Advertisement
E-Paper

পথ দুর্গম হলেও থাকুক সাফসুতরো

রঘুনাথপুর থানার বেড়ো গ্রামের পাহাড়ে গত তিন দিন ধরে ঘুরে ঘুরে তাঁরা ১৫ বস্তা আর্বজনা সংগ্রহ করেন। সেই বস্তাগুলি পর্বত অভিযাত্রী সঙ্ঘ জমা দিয়েছে বেড়ো পঞ্চায়েতে।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৬
পথে-পথে: বস্তা হাতে পথে নেমেছেন পর্বতারোহী সংস্থার সদস্যেরা। ছবি: সঙ্গীত নাগ

পথে-পথে: বস্তা হাতে পথে নেমেছেন পর্বতারোহী সংস্থার সদস্যেরা। ছবি: সঙ্গীত নাগ

পাহাড়ে চড়ার সঙ্গেই পাহাড় পরিচ্ছন্ন রাখার পাঠ দিচ্ছে কলকাতার একটি পর্বতারোহী সংস্থা।

রঘুনাথপুর থানার বেড়ো গ্রামের পাহাড়ে গত তিন দিন ধরে ঘুরে ঘুরে তাঁরা ১৫ বস্তা আর্বজনা সংগ্রহ করেন। সেই বস্তাগুলি পর্বত অভিযাত্রী সঙ্ঘ জমা দিয়েছে বেড়ো পঞ্চায়েতে। সংস্থাটির সম্পাদক শ্যামল সরকার জানান, তাঁদের কাছে এই বিশাল পরিমাণ আর্বজনা নষ্ট করার পরিকাঠামো নেই। তাই বস্তাগুলি পঞ্চায়েতের কাছে জমা দিয়েছেন তাঁরা। সেই আর্বজনা আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পঞ্চায়েত।

গত বছরই শিক্ষার্থীদের পাহাড়ে চড়ার প্রশিক্ষণ দিতে বেড়ো গ্রামের পাশে এই পাহাড়ে এসেছিল কলকাতার পর্বত অভিযাত্রী সঙ্ঘ। সংস্থাটির সম্পাদক শ্যামল সরকার ও অন্যতম কর্মকর্তা গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘গতবার বেড়োতে এসে পাহাড় জুড়ে আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে দেখেছিলাম। তাই ফেরার সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, পরের বার এখানে এসে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার কাজটা হাতে-কলমে শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে।’’

পরিকল্পনা মাফিক সাফাইয়ের সরঞ্জাম নিয়েই এ বার তাঁরা বেড়োতে আসেন। ২ জানুয়ারি থেকে শিবির শুরু করেছেন গ্রামের পুরনো বটতলা এলাকার পাশের পাহাড়ে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, গতবার যে পরিমাণ আবর্জনা তাঁরা দেখেছিলেন, এ বার অবশ্য তার থেকে কিছুটা কমই তাঁদের নজরে এসেছে।

ঘটনা হল, বেড়ো গ্রামের এই পাহাড়ে কলকাতা-সহ আসানসোলের অনেক সংস্থাই পাহাড়ে চড়ার প্রশিক্ষণের শিবির করে। পাশাপাশি শীত পড়তেই পাহাড়ে পিকনিক করতে দলে দলে লোকজন ভিড় জমান। তাঁদের ফেলে যাওয়া আর্বজনা পরিবেশ দূষণ করে পাহাড়ের।

সংস্থাটির সম্পাদক জানান, শিবির শুরুর সময়েই পাহাড়ের প্রশিক্ষণ শিবিরে কী করা অনুচিত, সেই বিষয়ে পাঠ দেওয়ার কথা প্রশিক্ষণ দেওয়া সংস্থাগুলির। তাতে উল্লেখ করা হয়, পাহাড়ে চড়ার সময়ে শিক্ষার্থীরা কমলালেবুর খোসা, আপেলের টুকরো, লজেন্সের মোড়ক ইত্যাদি কোনও ভাবেই পাহাড়ে ফেলা যাবে না। সব কিছু আনতে হবে শিবিরে। সেখানে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। একই ভাবে শিবিরের রান্নাঘরে একাধিক ডাস্টবিন রাখতে হবে। আনাজের খোসা ও প্লাস্টিক ফেলতে হবে সেখানে।

শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘পাহাড়ের উপর ও নীচের পরিবেশ দেখে আমাদের মনে হয়েছে আগে যে সব সংস্থাগুলি শিবির করেছে তাদের অনেকেই পাহাড় পরিচ্ছন্নতাকে গুরুত্ব দেননি। পিকনিক করতে আসা লোকজনও আবর্জনা ছড়িয়ে গেছেন। না হলে আমাদের ১৫ বস্তা আর্বজনা সাফ করতে হত না।”

তাই তাঁরা শিক্ষার্থীদের এলাকার পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়টি হাতে-কলমে গুরুত্ব দিয়ে চার দিন ধরে শিখিয়েছেন। সচেতনতামূলক বার্তা দিতে শিবিরের আশপাশে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার কথা লেখা ব্যানারও টাঙিয়েছেন তাঁরা। পাহাড় ছাড়াও পাশাপাশি গ্রামের একাংশেও শিক্ষার্থীদের নিয়ে সাফাই চালান তাঁরা।

তাঁদের কাজের প্রশংসাই করছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও (রঘুনাথপুর ১) অনির্বাণ মণ্ডল বলেন, ‘‘ইতিবাচক কাজ করেছে সংস্থাটি। এ বার থেকে আমরা পাহাড়ে চড়ার শিবির করার অনুমতি দেওয়ার আগে সংস্থাগুলির কাছ থেকে তাঁরা যে পরিবেশ দূষণ করবে না, এই মর্মে মুচলেকা নিয়ে নেব। তা না মানা হলে সংস্থাগুলিকে প্রয়োজনে পঞ্চায়েত বা পুরসভা জরিমানা করবে।”

Raghunathpur Environment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy