Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Raghunathpur

Raghunathpur: একাদশে বিজ্ঞানে ভর্তি বন্ধ রঘুনাথপুরের স্কুলে

অভিভাবকদের দাবি, রসায়ন বিভাগে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া অবধি পার্শ্ব শিক্ষক বা অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে ভর্তি শুরু করুক স্কুল কর্তৃপক্ষ।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২২ ০৭:৫৪
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুলের রসায়ন বিভাগে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। তাই ওই বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ভর্তি বন্ধ করল রঘুনাথপুরের শতাব্দী প্রাচীন স্কুল জিডি ল্যাং ইনস্টিটিউট। ঐতিহ্যবাহী স্কুলে এমন ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন শহরের অনেকেই। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছে শাসকদল।

এ বিষয়ে তাঁরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছেন বলে আশ্বাস জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডুর। রঘুনাথপুর শহর তৃণমূল সভাপতি বিষ্ণুচরণ মেহেতারও দাবি, ‘‘এই ঘটনা মানা যায় না। জেলা শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি।’’ জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র ভর্তির ব্যবস্থা করার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে জানানো হয়েছে।’’

এই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির জন্য প্রতি বছর বহু ফর্ম জমা পড়ে। প্রতি বছরই উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে এই স্কুল জেলায় অন্যতম ভাল ফলও করে। তাই এই স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পড়ুয়া ও অভিভাবক মহলে। কিন্তু স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দিলীপকুমার মণ্ডলের দাবি, উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা সংসদের নিয়মঅনুযায়ী, বিজ্ঞান বিভাগে প্রতি বিষয়ে শিক্ষক থাকতেই হবে। নিয়ম অগ্রাহ্য করে ভর্তি নিলে, পড়ুয়াদের ‘রেজিস্ট্রেশন’ বাতিল করতে পারে সংসদ। কিন্তু স্কুলে রসায়ন বিভাগে শিক্ষক না থাকায়, বাধ্য হয়ে ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এপ্রিলে উচ্চ মাধ্যমিকের রসায়ন বিভাগের একমাত্র শিক্ষক ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালের মাধ্যমে বদলির আবেদন করে বাঁকুড়ার একটি স্কুলে চলে গিয়েছেন। নতুন করে রসায়ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। তাই আপাতত বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র ভর্তি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।’’

দিলীপবাবুর দাবি, কী ভাবে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র ভর্তি করা সম্ভব, তা জানতে তাঁরা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, শিক্ষা দফতর ও জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরে চিঠি দিয়েছেন। সেখান থেকে কোনও নির্দেশ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

প্রতি বছর রঘুনাথপুর শহর ও আশপাশের গ্রামের অনেক পড়ুয়া এই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। রঘুনাথপুরের বাসিন্দা রাজকুমার মাজির মেয়ে বাঁকুড়ার একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিকে ভাল ফল করেছে। রাজকুমারের বক্তব্য, ‘‘জিডি ল্যাং ইনস্টিস্টিউটের বিজ্ঞানের পরীক্ষাগার উন্নত মানের। পড়াশোনার মানও ভাল হওয়ায় এখানে মেয়েকে ভর্তি করাব ভেবেছিলাম। কিন্তু ভর্তি বন্ধ শুনে হতাশ।’’ এই স্কুল থেকেই মাধ্যমিক উত্তীর্ণ অর্ণব বিদ বলে, ‘‘স্কুলেই বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার ইচ্ছে ছিল। ভর্তি হতে গিয়ে শুনছি, এ বার বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি বন্ধ আছে!’’ তার বাবা বীরবল বিদ বলেন, ‘‘ছেলেকে বাইরে ভাল স্কুলে পড়ানোর সামর্থ্য নেই। এখানেই বিজ্ঞান নিয়ে পড়াতে চাই।’’

অভিভাবকদের একাংশের দাবি, রসায়ন বিভাগে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া অবধি পার্শ্ব শিক্ষক বা অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে ভর্তি শুরু করুক স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে এ ক্ষেত্রেও নিয়োগে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরিচালন সমিতির সভাপতি তারাশঙ্কর দেওঘরিয়া বলেন, ‘‘বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি বন্ধ হোক, কেউই চান না। দ্রুত পরিচালন সমিতির বৈঠক ডেকে কী ভাবে ভর্তি শুরু করা যায়, আলোচনা করব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Raghunathpur school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE