হাতেনাতে। বাঁকুড়া মেডিক্যাল চত্বরে মহকুমাশাসক। —নিজস্ব চিত্র।
তামাকজাত নেশাসামগ্রী বিক্রি বন্ধের জন্য দোকানে ঝোলানো প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা। অথচ সেই দোকান থেকেই প্রকাশ্যে দেদার বিক্রি হচ্ছে বিড়ি, সিগারেট, গুটখা! প্রকাশ্যে তামাকজাত নেশাসামগ্রী বিক্রি ও সেবন বন্ধ করতে অভিযানে নেমে বাঁকুড়া মেডিক্যালের সামনে একটি গুমটিতে এমনটাই দেখলেন খোদ মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর)।
বৃহস্পতিবার থেকেই প্রশাসন জেলার সমস্ত সরকারি দফতর, হাসপাতাল ও স্কুল কলেজ চত্বর থেকে একশো মিটার দূর পর্যন্ত এলাকায় বিড়ি, সিগারেট, গুটখা, খৈনি-র মতো তামাকজাত মাদক দ্রব্য বিক্রি ও সেবন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এই নিয়ম কতটা মানা হচ্ছে তা সরেজমিন দেখতে শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী ও পুলিশকে নিয়ে অভিযানে নেমেছিলেন মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা। এদিন জেলা প্রশাসনিক ভবন ও বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে যান তিনি। দেখা যায়, বেশ কিছু ব্যবসায়ী প্রশাসনের নির্দেশ মানলেও যাঁরা মানছেন না তাঁদের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। এ দিনের অভিযানে প্রশাসনিক ভবনের সামনের একটি দোকানে লুকিয়ে রাখা তামাকজাত নেশাসামগ্রীর সন্ধান পান মহকুমাশাসক। ওই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়। বাঁকুড়া মেডিক্যালের সামনে মহকুমাশাসকের গাড়ি দাঁড়াতেই ভিড় জমে যায়। ওই এলাকার দু’টি গুমটিতে প্রকাশ্যেই তামাকজাত নেশাসামগ্রী বিক্রি হচ্ছিল। দু’টি গুমটির একটিতে দু’দিন আগেই স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা তামাকজাত নেশার জিনিস বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশিকা ঝুলিয়ে দিয়ে এসেছিলেন। সেখান থেকেই এ দিন উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণ বিড়ি, সিগারেট, গুটখা ও খৈনির প্যাকেট। ওই দুই ব্যবসায়ীরও জরিমানা হয়। তবে বাঁকুড়া মেডিক্যালের সামনেই বেশ কিছু গুমটিতে তল্লাশি করে তামাকজাত জিনিস মেলেনি। ওই এলাকার ব্যবসায়ী অসিত ভকত, রমেন ভকতরা বলেন, “প্রশাসন নির্দেশিকা জারি করার পর থেকেই আমরা তামাকজাত জিনিস বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। আইন ভেঙে ব্যবসা করার পক্ষে আমরা নই।”
দোকানে তল্লাশি চালানোর পরে মহকুমা শাসক হাসপাতাল চত্বরে ঢোকেন। হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগের সামনে এক ব্যক্তিকে খৈনি খেতে দেখে হাতেনাতে ধরেন তিনি। হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগের সামনে বসে এক ব্যক্তিকে বিড়ি ফুঁকতে দেখে পুলিশ কর্মীরা তাঁর দিকে যান। তৎক্ষণাৎ হাতের মধ্যে বিড়ি লুকিয়েও পার পাননি তিনি। মহকুমাশাসক গিয়ে তাঁকে জরিমানা করেন। নিয়ম ভেঙে নিষিদ্ধ নেশার জিনিস বিক্রি ও সেবন করার জন্য এ দিন মোট পাঁচ জনের জরিমানা হয়। মহকুমাশাসক বলেন, “সব জেনেও কিছু ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ নিয়ম ভাঙছেন। এ দিন শুধু জরিমানা করা হয়েছে। এর পরে আইন ভাঙলে আরও কড়া শাস্তি হবে।”
বৃহস্পতিবার থেকে জেলার বিশেষ কিছু জায়গায় নেশার জিনিস বিক্রি ও সেবনে নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও প্রথম দিনে প্রশাসনকে শহরে অভিযান চালাতে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। মহকুমাশাসক এ দিন অবশ্য বলেন, “এই অভিযান নিয়মিত চলবে। সরকারি আধিকারিক ছাড়া পুলিশ কর্মীরাও এলাকার উপর নজর রাখবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy