Advertisement
০৬ মে ২০২৪

ট্রেনে জল চেয়ে বিক্ষোভ, জুটল লাঠি

এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাওয়ার কথা দেশের পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিম প্রান্তে। অথচ কামরায় জলই পাচ্ছিলেন না যাত্রীরা। বিভিন্ন স্টেশনে অভিযোগ জানিয়েও ফল না-হওয়ায় তাঁরা ফুঁসছিলেন। সেই ক্ষোভ ফেটে পড়ল হাওড়ায়। যাত্রীদের অভিযোগ, দীর্ঘ বিক্ষোভেও জল-সমস্যার সুরাহা হয়নি। উল্টে পুলিশ ডেকে লাঠিপেটা করা হয় বিক্ষোভকারীদের। পুলিশ ডাকার কথা স্বীকার করে নিলেও লাঠি চালানোর কথা মানতে চায়নি রেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৬
Share: Save:

এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাওয়ার কথা দেশের পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিম প্রান্তে। অথচ কামরায় জলই পাচ্ছিলেন না যাত্রীরা। বিভিন্ন স্টেশনে অভিযোগ জানিয়েও ফল না-হওয়ায় তাঁরা ফুঁসছিলেন। সেই ক্ষোভ ফেটে পড়ল হাওড়ায়। যাত্রীদের অভিযোগ, দীর্ঘ বিক্ষোভেও জল-সমস্যার সুরাহা হয়নি। উল্টে পুলিশ ডেকে লাঠিপেটা করা হয় বিক্ষোভকারীদের। পুলিশ ডাকার কথা স্বীকার করে নিলেও লাঠি চালানোর কথা মানতে চায়নি রেল।

ঘটনাটি রবিবার দুপুরের। আর ট্রেনটির নাম কর্মভূমি এক্সপ্রেস। শনিবার সন্ধ্যায় গুয়াহাটি থেকে ছেড়ে সাপ্তাহিক ট্রেনটি হাওড়ায় পৌঁছয় রবিবার বেলা আড়াইটে নাগাদ। যাওয়ার কথা মুম্বই। কিন্তু জল-বিক্ষোভে হাওড়াতেই থেমে থাকল সাড়ে তিন ঘণ্টা। ঠিক কী ঘটেছিল?

যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনটির প্রতিটি কামরাতেই আবর্জনা, ইঁদুর আর আরশোলা ছিল পর্যাপ্ত। ছিল না শুধু জল। ট্রেন ছাড়ার পর থেকেই দেখা যায়, জল মিলছে না কোনও কামরাতেই। আর বাতানুকূল কামরায় কাজ করছে না শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। যাত্রা শুরুর পর থেকেই সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। ওই অবস্থাতেই ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়িতে পৌঁছয়। সেখানে অভিযোগ জানানো হয় স্টেশন ম্যানেজারের কাছে। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। স্টেশন ম্যানেজার তাঁদের জানান, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে জল বা অন্য সমস্যার সুরাহা করা যাবে না। মালদহ স্টেশনে ত্রুটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তখনকার মতো ক্ষোভ সংবরণ করেন যাত্রীরা। নির্জলা অবস্থাতেই ফের যাত্রা শুরু করে দূরপাল্লার ট্রেনটি।

এক যাত্রী জানান, মালদহে পৌঁছনোর পরে ট্রেনটিকে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। কিন্তু রেলের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে যাত্রীদের অভিযোগ। বেলা আড়াইটে নাগাদ ট্রেনটি হাওড়ায় পৌঁছনোর পরে ন’নম্বর প্ল্যাটফর্মে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন যাত্রীরা। রেল পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের ঘিরে ফেলে। বিক্ষোভ বন্ধ করার জন্য পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। অশনি মাইতি নামে এক যাত্রী বলেন, “আমরা জলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলাম। রেল-কর্তৃপক্ষ জলের ব্যবস্থা করেননি। উল্টে পুলিশ দিয়ে আমাদের লাঠিপেটা করিয়েছেন।” পূর্ব রেলের এক মুখপত্র বলেন, “যাত্রীদের উপরে লাঠিচার্জ করা হয়নি। যাতে হাঙ্গামা না-হয়, সেই জন্যই পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।”

বিক্ষোভের মধ্যেই বিকেল ৪টে নাগাদ ট্রেন ফের চলতে শুরু করায় যাত্রীরা চেন টেনে সেটিকে ফের দাঁড় করিয়ে দেন। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও। রেল সূত্রের খবর, অবশেষে কামরায় জল না-থাকার কারণ খতিয়ে দেখেন রেল-কর্তৃপক্ষ। দেখা যায়, ট্যাঙ্কে জল আছে। কিন্তু মোটর খারাপ থাকায় পাইপ দিয়ে তা আসছে না। স্টেশন ম্যানেজার অঞ্জনকুমার চন্দ্র বলেন, “মোটর-বিভ্রাটেই জল আসছিল না। মোটর মেরামত করা হয়। বেশ কিছু এসি মেশিনও খারাপ। কিন্তু এখনই তা ঠিক করা সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হয়েছে।” অবশেষে সাড়ে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরে, সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ট্রেনটি মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE