তড়িঘড়ি শুরু হল বাঁকুড়া মর্গে জমে থাকা বেওয়ারিশ লাশ সৎকারের প্রক্রিয়া। সোমবারই মর্গে পড়ে থাকা বেশ কিছু দেহ পুরসভা বার করে নিয়ে গিয়েছে। বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “রবিবার রাতেই ইমেল করে পুরসভাকে জেলা পুলিশ ও হাসপাতালের তরফে মর্গের দেহ সৎকারের আবেদন জানানো হয়। তার ভিত্তিতেই দ্রুত পদক্ষেপ করেছি আমরা।”
জেলা পুলিশ ও বাঁকুড়া মেডিক্যাল সূত্রের খবর, মর্গে সাড়ে তিনশোরও বেশি দেহ জমা হয়েছিল। যার মধ্যে হাসপাতালের তরফে প্রায় ৩১২টি দেহ ছিল। বেশিরভাগই সদ্যোজাত শিশুর। জেলা পুলিশের তরফে প্রায় ৫৯টি দেহ ছিল বলে সূত্রের দাবি। এ দিন সকাল থেকে দেহগুলি তুলে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়। বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, “হাসপাতালের তরফে মর্গে ক’টি দেহ রয়েছে, রবিবার রাতের মধ্যেই সেটা জেনে পুরসভাকে ইমেল করেছিলাম।’’ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানান, পুলিশের তরফেও পুরসভাকে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল।’’
মহাপ্রসাদবাবু বলেন, “মর্গের দেহ সৎকার করে দেওয়ার পরেই জায়গাটি দুষণমুক্ত করতে সাফাই কাজ হবে।” বাঁকুড়ার বিধায়ক শম্পা দরিপা বলেন, “সব দফতরের মধ্যে সমন্বয় বজায় থাকলে এই কাজ আরও আগেই হয়ে যেত। নিয়মমাফিক যাতে মর্গে দেহ সৎকার ও সাফাই হয় তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।”
গত মার্চে বাঁকুড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে উঠেছিল মর্গে প্রায় হাজার দেড়েক বেওয়ারিশ লাশ জমে থাকার কথা। তিনি বাঁকুড়া পুরসভাকে মর্গ নিয়মিত পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দিয়ে যান। দ্রুত নতুন মর্গ গড়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তখনই। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে এক মাসের মধ্যেই বাঁকুড়া পুরসভা মর্গের দেহগুলি সৎকারের ব্যবস্থা করেছিল। তবে তার পরে আর সেই কাজ হয়নি। ফলে আবার লাশ জমে উঠেছিল।
নতুন মর্গ গড়ার বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) এখনও রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে জমা করা যায়নি। সেই কথা প্রকাশ্যে আসতেও নড়েচ়ড়ে বসেছে বিভিন্ন মহল। তবে কবে কাজ মিটবে, এখনই জানা যাচ্ছে না। বাঁকুড়া জেলা পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার উৎপল চৌধুরী বলেন, “নতুন মর্গ গড়ার ডিপিআর তৈরি হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই জেলাশাসকের দফতরে আমরা সেটা জমা দেব।” বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “নতুন মর্গ গড়ার কাজ দ্রুত শুরু করতে আমরা তৎপর। মর্গের দেহ রুটিন মাফিক সৎকার করে ফেলার জন্য জেলা পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।”