E-Paper

মুক্ত সংশোধনাগারে বার্ধক্যভাতা চালুর প্রস্তাব

কারা দফতর সূত্রে খবর, এই নিয়মের গেরোয় পড়েছেন ষাটোর্ধ্ব এমন অনেক বন্দি, যাঁদের কর্মক্ষমতা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। তাঁদের বার্ধক্যভাতা দেওয়ার একটি প্রস্তাব এসেছে। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:০৯

—প্রতীকী ছবি।

মুক্ত সংশোধনাগারে স্থানান্তরের পরে তিন মাস পর্যন্ত বন্দিদের অন্ন সংস্থানের দায়িত্ব নেয় কারা দফতর। তার পরে খাবার জোগাড় করে নিতে হয় বন্দিদেরই। সকালে সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান তাঁরা। বাইরে কাজ করে যা মজুরি মেলে, তা দিয়েই খাবার কেনেন তাঁরা। এই নিয়মই চলে আসছে বছরের পর বছর।

কারা দফতর সূত্রে খবর, এই নিয়মের গেরোয় পড়েছেন ষাটোর্ধ্ব এমন অনেক বন্দি, যাঁদের কর্মক্ষমতা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। তাঁদের বার্ধক্যভাতা দেওয়ার একটি প্রস্তাব এসেছে। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

দফতরের এক আধিকারিক জানান, রাজ্যে চারটি মুক্ত সংশোধনাগার রয়েছে। মোট আবাসিকের সংখ্যা দু’শোর বেশি। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ষাটোর্ধ্ব। লালগোলা মুক্ত সংশোধনাগারে যাটোর্ধ্ব ১৭ জন বন্দি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। বাকিরা অন্য জেলার।

কারা দফতর সূত্রের খবর, গত ৩ ফেব্রুয়ারি লালগোলা মুক্ত সংশোধনাগারের সুপার মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনকে চিঠি লিখে জানান, মুক্ত সংশোধনাগারের আবাসিকদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় না। দেওয়া হয় না খাবারও। রোজ তাঁদের বাইরে বেরিয়ে গায়েগতরে খাটতে হয়। বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁদের বাইরে গিয়ে খাটার ক্ষমতাও কার্যত নেই। তাঁদের বার্ধক্যভাতা দেওয়া যায় কিনা, তা ভেবে দেখার অনুরোধ করেছেন তিনি। প্রস্তাব পাওয়ার পরেই মুর্শিদাবাদ জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক গত ২০ ফেব্রুয়ারি সেটি কারা দফতরের বিশেষ সচিবকে পাঠিয়ে দেন। দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যদি বার্ধক্যভাতা দিতে হয়, তবে তা শুধু লালগোলা মুক্ত সংশোধনাগারের আবাসিকদের দিলেই হবে না, দিতে সবে রাজ্যের আরও তিনটি মুক্ত সংশোধনাগারে থাকা যাটোর্ধ্ব বন্দিদেরও।’’

মুক্ত সংশোধনাগারে কেবলমাত্র যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের একাংশকে রাখা হয়। রোজ সকালে তাঁদের সংশোধনাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সারা দিন বাইরে থেকে নানা কাজ করে উপার্জন করেন। সন্ধ্যায় তাঁরা ফিরে আসেন সংশোধনাগারে। এক কারা আধিকারিক বলেন, ‘‘অনেকে ছোটখাটো ব্যবসাও করেন। সমাজের মূল স্রোতে ফিরে যাওযার আগে মুক্ত জীবনের স্বাদ দিতে মূলত তাঁদেরই মুক্ত সংশোধনাগারে পাঠানো হয়, যাঁদের মুক্তির মেয়াদ এগিয়ে এসেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যাট বছর বয়স হওয়ার আগে মুক্তি পান বন্দিরা।’’ কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে বসেছেন, মুক্ত সংশোধনাগারের এমন ষাটোর্ধ্ব আবাসিকদের ফের মূল সংশোধনাগারে ফিরিয়ে আনা শোভনীয় নয় বলেই মনে করছে কারা দফতর।

তবে উপায়? কারামন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জানি না। প্রস্তাব এলে আলোচনা করব। তবে বার্ধক্য ভাতা সরকার দেয়। বন্দিদের জন্য সেই ব্যবস্থা করতে হলে মন্ত্রিসভায় বিষয়টি আলোচনা করতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

correctional home West Bengal Prisoners

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy