Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

হঠাৎ বৃষ্টিতে লোকসান ব্যবসায়ীদের, কাঁচা ইট গলে জল 

বাঘমুণ্ডির মাদলা গ্রামের রাজু কুইরির দাবি, তাঁর দেড় লক্ষেরও বেশি ইট নষ্ট হয়ে গিয়েছে বৃষ্টিতে। রাজু বলেন, ‘‘গত নভেম্বর থেকে ইট তৈরি শুরু করেছিলাম। সমস্ত ইট খোলা মাঠে পড়েছিল।

বিপত্তি: পুরুলিয়ার নপাড়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

বিপত্তি: পুরুলিয়ার নপাড়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল রবিবার রাত থেকে। চোখের সামনে দেখেছেন, গলে যাচ্ছে প্রচুর ইট। মাথায় হাত পড়েছে ইট ব্যবসায়ীদের। অনেকেই বলছেন, ‘‘এ বার বৃষ্টির অভাবে তেমন ধান হয়নি। অসময়ে সেই বৃষ্টিই আবার ক্ষতি করল ইটের।’’

বাঘমুণ্ডির মাদলা গ্রামের রাজু কুইরির দাবি, তাঁর দেড় লক্ষেরও বেশি ইট নষ্ট হয়ে গিয়েছে বৃষ্টিতে। রাজু বলেন, ‘‘গত নভেম্বর থেকে ইট তৈরি শুরু করেছিলাম। সমস্ত ইট খোলা মাঠে পড়েছিল। পোড়ানো হয়নি। বৃষ্টিতে চোখের সামনে প্রায় সবক’টা গলে গিয়েছে।’’ একই অবস্থা পুঞ্চার নপাড়ার বাসিন্দা মিঠু সিংহের। তাঁর কথায়, ‘‘যেখানে ইট শুকোয় সেখানে গিয়ে দাঁড়াতে পারছি না। চার লক্ষ ইট মাঠে শুকোচ্ছিল। বৃষ্টিতে সব গলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ দিকে, শ্রমিকদের পাওনা চুকোতে হবে। কত দিনে ক্ষতি সামাল দিতে পারব কে জানে!’’ ললিত শবর, ডাক্তার সহিস, সুষেণ সহিস-সহ শ্রমিকেরা জানান, যে ইটগুলি গলে মাটি হয়ে গিয়েছে, সেগুলি দিয়ে এই বছর আর কিছু করার উপায় নেই। পরের বছর আবার ইট বানানো যাবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠ থেকে ধান উঠে যাওয়ার পরে পুরুলিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের বেশ কিছু যুবক ইটের ব্যবসা করেন। শীতের মরসুমে মাটি থেকে কাঁচা ইট তৈরি করে পুড়িয়ে গ্রীষ্মের গোড়ায় বেচাকেনা শুরু হয়। সেই সুবাদে এই সময়টাই ইট গড়ার জন্য আদর্শ। মাঠ থেকে ধান উঠে যাওয়ার পরেই এই কাজে শ্রমিকও পাওয়া যায়। তা ছাড়া, আবহাওয়া থাকে অনুকূল।

নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ইট শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই। কাশীপুরের বাসিন্দা হারাধন কুম্ভকারের সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি ইট নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘লোকসান চোখে দেখা যাচ্ছে না। সমস্ত ইট মাঠে পড়ে শুকোচ্ছিল। পোড়ার পরে প্রায় দশ লক্ষ টাকার হত।’’ একই অভিজ্ঞতা কাশীপুরের বাসিন্দা পরিমল দাসেরও। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সমবায় গড়ে ইট ব্যবসা করি। দেড় লক্ষের মত কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে বৃষ্টিতে। পোড়ার পর সাড়ে পাঁচ লক্ষের ব্যবসা হত।’’ তিনি জানান, কাঁচা ইট সব গলে মাটিতে মিশে গিয়েছে। কিছু শুকিয়েছিল। সেগুলি থাক করে রাখা ছিল। তিনি জানান, ওই ইটগুলির গায়ে বৃষ্টির দাগ লেগে যাবে। মসৃণ হবে না। দামও মিলবে না বিশেষ।

শুধু ব্যবসায়ীরাই নন, বাড়ি তৈরি করবেন বলে বিভিন্ন ব্লকে নিজেদের জমিতে যাঁরা ইট তৈরি করেছিলেন, এই বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Loss Business Brick Brick kiln
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE