Advertisement
E-Paper

পকেটের আধার কার্ড বাড়ি ফিরিয়ে দিল প্রৌঢ়কে

সত্যনারায়ণ জানান, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন অশোক। এখন নিজের ব্যবসা রয়েছে। তাঁরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কী করে পৌঁছলেন পুরুলিয়ায়?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০০:১৫
দেখা: স্ত্রীর সঙ্গে অশোক কৃষ্ণমূর্তি। নিজস্ব চিত্র

দেখা: স্ত্রীর সঙ্গে অশোক কৃষ্ণমূর্তি। নিজস্ব চিত্র

ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর প্রৌঢ়। এসে পড়েছিলেন পুরুলিয়ায়। পকেটে থাকা পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে অশোক কৃষ্ণমূর্তি নামে তামিলনাড়ুর করুর জেলা সদরের ওই প্রৌঢ়কে ফেরানো হল বাড়িতে।

বুধবার রাতে উড়ানে কলকাতা হয়ে অশোক স্ত্রী শান্তি কৃষ্ণমূর্তি ও শ্যালক সত্যনারায়ণ পুরুলিয়ায় পৌঁছন। শান্তি বলেন, ‘‘ছেলেকে স্কুলে পৌঁছতে গিয়েছিলেন। তার পরে আর বাড়ি ফেরেননি। দিন ধরে ছয়েক নিখোঁজ। আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেছি। পুলিশকেও জানিয়েছিলাম। প্রচণ্ড মানসিক উদ্বেগের মধ্যে ছিলাম এই ক’দিন।’’

সত্যনারায়ণ জানান, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন অশোক। এখন নিজের ব্যবসা রয়েছে। তাঁরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কী করে পৌঁছলেন পুরুলিয়ায়?

পরিস্কার করে কিছু বলতে পারেননি ওই প্রৌঢ়।

পরিজনদের অনুমান, ছেলেকে পৌঁছে দিয়ে কোনও ভাবে ভুল ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন। পুরুলিয়ার যে সংস্থা তাঁকে বাড়ি ফেরানোর বন্দোবস্ত করেছে, তার মুখপাত্র দীনেশ জালান বলেন, ‘‘আমরা যখন ওঁকে উদ্ধার করে আনি, তখন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন। ট্রেনে কেউ মাদক জাতীয় কিছু খাইয়ে দিয়ে থাকতে পারে। তবে নিশ্চিত ভাবে সেটা বলা যাচ্ছে না। উনি নিজে কিছু মনে করতে পারেননি।’’

সোমবার সকালের ব্যস্ত পুরুলিয়া-রাঁচি রোডে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক প্রৌঢ়কে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুরোপুরি অচৈতন্য নন। তবে চোখে-মুখে ঝিমধরা
একটা ভাব।

এ দিকে, পুরুলিয়া শহরের গাড়িখানা এলাকায় ওই সংস্থাটি চালু হয়েছে। রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষজনকে তাঁরা নিয়ে গিয়ে রাখেন। জামাকাপড়, খাবারদাবার আর দরকারে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হয়। সংস্থার মুখপাত্র দীনেশ জালান জানান, পুলিশের থেকেই খবর পেয়ে তাঁরা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

প্রথমে নাম ঠিকানা কিছুই বলতে পারছিলেন না অশোক। হাতের ইশারায় বুঝিয়েছিলেন, খিদে পেয়েছে। পরণের ময়লা কাপড় বদলে দিয়ে ঘুমোতে দেওয়া হয় তাঁকে। বিকেলে ঘুম ভাঙার পরেও ঘোর কাটেনি। তবে ততক্ষণে ময়লা পোশাকের পকেটে মিলেছে একটি আধার কার্ড। তাতে তামিলনাড়ুর ঠিকানা।

দীনেশ বলেন, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সংস্থার কলকাতার দফতরে আধার কার্ডের নম্বরটি জানাই। জানানো হয় রাজস্থানের সদর দফতরেও।’’

খবর পেয়ে তামিলনাড়ুর করুর জেলা সদর থেকে ওই প্রৌঢ়ের বাড়ির লোকজন যোগাযোগ করেন সংস্থার সঙ্গে। জানা যায়, তাঁর নাম অশোক কৃষ্ণমূর্তি। ফোনে বাড়ির লোকের সঙ্গে তাঁর কথাও বলিয়ে দেওয়া হয়।

বুধবার পরিচয়ের প্রমাণপত্র, ছবি ইত্যাদি নিয়ে এসেছিলেন অশোকবাবুর স্ত্রী ও শ্যালক। পুলিশের অনুমতি নিয়ে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে প্রৌঢ়কে।

সংস্থার সদস্য সত্যদাস কুণ্ডু বলেন, ‘‘উনি যে বাড়ি ফিরতে পারলেন, এটাই আমাদের মস্ত প্রাপ্তি।’’

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া থেকে রওনা হওয়ার আগে তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গিয়েছেন অশোক এবং তাঁর পরিজনেরাও।

Man Aadhaar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy