Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাঁকুড়ায় উত্তাপ কম

এ বার মনোনয়ন পর্ব শেষ হওয়ার পরেই বিরোধীরা প্রার্থী দিতে না পারায় বাঁকুড়ার জেলা পরিষদ এবং জেলার ২২টির মধ্যে ১২টি পঞ্চায়েত সমিতিতে ভোটের আগেই এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২০
Share: Save:

হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। সেই অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে তৃণমূলের করা মামলার শুনানি হওয়ার কথা আজ, সোমবার। আদালতে কী হয় তা নিয়ে চলছে জল্পনা। তবে প্রচারে ঢিলে দিতেও রাজি নন নেতারা। একে তো রবিবার। তার উপরে নতুন বছর বলে কথা। এক আলাপেই শুভেচ্ছা বিনিময় আর প্রচার সেরে ফেলার সুযোগ এ দিন হাতছাড়া করেননি তৃণমূলের প্রার্থীরা। কিছু জায়গায় বিরোধী প্রার্থীদেরও দেখা গেল এমনটা করতে।

ঘটনা হল, এ বার মনোনয়ন পর্ব শেষ হওয়ার পরেই বিরোধীরা প্রার্থী দিতে না পারায় বাঁকুড়ার জেলা পরিষদ এবং জেলার ২২টির মধ্যে ১২টি পঞ্চায়েত সমিতিতে ভোটের আগেই এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। বিষ্ণুপুরে কোনও পঞ্চায়েত সমিতিতেই প্রার্থী দিতে পারেননি বিরোধীরা। অনেকেই মনে করছেন, এই ঘটনায় জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের উত্তাপটাও অনেকাংশে কমে গিয়েছে। তবে বাঁকুড়া সদর মহকুমার আটটি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে পুরোদস্তুর লড়াই হওয়ার কথা শুধু বাঁকুড়া ১, বাঁকুড়া ২ ও গঙ্গাজলঘাটিতে। খাতড়া মহকুমার আটটি পঞ্চায়েত সমিতি। তার মধ্যে তালড্যাংরার বেশিরভাগ আসনেই বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। বাকি সাতটিতে জোরদার লড়াই হওয়ার কথা।

তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানাচ্ছেন, জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন ও জেলার বেশির ভাগ পঞ্চায়েত সমিতি কার্যত নাগালে চলে এলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কোনও ভাবেই খাটো করে দেখছেন না তাঁরা। যে সমস্ত এলাকায় ভোট হচ্ছে সেখানে দলীয় ভাবে জোরদার প্রচার চালানো হবে। তিনি বলেন, “হাইকোর্টের রায় যা-ই হোক, প্রচার কিন্তু আমাদের থেমে নেই। প্রার্থীরা নিজেদের এলাকায় এলাকায় ঘুরছেন।” বাঁকুড়া ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি ও প্রায় সব ক’টি গ্রামপঞ্চায়েতেই বিরোধীদের সঙ্গে জোর টক্কর হতে চলেছে তৃণমূলের।

বাঁকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তথা তৃণমূলের ওই ব্লকের সভাপতি ধবল মণ্ডল এ বারও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হয়েছেন। তিনি জানান, এ দিন সকালে নির্বাচনী কেন্দ্রে ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। ধবলবাবু বলেন, “প্রার্থীরা নিজের এলাকায় ঘুরছেন। দেওয়াল বুকিং হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই সব দেওয়াল লিখনের কাজও শেষ করে ফেলা হবে।” রানিবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি এ বার খাড়ড়া থেকে জেলা পরিষদের আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন। এ দিন নববর্ষ উপলক্ষে তিনি খাতড়া শ্মশানকালী মন্দিরে পুজো দেন। নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে সবার সঙ্গে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেন।

প্রচারের নিরিখে শাসক দলের তুলনায় পিছিয়ে থাকলেও কিছু কিছু এলাকায় বিরোধী প্রার্থীরাও ভোট পথে নেমেছেন। মনোনয়ন পর্ব শেষ হওয়ার দিন থেকেই মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য প্রার্থীদের চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে শাসকদলের বিরুদ্ধে একযোগে অভিযোগ তুলে আসছে বিরোধীরা। বেশ কিছু প্রার্থীকে ভয় দেখিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি এবং সিপিএম।

বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র জানান, এ দিন রাইপুর ব্লকের কয়েকটি এলাকায় তাঁদের দলীয় প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে প্রচারে নামার চিন্তাভাবনা করেছিলাম আমরা। তবে ভোট করার মতো পরিস্থিতিটাই তো নেই। প্রার্থীরা প্রচারে বেরোলেই অনেক জায়গায় হুমকির মুখে পড়ছেন।”

সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “হাইকোর্টের রায়ের দিকেই আমাদের নজর রয়েছে এখন। যদিও কিছু কিছু জায়গায় প্রার্থীরা নিজেরাই বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE