Advertisement
০৭ মে ২০২৪

আজব নিয়োগ, ফের কাঠগড়ায় পিএসসি

ডব্লিউবিসিএস অফিসার বাছাই ঘিরে পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল বছরখানেক আগে। যার দায় নিয়ে কমিশনের তদানীন্তন চেয়ারম্যান নুরুল হক ইস্তফা দেন। এ বার মাঝারি ও ক্ষুদ্রশিল্প দফতরে ডেপুটি ডিরেক্টর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছে কমিশন।

অত্রি মিত্র
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৫
Share: Save:

ডব্লিউবিসিএস অফিসার বাছাই ঘিরে পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল বছরখানেক আগে। যার দায় নিয়ে কমিশনের তদানীন্তন চেয়ারম্যান নুরুল হক ইস্তফা দেন। এ বার মাঝারি ও ক্ষুদ্রশিল্প দফতরে ডেপুটি ডিরেক্টর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছে কমিশন। যদিও পিএসসি’র বর্তমান সচিব সুদীপ মিত্র তা মানতে নারাজ। ‘‘সব কিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে।’’— দাবি করেছেন তিনি।

প্রশাসনের খবর: মাঝারি-ক্ষুদ্রশিল্প দফতরে একাধিক ডেপুটি ডিরেক্টর চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল ২০১৪-র নভেম্বরে। আবেদনকারীদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পেশাদার অভিজ্ঞতার শংসাপত্র জমা দিতে বলা হয়। নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরোলে প্রতিটি আবেদন যাচাই করে বাছাই করা প্রার্থীদের ডাকা হয় লিখিত পরীক্ষায়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণেরা ইন্টারভিউয়ে ডাক পান। ইন্টারভিউ ও লিখিত পরীক্ষা— দুইয়ের ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত নিয়োগ তালিকা প্রকাশ করেছে পিএসসি।

এখানেই অনিয়মের গন্ধ পাচ্ছেন কেউ কেউ। কী রকম?

নবান্নের খবর: মাঝারি-ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের তিন কর্মী সম্প্রতি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)-এ অভিযোগ করেছেন, নিয়ম মেনে আবেদন না-করা সত্ত্বেও এক ব্যক্তিকে লিখিত পরীক্ষায় ডাকা হয়েছিল। এবং লিখিত পরীক্ষায় না উতরেও সেই ব্যক্তি চূড়ান্ত নিয়োগ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। তালিকাটি ইতিমধ্যে দফতরে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত একটি পদে যাঁকে নেওয়া হয়েছে, তাঁর ওই নির্দিষ্ট শারীরিক প্রতিবন্ধকতাই নেই বলে অভিযোগকারীদের দাবি।

স্যাট অভিযোগ গ্রহণ করেছে। এ ব্যাপারে পিএসসি’র কাছ থেকে তারা যাবতীয় কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছে। ‘অনিয়মের’ প্রতিবিধান চেয়ে স্যাটের দরবারে গিয়েছেন যাঁরা, দফতরের সেই তিন কর্মী সুদীপ চন্দ, রামকৃষ্ণ দত্ত ও দেবাশিস পাল এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁদের কৌঁসুলি শঙ্খ ঘোষ বলেছেন, ‘‘পিএসসি কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না-করে নিয়োগ তালিকা বানিয়েছে। চূড়ান্ত তালিকায় এমন অন্তত ছ’জনের নাম মজুত, প্রয়োজনীয় পেশাদার অভিজ্ঞতা যাঁদের নেই।’’

পিএসসি’র কী বক্তব্য?

কমিশনের সচিব সুদীপবাবু সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন। অন্য পদস্থ আধিকারিকেরা মুখ খোলেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা শুধু জানিয়েছেন, এতে অনিয়ম কিছু হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘ওই প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার পরে তাঁর পেশাদার অভিজ্ঞতার কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন। তা দেখে ওঁকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছিল। আর তারই ভিত্তিতে চূড়ান্ত তালিকায় নাম উঠেছে।’’ওঁর যুক্তি অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন শঙ্খবাবু। তাঁর বক্তব্য: আবেদনপত্র জমার সময়সীমা পেরিয়ে গেলে কেউ নতুন করে তথ্য জমা দিতে পারেন না। এটাই নিয়ম। অথচ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তা-ই করেছেন। উপরন্তু তিনি লিখিত পরীক্ষায় পাশও করতে পারেননি। ‘‘তবু তাঁকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা শুধু নয়, চূড়ান্ত তালিকাতেও রাখা হয়েছে! ঘোর অনিয়ম ছাড়া কী?’’— মন্তব্য করেছেন অভিযোগকারীদের কৌঁসুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

PSC Illegal recruitment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE