভিযোগও আসে।’’
নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় বা হালিশহরের পুর চেয়ারম্যান অংশুমান রায় মেনে নিচ্ছেন, ‘‘পুর এলাকায় যে পরিমাণ জঞ্জাল রোজ জমে, তা সাফ না করলে দূষণের জেরে টেকা দায় হবে। কিন্তু তার বিকল্প হাইওয়ের ধারে জঞ্জাল ফেলা নয়। দ্রুত জঞ্জাল থেকে সার বানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পরস্পরের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে সুরাহা হবে না।’’ ব্যারাকপুরের মহকুমা শাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘যে এলাকার মধ্যে জঞ্জাল পড়ে থাকে, তাদেরকেই বলেছি সাফ করতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy