Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মনোনয়ন ‘বাঁচিয়ে’ ভোট-যুদ্ধে ময়ূরেশ্বর

নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকেই বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া রুখতে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৭টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট ৪১টি এবং বিজেপি প্রার্থীরা ৪৩টি আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন।

অর্ঘ্য ঘোষ
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৮ ১২:৪৩
Share: Save:

প্রতিটি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের মরিয়া চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে। উঠেছিল হুমকি, বাড়িতে ভাঙচুরের নালিশও।

কিন্তু শেষরক্ষা হল না।

ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ভোট হচ্ছে তিনটি পঞ্চায়েতে। তার মধ্যে ১ পঞ্চায়েত দলের ব্লক সভাপতির এলাকা।

নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকেই বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া রুখতে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৭টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট ৪১টি এবং বিজেপি প্রার্থীরা ৪৩টি আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট ১২ এবং বিজেপি ৯টি আসনে প্রার্থী দেয়।

কিন্তু এ বার বিরোধী ওই প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ তৈরির নালিশ করা হয়েছে। আঙুল শাসক দলের দিকেই। বিরোধী শিবির সূত্রে খবর, মনোনয়ন যাতে প্রত্যাহার না করতে হয় সে জন্য অনেক প্রার্থী আত্মগোপন করেছিলেন। তার জেরেই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়নি।

তিনটি পঞ্চায়েত হল— কুণ্ডলা, ময়ূরেশ্বর এবং উলকুণ্ডা। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ময়ূরেশ্বরের গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে ১২টিতে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। সিপিএম প্রার্থী ৪ জন। কুণ্ডলা পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে বিজেপির প্রার্থী ৪ জন, সিপিএমেরও ৪। উলকুণ্ডা পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের মধ্যে ৬টিতে রয়েছে বিজেপি প্রার্থী। পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের মধ্যে একমাত্র ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েত এলাকার তিনটি আসনে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী রয়েছে বিজেপির।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ময়ূরেশ্বর ও কুণ্ডলা পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপির ভাল সংগঠন রয়েছে। ময়ূরেশ্বর বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত। দু’টি পঞ্চায়েত এখনও বিজেপির দখলে। বাম জমানাতেও সিপিএমকে রুখে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছিলেন দুধকুমার মণ্ডল। এ বারও তিনি নিজের গ্রাম ব্রাহ্মণবহড়ায় প্রার্থী হয়েছেন। প্রচারও শুরু করেছেন।

ওই দু’টি পঞ্চায়েতও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। শুধু ওই দু’টি পঞ্চায়েতই নয়, উলকুণ্ডা জিততেও সক্রিয় শাসক দল। ওই পঞ্চায়েতের ১১টি এবং পঞ্চায়েত সমিতির তিনটি আসন ২০১৩ সালের নির্বাচনে শাসক দলের প্রার্থীরা দখল করেন। ওই পঞ্চায়েত এলাকারই বাসিন্দা দলের ব্লক সভাপতি নারায়ণপ্রসাদ চন্দ্র। তিনি অবশ্য দাসপলশা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু ওই পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে না।

ময়ূরেশ্বরে বিজেপির নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত উৎপল রুজ ও সিপিএমের ময়ূরেশ্বর ২ ব্লক আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক নীরদবরণ ঘোষ অভিযোগ করেন— শাসক দল প্রতিটি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চেষ্টা চালিয়েছিল। বিরোধী প্রার্থীদের উপর চাপ তৈরি করা হয়।

নারায়ণপ্রসাদবাবু ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কাউকে কোনও ভাবেই চাপ দেওয়া হয়নি। হয়তো হার নিশ্চিত জেনেই বিরোধীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। এখন মুখ বাঁচাতে উল্টো কথা বলছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election 2018 TMC Nomination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE