প্রণাম। জুলাইয়ে প্রতীচীতে এসেছিলেন অমর্ত্য সেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করে শ্রদ্ধা নিবেদন বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের। — ফাইল চিত্র।
কখনও তাঁকে বলা হয়েছে ‘জমি হড়পকারী’, কখনও বা তাঁকে শুনতে হয়েছে তিনি ‘পরিযায়ী’। কখনও তাঁর উদ্দেশে তোপ দাগা হয়েছে, ‘দোষী’ ও ‘অপরাধী’ বলে। কখনও বিবৃতি কখনও বার্তালাপ প্রকাশ করে আক্রমণ করা হয়েছে তাঁকে।
প্রতীচী বাড়ির জমি-বিতর্ক নিয়ে যে-ভাবে অমর্ত্য সেনকে লাগাতার নিশানা বানিয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, তা কার্যত বেনজির বলেই মনে করেন বিশ্বভারতীর শিক্ষক-কর্মী-পড়ুয়া থেকে আশ্রমিকদের বড় অংশ। উপাচার্যের শব্দ-চয়নের নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। অমর্ত্যের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছেন বহু গুণীজন। এই অবস্থায় প্রতীচী বাড়ির ‘বিতর্কিত’ ১৩ ডেসিমাল জমি থেকে অমর্ত্যকে সরে যাওয়ার যে নোটিস দিয়েছিল বিশ্বভারতী, মঙ্গলবার সেই নোটিসের উপরে বীরভূম জেলা আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ায় অত্যন্ত ‘খুশি’ অমর্ত্যের হয়ে মুখ খোলা বিশিষ্টজনেরা। অনেকের দাবি, বিশ্বভারতী ‘যোগ্য জবাব’ আদালতেই পেয়ে গেল।
এই রায়কে ‘নৈতিক জয়’ হিসাবেই দাবি করে একযোগে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী,শিক্ষক, পড়ুয়া থেকে শুরু করে আশ্রমিকদের একাংশ। তাঁদেরই অন্যতম, বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এতে আমরা অত্যন্ত খুশি। এক জন নোবেলজয়ীর যে-ভাবে মর্যাদাহানি করা হয়েছে, তাতে আমাদের সকলেরই মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আদালতের এই রায়কে আজ আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।”
প্রবীণ আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “আমরা অমর্ত্য সেনের প্রতিবেশী। উনি উত্তরাধিকার সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে শান্তিনিকেতনে বসবাস করে আসছেন। আমাদের জ্ঞানত, ওই জমির কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। সুতরাং আদালত আজ যা রায় দিয়েছে তাতে আমরা খুশি।” আর এক আশ্রমিক তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনারের প্রতিক্রিয়া, “আদালতের এ দিনের রায় যথাযথ বলে আমরা মনে করি।”
দীর্ঘদিন প্রতীচী বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন গীতিকণ্ঠ মজুমদার। অমর্ত্যকে কাছ থেকে দেখেছেন। এ দিন আদালতের রায় শোনার পরে বললেন, “আমরা অত্যন্ত খুশি। আমাদের নৈতিক জয় হল। বিশ্বভারতী বারবার দাবি করে এসেছে যে ১৩ ডেসিমাল জায়গা অমর্ত্য সেন দখল করে আছেন। আজ আদালতে তা ভুল প্রমাণিত হল বলে আমরা মনে করছি।’’ রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ বলছেন, ‘‘এটা রাজনীতির বিষয় নয়। কিন্তু, বিশ্বভারতীর কর্মকর্তারা অমর্ত্য সেনকে নিয়েও রাজনীতি করার চেষ্টা করছিলেন। আদালত এই রায় দিয়ে তা নস্যাৎ করে দিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy