স্থানীয় একটি ডোবা পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার কাজ বন্ধ করতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। শুক্রবার পুরুলিয়া সদর থানা এলাকার অলঙ্গিডাঙা মোড়ের কাছে অবরোধের জেরে দুপুর ১২টা থেকে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক অবরুদ্ধ থাকে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০ এ) জাতীয় সড়ক। নাকাল হন যাত্রীরা। সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির কাউন্সেলিং ছিল এ দিন। ভর্তি হতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে কিছু পড়ুয়ারাও অবরোধের আটকে পড়েন। কাশীপুরের ধবাড়ি গ্রামের টিঙ্কু মাহাতো, শিউলিবাড়ি গ্রামের শেফালি মাহাতোরা বলেন, ‘‘কাউন্সেলিং-এর সময় পেরিয়ে গেল। জানি না কী হবে।’’
পুরুলিয়া শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জগবন্ধু বাঁধ নামে পরিচিত ওই জলাশয়টি প্রায় ৩০ কাঠা জমি জুড়ে রয়েছে। সেটি তাঁর ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বলে দাবি করে পাড়া থানার দুবড়া গ্রামের বাসিন্দা পঙ্কজ লোধা জানান, আদালতের নির্দেশ মেনে পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছিল। পুরুলিয়ার(সদর) মহকুমা শাসক আশিস সাহাও বলেন, ‘‘যতদূর জানি, ওই জলাশয়টি পাঁচিল দিয়ে ঘেরার অনুমতি দিয়েছিল আদালত।’’
এ দিন পুলিশি প্রহরায় পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু হওয়ার কথা জানতে পেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ কাজে বাধা দেন। পরে তাঁরা রাস্তা অবরোধ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ওয়ার্ড ছাড়াও ১, ১৮ এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডের অনেক বাসিন্দাই দৈনন্দিন প্রয়োজনে সেটি ব্যবহার করেন। এলাকার বাসিন্দা পুষ্প বাউরি, শোভা মাহাতো, রেখা বাউরি, দুর্গা বাউরিরা জানান, কাছাকাছি এলাকায় অন্য কোনও জলাশয় নেই। তাঁদের দাবি, গ্রীষ্মে জলকষ্টের সময় জগবন্ধু বাঁধের জল ছাড়া সাধারণ বাসিন্দাদের আর কোনও ভরসা থাকে না। তাই প্রশাসনের কাছে তাঁরা দাবি জানিয়েছিলেন, ওই জলাশয়টি যেন ঘেরা না হয়। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন বলে অবরোধকারীরা জানান। প্রায় দুপুর ২টো নাগাদ পুলিশের বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলে। তবে পাঁচিল দেওয়া হলে ফের আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন অবরোধকারীরা।
তবে পঙ্কজবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওটি আসলে জলাশয়ই নয়, নিচু জমি। বর্ষাকালে মাস দুই-তিন জল জমে থাকে। কিছু লোকের বাধায় পাঁচিল দেওয়ার কাজ আটকে গেল।’’