Advertisement
E-Paper

হেঁটে যাচ্ছেন ‘রাজা’, রাস্তায় থমকে রইল শিল্পাঞ্চল

গঙ্গাজলঘাটির রেঞ্জ অফিসার জয়নারায়ণ মণ্ডল জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ‘রাজা’কে গঙ্গাজলঘাটির জঙ্গল থেকে খেদিয়ে বড়জোড়া রেঞ্জের রাদুরবাইদ জঙ্গলে পাঠানো হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৫
বাসে ঠেলা দাঁতালের। —নিজস্ব চিত্র

বাসে ঠেলা দাঁতালের। —নিজস্ব চিত্র

দুলকি চালে পিচরাস্তা ধরে চলেছে সে। তটস্থ হয়ে সরে যাচ্ছে লোকজন। থমকে যাচ্ছে বাস, ট্রাকের চাকা। যেন রাজা নেমেছে রাজপথে! রাজা না হলেও বনকর্মীরা তাকে ‘রাজা’ নামেই ডাকে। বনকর্মীরা রাস্তা থেকে সরাতে চাইলেও টলাতে পারেনি। নিজের মর্জিতেই প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা ধরে দুলকি চালে হাঁটল একটি রেসিডেন্সিয়াল হাতি। যা দেখতে বৃহস্পতিবার গঙ্গাজলঘাটিতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে যায় ভিড়।

গঙ্গাজলঘাটি রেঞ্জ অফিসের কর্মীরা জানাচ্ছেন, বছর চল্লিশের ওই রেসিডেন্সিয়াল হাতিটি খুবই শান্ত স্বভাবের। সবসময় নিজের খেয়ালে থাকে বলে বনকর্মীরা তার নাম দিয়েছেন ‘রাজা’। শান্ত গতির দুলকি চালে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায় সে। মাঝেমধ্যে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে চাষজমিতে নেমে পড়ে ফসলও নষ্ট করে। বনকর্মীদের দাবি, ওই হাতিটির বিরুদ্ধে তার বেশি অভিযোগ বিশেষ শোনা যায় না। তবে অন্য হাতিদের সঙ্গে মেলামেশা বিশেষ নেই। অন্যদের থেকে দূরের জঙ্গলেই থাকে সে।

গঙ্গাজলঘাটির রেঞ্জ অফিসার জয়নারায়ণ মণ্ডল জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ‘রাজা’কে গঙ্গাজলঘাটির জঙ্গল থেকে খেদিয়ে বড়জোড়া রেঞ্জের রাদুরবাইদ জঙ্গলে পাঠানো হয়েছিল। ওই জঙ্গলে ঢোকার পরে অবশ্য রাজার কোনও হদিশ বনকর্মীরা আর পাননি। বৃহস্পতিবার সকাল হতেই ফের গঙ্গাজলঘাটির হাঁসপাহাড়ির জঙ্গলে ফিরে আসে সেই হাতি। তবে, কোনও জঙ্গল-পথ ধরে নয়, সরাসরি রাজপথ ধরে। জয়নারায়ণবাবু বলেন, “বড়জোড়ার জঙ্গলে এখন হাতির দল অবস্থান করছে। হয়ত সে কারণেই ‘রাজা’ সেখানে থাকতে চায়নি।”

বন দফতর সূত্রে খবর, ভোর প্রায় পাঁচটা নাগাদ রাদুরবাইদ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে বড়জোড়া-দুর্লভপুর রাস্তা শিল্প করিডোর ধরে গঙ্গাজলঘাটির খাটিয়ালা, মাছবাঁধা, লাগাপাড়া পার করে বাঁকুড়া রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে হাঁসপাহাড়ির জঙ্গলে ঢুকে পড়ে রাজা। সকালে হাঁটতে বেরিয়ে হঠাৎই গজরাজের সম্মুখীন হন লাগাপাড়ার বাসিন্দা তপন ঢাং, অমিয় খাঁ, প্রশান্ত মণ্ডলেরা। তাঁরা বলেন, “হাতিটি অদ্ভুত রকমের শান্ত। তার পিছনে কাতারে কাতারে লোক হইহই করছিল, অথচ সেদিকে কোনও ভ্রুক্ষেপ ছিল না। মাঝে একবার এমটিপিএস কলোনির গেটের কাছে উৎসাহী লোকজন খুব কাছাকাছি চলে যাওয়ায় হুঙ্কার দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে পড়েছিল। কয়েকটি গাড়ির পিছনে শুঁড়ও বুলিয়ে নেয়।”

এ দিন রাজার পিছু নেওয়া মাছবাঁধা গ্রামের বাসিন্দা মনসারাম কুণ্ডু বলেন, “মঙ্গলবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে উঠোনে হাত ধুতে বেরিয়েছিলাম। সামনে দেখি বিশাল হাতিটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। কপাল ভাল, হাতিটি কী মনে করে সরে যায়। মনে হয়, ওটা রাজাই ছিল। তাই ক্ষতি করেনি।’’

Elephant Gangajalghati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy