Advertisement
E-Paper

নিরাপত্তার অন্য ছবি পুরুলিয়ায়

সোমবার, ভোটের দিন  বাঘমুণ্ডি ব্লকের মাঠা বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের বুথে এক জন বন্দুকধারী ও একজন লাঠিধারী সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৮ ০৩:৩১
বাঁকুড়ার চাকা গ্রামের বুথ।

বাঁকুড়ার চাকা গ্রামের বুথ।

মাঝে একটা দিন। নিরাপত্তার দুই ছবি দেখল পুরুলিয়া। ভোটের দিন এক জন সশস্ত্র পুলিশ যেখানে ছিল ভরসা, পুনর্নির্বাচনে সেখানে চোখে পড়েছে বুথের বাইরে কড়া পুলিশি ঘেরাটোপ।

সোমবার, ভোটের দিন বাঘমুণ্ডি ব্লকের মাঠা বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের বুথে এক জন বন্দুকধারী ও একজন লাঠিধারী সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে। অভিযোগ উঠেছিল, ছাপ্পা ও তারপরে ব্যালট ছিনতাই করে পুড়িয়ে দেওয়ার। বুধবার পুনর্নির্বাচনে বুথ ঘিরে ছিল ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়। বুথের ছাদে নিরাপত্তারক্ষী। কারও কাঁধে একে৪৭, কারও ইনসাস। ভোটার ছাড়া সাধারণ মানুষ, এমনকী সাংবাদিকদেরও বুথের ছায়া মাড়াতে দেওয়া হয়নি। এক ভোটার বললেন, ‘‘সে দিন গন্ডগোলের জন্য ভোট দিতে পারিনি। আজ ভোট দেব।’’

বলরামপুর থেকে মাঠা স্কুলের পথে একাধিক বার থামতে হয়েছে। শুধু বুথই নয়, ভোটকেন্দ্রে পৌঁছনোর বেশ কয়েক কিলোমিটার আগে থেকেই রাস্তাঘাটও চলে গিয়েছে নিরাপত্তারক্ষীদের দখলে। বাঘমুণ্ডির দিক থেকে ভোটকেন্দ্রে যেতে হলেও পথের ছবিটা একই। গাড়ি থামিয়ে চলেছে তল্লাশি। নিরাপত্তা তদারক করছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) ধৃতিমান সরকার। সঙ্গে ছিলেন এসডিপিও (ঝালদা) সুমন্ত কবিরাজ ও অন্য পুলিশকর্তারা।

রঘুনাথপুর মহকুমার চারটি বুথে ও দেখা গিয়েছে একই ছবি। বুথে বুথে ঘুরেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। সশস্ত্র পুলিশ কর্মীদের নিয়ে বুথের নিরাপত্তা সামলেছেন ওসিরা। সকাল থেকে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত বুথেই ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন পুলিশের সার্কেল ইন্সপেক্টর।

বুধবার ফের ভোট নেওয়া হয়েছে নিতুড়িয়া থানার জানার্দন্ডি পঞ্চায়েতের মদনডি গ্রামের গোপালগঞ্জ বুথে, পাড়া থানার পাড়া পঞ্চায়েতের হরিহরপুর গ্রামের গার্লস প্রাইমারি স্কুলের বুথে, ওই ব্লকেরই নডিহা সুরুলিয়া পঞ্চায়েতের চালুনিয়া গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের বুথে এবং রঘুনাথপুর থানার নতুনডি পঞ্চায়েতের কলাগড়া গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের বুথে। সর্বত্রই বুথ ছিল কড়া নিরাপত্তায় মোড়া। প্রতি বুথে গড়ে জনা তিরিশ-চল্লিশ সশস্ত্র পুলিশ কর্মী ছিলেন। পুলিশ টহল দিয়েছে গ্রামের বিভিন্ন পাড়ায়।

মূলত ব্যালট সংক্রান্ত সমস্যার জেরেই সোমবার রঘুনাথপুর মহকুমার এই চারটি বুথে ভোট গ্রহণ বাতিল করে ফের ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। অভিযোগ, মদনডি গ্রামের বুথে দুষ্কৃতীরা ছাপ্পা দেয়। গুলিতে জখম হন এক যুবক। এক দল লোক ভোটকর্মীদের দু’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়িতে থাকা ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পুড়ে যাওয়াতে ফের ভোট নেওয়া হয়েছে সেখানে। একই ভাবে হরিহরপুর ও কলাগড়া গ্রামের বুথে তৃণমূল ও বিরোধীদের মধ্যে বিবাদ বেধেছিল। ব্যালট লুটের অভিযোগ ওঠে। সেই ব্যালট আর বুথে ফেরত আসেনি। পাড়ার চালুনিয়া গ্রামর বুথে আবার পাশের বুথের ব্যালট চলে যাওয়ায় ভোট বাতিল করতে হয়েছিল।

সূত্রের খবর, নির্বাচনের ডিউটিতে থানায় আসা শতাধিক পুলিশ কর্মীর অধিকাংশকেই এ দিন ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজে লাগানো হয়েছিল। ফলে বুথে প্রচুর পুলিশ দেওয়া গিয়েছে। অন্য দিকে, দিনভর বুথগুলিতে ঘুরেছেন পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারিজাত বিশ্বাস। বিশেষত, মদনডি গ্রামের বুথে আঁটসাঁট নিরাপত্তা ছিল। সেখানে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চলেছে।

এ দিনের পুলিশি বন্দোবস্ত দেখে বিরোধীদের কেউ কেউ বলছেন, ভোটের দিন এমন নিরাপত্তার ছিটেফোঁটাও যদি থাকত তাহলে অশান্তি অনেক কম হতো। বাঘমুণ্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার মানুষ অশান্তি পছন্দ করেন না। আমরা চাই অবাধে ভোট হোক। এ দিন প্রশাসন নিরাপত্তার যে ব্যবস্থা করেছিল তাকে স্বাগত জানাই।’’ জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘এদিন যে ক’টি বুথে পুনর্নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলাম।’’ এটা কি কমিশনের নির্দেশে? জেলাশাসক জানান, এ নিয়ে কমিশনের কোন নির্দেশ নেই।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Elections 2018
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy